আশামনির খোঁজ মেলেনি ৫ দিন তল্লাশির পরও

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৮:৩৩

"বিকেল বেলা এক বাচ্চা এসে বললো, আশামনি খালে পইড়া গেছে, ডুইবা যাইতেছে," ক্লান্তিভরে এই কথাগুলো বলছিলেন নিখোঁজ আশামনির মা তানিয়া বেগম।

তার পরিবারের সদস্যরা বলছেন, গত পহেলা ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকার কদমতলীতে ডিএনডির খালে পড়ে যায় আশামনি। এর পর থেকে তাকে উদ্ধারে তৎপরতা চলছে। কিন্তু পাঁচ দিনে পেরিয়ে গেলেও এখনো কোন ধরণের হদিস মেলেনি।

আশামনির মা তানিয়া আক্তার বলেন, তার মেয়ের সাথে যেসব বাচ্চারা খেলছিল তারাই গিয়ে পানিতে পড়ার খবর দেয়। পরে স্থানীয় আরেক জন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিও একই কথা বলেন। "পরে অন্য এক লোক বললো এইখানে হাত দেখা গেছে," তিনি বলেন।

আশামনির মামা মো. মোশারফ জানান, গত ০১ ফেব্রুয়ারি অন্য বাচ্চাদের সাথে খেলতে গিয়েছিল আশামনি। এক পর্যায়ে বল খালে পড়ে গেলে সেটি তুলতে গিয়ে পড়ে যায় সে। খবর পেয়ে তারা বাবা-মা ও স্থানীয়রা খালে নেমে আশামনিকে খুঁজতে থাকে।

এরমধ্যে ফায়ার সার্ভিসের লোকজনও ডুবুরি নিয়ে এসে খোঁজা শুরু করে। কিন্তু খালে অত্যধিক আবর্জনা থাকায় তল্লাশি বাধাগ্রস্ত হয়।

মিস্টার মোশারফ জানান, "ফায়ার সার্ভিসের লোক আসলেও ওই দিন রাতে ময়লা আর আলোর সংকটের কারণে কাজ করতে পারে নাই।"

"পরের দিন সকাল ৮টায় আসার কথা থাকলেও তারা আসে নাই। সময় অনেক পার হয়ে যাওয়ার পর তারা আসছে," বলেন তিনি।

খালটির উপরে আবর্জনার স্তুপ থাকলেও ভেতরে স্রোত রয়েছে বলেও জানান তিনি। মিস্টার মোশারফের অভিযোগ, উদ্ধার কাজে গাফিলতি করছে পুলিশ ও উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা।

তিনি অভিযোগ করেন, ময়লা পরিষ্কার করে উদ্ধার কাজে সহায়তার জন্য সিটি কর্পোরেশনের যেসব লোক দেয়ার কথা তাদের পাওয়া যাচ্ছে না।

"দিনের পর দিন যাচ্ছে, কাজ আর হচ্ছে না। সিটি কর্পোরেশনের লোক নাই।"

এদিকে এ ঘটনায় কদমতলির মোহাম্মদবাগ এলাকায় অবস্থান করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। এর আগে, ওয়াসা কর্মকর্তাদের নোংরা পানি পান করাতে গিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন তিনি।

তিনি দ্রুততম সময়ে আশামনি জীবিত অথবা মৃত- যেকোন অবস্থায় তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

মিস্টার রহমান জানান, ০৩ ফেব্রুয়ারি থেকে উদ্ধার কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন তিনি। আর মানবিকতার দায় থেকে তিনি এই প্রতিবাদ করছেন।

পুলিশ কী বলছে?

এ বিষয়ে কদমতলী থানার তদন্ত কর্মকর্তা মো মনিরুজ্জামান বলেন, আপডেট এখনো তল্লাশির মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে। এখনো কোন ট্রেস পাওয়া যায়নি। "খালটা জরাজীর্ণ ছিল, ময়লা ছিল সেটা পরিষ্কার হইছে।"

পুলিশ, ফায়ার ব্রিগেড, সেনাবাহিনী, সিটি কর্পোরেশন সবাই একযোগ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা সেখানে একটা ডিউটি টিম রাখা হয়েছে এবং তাদের সহযোগিতার জন্য সব ধরণের সাহায্য করা হচ্ছে কিন্তু কোন ভাবেই বাচ্চাটার খোঁজ মিলছে না। এ ঘটনায় ৪ ফেব্রুয়ারি একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে পরিবারের স্বজনরা।

কেউ তাকে পড়তে দেখেছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, "আমরা সংবাদ পেয়েছি। আমাদের কোন লোক কিংবা আমাদের থানা-পুলিশ বা অথেনটিক কোন লোক বলেনি যে আমি স্বচক্ষে দেখেছি যে বাচ্চাটা পড়ে গেছে"। তিনি বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে সে খালে পড়ে গেছে।

এবিএন/মমিনি/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ