ডিসি সম্মেলন শুরু মঙ্গলবার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ২০:৪৫

করোনা মহামারির কারণে প্রায় আড়াই বছর পর রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক-ডিসি সম্মেলন। এদিন সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল মাধ্যমে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবারের ডিসি সম্মেলনে সর্বত্র সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হবে। এবারের সম্মেলন তিন দিনব্যাপী করা হবে। এর আগে সম্মেলন পাঁচ দিনব্যাপী ছিল।

এবার রাষ্ট্রপতির দিক-নির্দেশনা গ্রহণের পাশাপাশি সংসদের স্পিকার ও প্রধান বিচারপতি জেলাপ্রশাসকদের উদ্দেশে শুভেচ্ছা বাণী দেবেন। তাছাড়া সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সামরিক-বেসামরিক সমন্বয় বিষয়ক অধিবেশন সংযুক্ত করা হয়েছে।

এবার সর্বমোট অধিবেশন হবে ২৫টি। এরমধ্যে কার্য-অধিবেশন হবে ২১টি। এছাড়া, একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, একটি রাষ্ট্রপতির দিকনির্দেশনা গ্রহণ, একটি স্পিকারের শুভেচ্ছা বক্তব্য এবং বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির শুভেচ্ছা বক্তব্য রয়েছে।
 
সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ অংশগ্রহণকারী মন্ত্রণালয়, বিভাগ সংস্থা সংখ্যা এবার ৫৫টি। এতে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা অংশ নেবেন।

সম্মেলনে দেওয়া প্রস্তাব-সংখ্যা হচ্ছে ২৬৩টি। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রস্তাব পড়েছে ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত মোট ১৮টি। এছাড়া, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়-১৬টি; জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়-১৪, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ-১২টি। স্থানীয় সরকার বিভাগ-১০টি সব বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক এসব প্রস্তাব জমা দিয়েছেন।

ডিসি সম্মেলনে এবারের প্রধান প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে:

ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম জোরদারকরণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম, স্থানীয় পর্যায়ে কর্ম-সৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি কর্মসূচি বাস্তবায়ন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্নেন্স; শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ; স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ; পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ; ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়। মাঠপর্যায়ে কর্মসম্পাদনকালে জেলা প্রশাসকগণ যে সকল আইনগত, প্রশাসনিক। আর্থিক কিংবা অন্যবিধ চ্যালেঞ্জ এবং স্ব স্ব জেলায় বিদ্যমান সম্ভাবনাসমূহের বিষয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে সরাসরি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব, সচিবদের উপস্থিতিতে আলোচনা করে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং সুযোগের সদ্ব্যবহার করা। মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহের অনুসৃত নীতি-কৌশল ও গৃহীত উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জেলাপ্রশাসকগণ কর্তৃক সম্যক ধারণা লাভ। উপযুক্ত পন্থায় সরকারের নীতি ও কর্মসূচির বাস্তবায়ন ত্বরান্বিতকরণ এবং নাগরিক সেবার মানোন্নয়ন করাই ডিসি সম্মেলনের প্রধান উদ্দেশ্য।

মূলতঃ সরকারের নীতিনির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মাঝে সামনাসামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়ার জন্য সাধারণত প্রতিবছর জুলাই মাসে ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
 
জানা গেছে, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়ম ঠেকাতে কঠোর হতে ডিসিদের নির্দেশনা দেওয়া হবে। কারণ, মাঠপর্যায়ে ডিসিরাই হলেন সরকারের প্রতিনিধি।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানা গেছে, এবারের সম্মেলনে দেশের ৬৪ জেলার ডিসি ও ৮ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারের অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি ছিল। ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারসহ অন্য কর্মকর্তারা এবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নয়, রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন থেকে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ার উল্লাহ জানিয়েছেন, সম্মেলনের আগে করোনা পরীক্ষায় বরিশাল ও রাজশাহীর দুই কমিশনার ও কক্সবাজার, রাজশাহী, পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক পজিটিভ ধরা পড়েছেন। ফলে তারা সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন না।

সবশেষ ২০১৯ সালের ১৪ থেকে ১৮ জুলাই জেলা প্রশাসক সম্মেলন হয়। এরপর করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে জেলা প্রশাসক সম্মেলনও হয়নি। 

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ