চিরনিদ্রায় শায়িত কাজী আনোয়ার হোসেন

রাজধানীর বনানী কবরস্থানে মা সাজেদা খাতুনের কবরে 'মাসুদ রানা'র স্রষ্টা কাজী আনোয়ার হোসেন ওরফে ‘কাজী দাকে’ চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) বাদ জোহর সেগুনবাগিচার কাঁচাবাজার মসজিদে কাজী আনোয়ার হোসেনের জানাজার নামাজ আদায় করা হয়। এরপর মরদেহবাহী গাড়ি যাত্রা করে বনানী গোরস্থানে। সেখানে বেলা ৩টায় তাকে মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

কাজী আনোয়ার হোসেনের শেষ ইচ্ছা ছিল মার কবরেই থাকবেন। সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে বারডেমের হিমঘর থেকে তার মরদেহ ২৪/৪ কাজী মোতাহার হোসেন সড়কের বাড়িতে নেওয়া হয়। এ বাড়িটিতেই তার প্রতিষ্ঠিত দেশের ভিন্নধারার প্রকাশনা সংস্থা সেবা প্রকাশনীর কার্যালয়। তৃতীয় তলায় ছিল তার দফতর।

মাসুদ রানা: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দেয় সারা বিশ্বে। কিন্তু তার স্রষ্টা কাজী আনোয়ার হোসেন বড়ই নিভৃতচারী ছিলেন। দেশের রহস্য-রোমাঞ্চ সাহিত্যের এ পথিকৃৎ, ভিন্ন ধারার প্রকাশনার সফল উদ্যোক্তা চিরবিদায় নিলেনও নিভৃতেই।

ছেলে কাজী মায়মূর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বাবা বলে গিয়েছিলেন মৃত্যুর পরে তাকে নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া না করতে। তা ছাড়া এখন করোনার সংক্রমণও বেড়েছে। সব মিলিয়েই মরদেহ শহীদ মিনার বা অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হয়নি। তবে তিনি বলে গেছেন প্রকাশনীর কাজ আমরা যেন অব্যাহত রাখি। আমরা দুই ভাই সেই চেষ্টা করে যাব।

গেরিলা-৭১ নামের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় তাকে। পরিবারের সদস্য আর তার অনুরাগীদেরও কেউ কেউ আসেন। করোনা সংক্রমণের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত উপস্থিতি এবং সংক্ষিপ্তভাবে সম্পন্ন করা হয় তার অন্তিম বিদায় যাত্রা।

কাজী আনোয়ার হোসেন প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। গত প্রায় তিন মাস থেকে চিকিৎসার ভেতরেই ছিলেন তিনি। গত ১০ জানুয়ারি থেকে বারডেম হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন ২০১৫ সালে এবং মেয়ে শাহরিন সোনিয়া ২০১৪ সালে ইন্তেকাল করেন। দুই ছেলে কাজী শাহনূর হোসেন ও কাজী মায়মূর হোসেনসহ আত্মীয়স্বজন আর দেশ-বিদেশে অসংখ্য গুণমুগ্ধ পাঠককে শোকাচ্ছন্ন করে বুধবার (১৯ জানুয়ারি) ৮৫ বছর বয়সে চলে গেলেন মাসুদ রানা ও কুয়াশার স্রষ্টা, সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেন। তবে পাঠকের মনে বেঁচে থাকবেন সবার প্রিয় ‘কাজী দা’। 

এবিএন/মমিন/জসিম