আজকের শিরোনাম :

কমরেড মোহাম্মদ তোয়াহার মৃত্যুবার্ষিকী আজ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২১, ০৯:৩৩

কমরেড মোহাম্মদ তোয়াহা। ভাষা আন্দোলনকালে যিনি অন্যতম ছাত্র নেতা হিসেবে পরিগণিত হতেন। এই ভাষা সৈনিককে এখন কেউ আর তেমন স্মরণ করেন না। ১৯২২ সালের ২ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতির হাজিরহাট গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মোহাম্মদ তোয়াহা ভাষা আন্দোলনে যেমন সক্রিয় কর্মী ছিলেন, তেমনি রাজনীতিতেও ছিলেন উজ্জল। তিনি ১৯৮৭ সালের ২৯ নভেম্বর তিনি লক্ষ্মীপুরের রামগতির হাজিরহাটে মৃত্যুবরণ করেন।

তোয়াহা ১৯৪৬ সালে আবদুল হামিদ খান ভাসানীর অধীনে সিলেট গণভোটে কর্মী হিসাবে কাজ করেন। ১৯৪৭ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম বামপন্থী ছাত্র সংগঠন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ দলের সাথে যুক্ত ছিলেন।

তার জীবনের উল্লেখযোগ্য শিক্ষাজীবনও কাটে ঢাকায়। ফরাশগঞ্জ স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, ঢাকা কলেজ থেকে আইএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ফজলুল হক হলের ভিপি নির্বাচিত হন।

ভাষা আন্দোলনের প্রারম্ভিক সময় থেকেই তিনি সক্রিয় ছিলেন। ভাষা আন্দোলনের শুরু থেকে অধিকাংশ পোস্টার, নিবন্ধ, লিফলেট ছিল তারই তৈরিকৃত। ১৯৪৮ এর ১১ মার্চ দলবল নিয়ে সচিবালয়ে খাজা নাজিমুদ্দিনের কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়ে তিনি গ্রেপ্তার হন। এসময় তিনি খুবই নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। সুস্থ হতে তাকে এক সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল।

রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির একজন নেতা হিসেবে সরকারের সাথে সকল ধরনের বৈঠকে অংশ নিতেন তোয়াহা। ফজলুল হক হলের ভিপি থাকাকালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ সেখানে এসেছিলেন, তোয়াহা তাকে আমাদের ভাষা চাহিদা সম্পর্কে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মী পরিষদে তিনি যুব লীগের প্রতিনিধি ছিলেন। ১৯৫২ সালের শেষের দিকে ফের তিনি গ্রেপ্তার হতে হয়।

দুই বছর পর মুক্তি পান তিনি। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য হয়েছিলেন। এসময় তাদের যুক্তফ্রন্ট জয়ী হয়েছিল। ১৯৫৬ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান মজদুর ফেডারেশন নামে শ্রমিক সংগঠন গড়ে তোলেন, তিনি এর সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৫৭ সালে হামিদ খান ভাসানীর জাতীয় আওয়ামী পার্টির সাথে যুক্ত হন এবং পরে এর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান সামরিক আইন জারি করার পরে তিনি গোপন রাজনীতিতে ফিরে আসেন। ১৯৬৯ সালে তিনি আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন।

কমিউনিস্ট সুখেন্দু দস্তিদার এবং পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির আবদুল হক (মার্কসবাদী - লেনিনবাদী) সহ তোয়াহা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকার করেছিলেন। স্বাধীনতার পর তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারী হয়, ফলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। ১৯৭৬ সালে তার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করা হয়। এরপর তিনি প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফিরে আসেন। ১৯৭৯ সালে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে তিনি আট দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ