আজকের শিরোনাম :

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

বাংলাদেশে কি শিশু ধর্ষণের ঘটনা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে?

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ মে ২০১৯, ১২:১৭

হবিগঞ্জের বানিয়াচং এলাকায় একটি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে গত ১০ মে, শুক্রবার।

বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদ মোবারক জানান এ ঘটনায় গতকাল শিশুটির বাবা থানায় মামলা করেছে। এখন পুলিশ অভিযুক্তকে ধরার জন্য অভিযান চালাচ্ছেন।

এদিকে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়াতে সিলেটে মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়েছে।

বাংলাদেশে চলতি মে মাসের প্রথম ৯ দিনে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হয়েছেন ৪৮ জন শিশু। দেশের বিভিন্ন স্থানে এই ধর্ষণের ঘটনা হয়েছে।

কিছু স্থানে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে আবার অনেকে অধরা রয়ে গেছে এখনো।

শিশুদের অধিকার নিয়ে যারা কাজ করে তারা বলছেন এ সংখ্যা উদ্বেগজনক।

বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন বলছে, মে মাসের প্রথম নয় দিনে ৪৪ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে এবং ৪ জন শিশু ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হয়েছে।

সংস্থাটির এক কর্মকর্তা শাহানা হুদা বলছিলেন এই সংখ্যাটা সাংঘাতিক রকমের উদ্বেগের ব্যাপার।

‘এটা সাংঘাতিক রকম উদ্বেগজনক ব্যাপার। এই কারণেই সবার চোখে পড়ছে যে কেন সংখ্যাটা এত বেড়ে গেল। গত দুই মাস ধরে আমরা লক্ষ করছি অস্বাভাবিকভাবে শিশু ধর্ষণের সংখ্যা বেড়ে গেছে।’

‘আরেকটা জিনিস আমার কাছে অদ্ভুত লেগেছে যে গত বছরের আমাদের রিপোর্টেও আছে ৬ বছর থেকে ১৩-১৪ বছরের বাচ্চারা বেশি ধর্ষণের শিকার হচ্ছে।’

এই সংস্থাটি বলছে, ২০১৮ সালে ৩৫৬ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে, যার মধ্যে মারা গেছে ২২ জন।

২০১৭ সালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৭২ জন শিশু। ২০১৬ ও ২০১৫ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৩০৪ এবং ২৯০ জন শিশু।

শিশু ধর্ষণের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু বিষয়টা সংখ্যার হিসেবের চাইতেও বিষয়টি ভয়াবহ এক পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষক খন্দকার ফারজানা রহমান বলছিলেন, অনেক কারণের মধ্যে একটি হল পিডোফাইল বা শিশুদের প্রতি যৌন আগ্রহ। আমাদের সমাজের যে একটা পরিবর্তন এবং সংস্কৃতি, প্রযুক্তি সব কিছু মিলিয়ে আমরা খানিকটা ডিসটরটেড হয়ে যাচ্ছি। পিডোফাইল সম্পর্কে এখনো অনেক মানুষ সচেতন না। এর একটা বড় কারণ আমরা কখনো আউট অব দ্যা বক্স চিন্তা করি না যে, একটা ৪-৫ বছরের শিশুকে পরিবার,আত্মীয় বা বাইরের কেউ রেপ করবে। কিন্তু বিষয়টা এখন আর সেখানে সীমাবদ্ধ নেই। এখন মানুষের মানসিক অবস্থা এতটাই জটিল এবং বোধগম্য না, যার কারণে পিডোফাইল বা শিশুদের প্রতি যৌন আগ্রহের মতো বিষয়গুলো মানুষের সামনে আসছে।’

তবে শিশুদের পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করে শাহানা হুদা বলছিলেন, বাংলাদেশের আইনে- ধর্ষণের কঠিন শাস্তির বিধান থাকলেও দ্রুত সেটার বাস্তবায়ন বা দৃষ্টান্ত স্থাপন করার মত কোন উদাহরণ নেই। তাই অনেকেই এই ধরনের অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে।

এ ছাড়া শিশুদের অধিকার নিয়ে যারা কাজ করেন তারা বলছেন, শিশু ধর্ষণের ক্ষেত্রে মাদক এবং পর্নোগ্রার্ফি অনেকগুলো কারণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ