আজকের শিরোনাম :

দৌলতদিয়ায় আরেক যৌনকর্মীর জানাজা পড়ানো হলো

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৯:০২

বাংলাদেশে দৌলতদিয়ায় বৃহস্পতিবার ইসলামি রীতিতে দ্বিতীয় যৌনকর্মীর জানাজা পড়ানো হয়েছে স্থানীয় পুলিশের উদ্যোগে। ২০শে ফেব্রুয়ারি দুপুরে মারা যাওয়া যৌনকর্মী রীনা বেগমের জানাজা পড়ানো হয় বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে।

দৌলতদিয়ায় যৌনপল্লী সংলগ্ন কবরস্থানে স্থানীয় পুলিশের উদ্যোগে আয়োজন করা জানাজায় স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অনেকেই উপস্থিত হয়েছিলেন বলে জানান গোয়ালন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশিকুর রহমান।

আশিকুর রহমান বলেন, "প্রথা ভেঙে যৌনকর্মীদের জানাজা পড়ানোর যেই চল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সেটি আরো স্বীকৃত হলো।"

গত ৬ই ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মত হামিদা বেগম নামের এক যৌনকর্মীর জানাজা পড়ানো হয়েছিল। ঐ জানাজার আয়োজনও করা হয়েছিল স্থানীয় পুলিশ প্রধান আশিকুর রহমানের উদ্যোগে।

তবে সেই জানাজার নামাজ পরিচালনা করা দৌলতদিয়া রেলস্টেশনের ইমাম গোলাম মোস্তফা জানিয়েছিলেন যে তিনি ভবিষ্যতে আর কোনো যৌনকর্মীর জানাজা পড়াবেন না।

হামিদা বেগমের জানাজা পড়ানোর পর স্থানীয়ভাবে সমালোচনার মুখে পড়ার কারণেই তিনি আর কোনো যৌনকর্মীর জানাজা না পড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।

জেলার ইমামদের সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে তারা আর কোনো যৌনকর্মীর জানাজা পড়াবেন না
ঐ ঘটনার পর রাজবাড়ি জেলার ইমামদের সমিতির পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়, যেখানে গোয়ালন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে তিনি ইমামকে বাধ্য করেছিলেন যৌনকর্মীর জানাজা পড়াতে।

তবে মি. রহমান বলেন, তিনি কোন জোর করেননি। তার অনুরোধের প্রেক্ষিতেই ইমাম জানাজা পড়াতে রাজী হয়েছিলেন।

স্থানীয় ইমামদের সমিতির পক্ষ থেকে এমনও সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে তারা আর কোনো যৌনকর্মীর জানাজা পড়াবেন না।

বৃহস্পতিবার রীনা বেগমের জানাজা পড়ান গোয়ালন্দ থানা মসজিদের ইমাম আবু বকর সিদ্দিক।

"স্থানীয় ইমামদের অনেকেই যৌনকর্মীর জানাজা পড়াবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। কাউকে যেহেতু ধর্মীয় কাজে জোর করা যায় না, তাই আমি থানা মসজিদের ইমামকে অনুরোধ করি জানাজা পড়াতে। তিনি রাজী হওয়ার পর জানাজা আয়োজন করা হয়।"

দৌলতদিয়ার যৌনকর্মীরা আশাবাদি ছিলেন যে, হামিদা বেগমের জানাজার পর সেটা হয়তো যৌনকর্মীদের প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটাতে কাজে দেবে। কিন্তু পল্লীর বাইরে সাধারণ মানুষের অধিকাংশই এবিষয়ে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন।

তারা মনে করেন, যৌনকর্মীদের পেশাই যখন ইসলাম ধর্ম সমর্থিত নয়, তখন তাদের মৃত্যুর পর ধর্মীয় রীতিতে সৎকারের চেষ্টা করার কোনো কারণ নেই।

আশিকুর রহমান মনে করেন, কখনো ইসলামিক রীতিতে যৌনকর্মীদের জানাজা না পড়ানো হওয়ার কারণে এনিয়ে কিছুটা অস্বস্তি কাজ করছে স্থানীয় মানুষের মধ্যে। সময়ের সাথে সাথে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। 

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ