আজকের শিরোনাম :

প্রতি উপজেলায় ফায়ার স্টেশন নির্মাণ শেষ পর্যায়ে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪:২২

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দেশের প্রতিটি উপজেলায় ন্যূনতম একটি করে ফায়ার স্টেশন স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আমাদের ক্ষমতা গ্রহণের আগে দেশে ফায়ার স্টেশন ছিল মাত্র ২০৪টি। এখন সারাদেশে ৪৫৬টি ফায়ার স্টেশন চালু আছে। চলমান প্রকল্পগুলো শেষ হলে ফায়ার স্টেশনের সংখ্যা হবে ৫৬৫টি এবং জনবলের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়াবে ১৬ হাজার।

আজ রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিরপুর ফায়ার সার্ভিস ট্রেনিং কমপ্লেক্সে ৪১তম ব্যাচের অফিসার্স ফাউন্ডেশন কোর্সের সমাপনী কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন অনুযায়ী এই জনবলকে ২৫ হাজারে উন্নীত করার জন্য ফায়ার সার্ভিসের সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছি।

তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এখন আর আগের দমকল বাহিনী নয়। আমরা ফায়ার সার্ভিসকে সকল দিক থেকে সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে এর সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছি। এই প্রতিষ্ঠানটি এখন বহুমাতৃক সেবাকাজে নিয়োজিত। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরকে ঢেলে সাজানোর জন্য নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের উদ্দেশে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সারাবিশ্বে প্রতিনিয়ত দুর্যোগ-দুর্ঘটনার চিত্র পরিবর্তিত হচ্ছে। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। দুর্ঘটনাগুলো আমাদের সামনে নতুন নতুন চরিত্রে আবির্ভূত হচ্ছে; আবার নতুন নতুন দুর্ঘটনাও যোগ হচ্ছে আমাদের জীবনে। প্রকৃতিগতভাবে দুর্যোগপ্রবণ এই দেশে আপনাদের সবসময় দুর্যোগ প্রশমনের জন্য যেমন কাজ করতে হবে; তেমনি উদ্ভাবনী বিবেচনা শক্তি দিয়ে সংঘটিত দুর্ঘটনার ক্ষয়ক্ষতিও সীমিত রাখতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, আমি আশা করব, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞানকে ধরে রাখবেন এবং নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে তা আরও শাণিত করবেন। আরেকটি বিষয় সবসময় মনে রাখতে হবে, এটি একটি ইউনিফর্মধারী সুশৃঙ্খল বিভাগ। প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনাদেরকে শৃঙ্খলার মান বজায় রাখতে হবে।’

সবস ময় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ-নির্দেশ মেনে চলতে হবে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমি আশা করি, আগামী দিনে আপনারাই হবেন ফায়ার সার্ভিসের মূল চালিকা শক্তি। সুন্দর মন-মানসিকতা এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ আচরণ দিয়ে এই বিভাগের সুনাম ও মর্যাদা বৃদ্ধিতে আপনারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন বলে আমি আশা করছি।

তিনি বলেন, দেশের সব মহলের কাছে ফায়ার সার্ভিসের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি ভয়াবহ কিছু দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন, তা দেশের মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছে আপনাদের কাজের এই যে স্বীকৃতি ও সম্মান এটি ধরে রাখতে হবে এবং উত্তরোত্তর এটিকে আরও মর্যাদাপূর্ণ স্থানে উন্নীত করতে হবে। সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা বৃদ্ধিতে আপনারা সবসময় আন্তরিক ও নিবেদিত থাকবেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফায়ার একাডেমি’ করার জন্য মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ১০০ একর জায়গা নেয়া হয়েছে। আগে এই প্রতিষ্ঠানের ১০ তলা ভবনের ওপরে অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজ করার সক্ষমতা ছিল না। আমরা এই সক্ষমতাকে ২০ তলায় উন্নীত করেছি। আগামী বছর ৬৮ মিটারের ৫টি টার্নটেবল লেডার এই বহরে যুক্ত হবে। তখন এই সক্ষমতা ২২ তলা পর্যন্ত উন্নীত হবে।

কাজের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি এই বাহিনীর সদস্যদের সুযোগ-সুবিধাও বহুলাংশে বৃদ্ধি করা হয়েছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ঝুঁকিভাতা প্রদান, পূর্ণাঙ্গ রেশন ইউনিট চালু, তিন রঙের মর্যাদাপূর্ণ কমব্যাট পোশাক প্রবর্তন, রাষ্ট্রীয় পদক সংখ্যা ও সম্মানী বৃদ্ধি এবং ফায়ারফাইটার ও অফিসারসহ পাঁচটি পদের বেতন গ্রেড বৃদ্ধি করা হয়েছে। কাজের সক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার মাধ্যমে আমরা এই বাহিনীকে বিশ্বমানের একটি সেবাধর্মী বাহিনীতে পরিণত করবো।

সমাপনী অনুষ্ঠানে ৪৪ জন অফিসারের মধ্য থেকে শারীরিক যোগ্যতা, বুদ্ধিমত্তা, শিষ্টাচার, শৃঙ্খলা, আচার-ব্যবহার, লিখিত পরীক্ষা, ব্যবহারিক পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর দক্ষতার ভিত্তিতে তিনজনকে চৌকস নির্বাচিত করা হয়। তাদের মধ্যে প্রথম হন শেখ তরিকুল ইসলাম, দ্বিতীয় চৌকস খন্দকার মিরাজুল ও তৃতীয় হন মো. সিল্টন আহমেদ। নির্বাচিত চৌকস অফিসারদের পদক পরিয়ে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ