সেলাই মেশিনের চাকায় স্বপ্ন দেখে লাইজু
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ মে ২০১৮, ১২:৫৯
ভোলা, ২২ মে, এবিনিউজ : ভোলার লালমোহন উপজেলার পৌর সভার ৯নং ওয়ার্ডের কিশোরী ক্লাব “ স্বপ্ন চূড়ার” সদস্য লাইজু বেগম (১৫)। স্থানীয় আব্দুর রব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেনীতে বানিজ্য শাখায় পড়াশোনা করছে। মাত্র দুই বছর বয়সে যে মেয়ের গ্যাসের আগুনে পুড়ে ডান হাত বেকেঁ গেছে। এরফলে কিশোরী লাইজু অন্য কিশোরীদের মতো স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে উঠতে পারছেনা। প্রতিনিয়ত তাকে জীবন যুদ্ধ করেই বেড়ে উঠতে হচ্ছে। এক দিকে সংসারের অভাব অনটন অন্যদিকে নিজের স্বপ্ন পূরন করার প্রবল বাসনা।
তাই সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে পড়াশোনার পাশাপাশি সেলাই এর কাজ করে স্বপ্ন পূরনের দিকে এগিয়ে চলছে। বর্তমানে ইউনিসেফ এর সহযোগীতায় ও কোস্ট ট্রাষ্ট এর আইইসিএম প্রকল্পের ব্যবস্থাপনায় ‘শিশু সুরক্ষা বৃত্তি’ নিয়ে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে সেলাই মেশিন কিনে কাপড় চোপড় সেলাই করা অর্থ দিয়ে পড়াশোনারা খরচ চালিয়ে যাচ্ছে। তাইতো সেলাই মেশিনের চাকায় বর্তমানে স্বপ্ন দেখছে লাইজু বেগম।
লাইজু বেগম জানায়,আমি যখন ছোট ছিলাম তখন ঢাকাতে মাত্র দুই বছর বয়স থাকতে গ্যাসের আগুনে আমার ডান হাত পুড়ে গিয়ে বেকে যায়। শুধু হাত নয় আমার গালের কিছুটা অংশ জুরেও পুরে গেছিলো। এর জন্য বাবা-মা আমাকে অনেক অর্থ ব্যায় করে ডাক্তার দেখিয়েছিলো ভালো করার জন্য। অর্থর জন্য উন্নত চিকিৎসা করাতে না পেরে সব আশা ছেড়ে দিয়েছে। পরে ঢাকা থেকে পরিবারের সাথে লালমোহন চলে আসি। দুই ভাই ৩ বোনের সংসার আমাদের।
বড় দুই ঢাকাতে থাকলে পরিবারের কোন খোজঁ খবর রাখেনা। তাই বাবা আমাদের সংসারের এক মাত্র আয়ের উৎস। লালমোহন বাজারে সেলাই এর কাজ করে যে অর্থ পায় তা দিয়েই আমাদের সংসার চলে। আর মাত গৃহিনী হিসাবে আমাদের ৩ বোন কে আগলে রাখে।
লাইজু জানান, প্রথম দিকে আমার যে কোন কাজ করতে কষ্ট হচ্ছিল। বাবার কষ্টের সংসারে আমি নিজেকে পরিবারে ভোজা হিসাবে থাকতে চাচ্ছিলাম না। তাই তো বাম হাত দিয়েই আমার সব কাজ করা শুরু করি। এখন বাম হাত দিয়েই লেখি, ছবি আকিঁ।
লাইজু আরো জানায়, আমি ২০১৭ সালে আমার বান্ধবী আচিয়া এর মাধ্যমে কোস্ট ট্রাস্ট এর কিশোরী ক্লাব স্বপ্নচূড়া ক্লাবের সদস্য হই। সেখান থেকে আমাকে ১৫ হাজার টাকার ‘শিশু সুরক্ষা বৃত্তি’ পাই।
সেই টাকা দিয়ে আমি সেলাই মেশিন কিনি।স্থানীয় ভাবে প্রশিক্ষন নিয়ে এখন আমি মাসে স্থানীয় মানুষের জামা-কাপড় সেলাই করে মাসে পাচঁশত টাকা থেকে-এক-হাজার টাকা আয় করি। সেই টাকা দিয়ে আমি আমার পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারের অর্থিক ভাবে সহায়তা করে যাচ্ছি।
লাইজু জানায়, ভবিৎতে একজন সরকারী চাকুরী করতে চায়। পরিবারে আর্থিক অভাব অনটন দূর করতে চায়।
এছাড়াও মেয়েরা যে সমাজের ভোজা নয় সেটাই প্রমান করতে চায়। পাশাপাশি বাল্য বিবাহ মুক্ত সমাজ গড়তে লাইজু সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে চায়। এর জন্য কোস্ট ট্রাস্ট কিশোরী ক্লাবের মাধ্যমে কিশোরীদের বাল্য বিয়ে কুফল সর্ম্পকে অন্যান্য মেয়েদের সচেতন করে থাকেন। বাল্যবিয়ে একজন মেয়ের স্বপ্ন পূরনে বাধাঁগ্রস্ত করে।
তাই এই অভিশাপ থেকে এই প্রজন্মের কিশোরীদের রক্ষা করতে অগ্রনী ভূমিকা রেখে চলছে লাইজু বেগম।
লাইজু তার স্বপ্নকে পূরনে জন্য পাশে ধারানোর জন্য ইউনিসেফ ও কোস্ট ট্রাস্টকে ধন্যবাদ জানান।
লাইজু পিতা আব্দুল মন্নান ও মাতা শাফিয়া খাতুন জানায়, লাইজু আমাদের সবচেয়ে ছোট মেয়ে। ছোট বেলায় আগুনে ওর হাত পুড়ে বেকেঁ যাওয়াায় আমরা অনেক চিন্তিত ছিলাম ওর ভবিষৎ নিয়ে। কিন্তুু এখন লাইজু তার পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি আমাদের পরিবারে অর্থিক ভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে। আমরা চাই আমাদের লাইজু যেন অনেক বড় হয়।
কোস্ট ট্রাস্ট আইইসিএম প্রকল্পের লালমোহন উপজেলার ম্যানেজার ফাতেমা বেগম জানায়, আমরা লাইজু মতো একজন সংগ্রামী মেয়ের পাশে দাড়াঁতে পেরে খুব ভালো লাগছে। শিশু সুরক্ষা বৃত্তির প্রতিবন্ধির কোটায় ১৫০০ হাজার টাকার বৃত্তি পেয়ে আজ সে আমাদের জন্য রোল মডেল হিসাবে এগিয়ে চলছে । পাশাপাশি ক্লাবের সদস্যদের কাছে তিনি রোল মডেল হয়ে উঠেছে। কোস্ট ট্রাস্ট আইইসিএম প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী মো: মিজানুর রহমান জানায়, ভোলা, লালমোহন, চরফ্যাশনের প্রান্তিক ও অবহেলিত, বিদ্যালয় হতে ঝড়ে পড়া, এতিম, অশ্রিত, বিশেষ গুন সম্পন্ন প্রতিবন্ধী এবং শিশু বিবাহের ঝুঁকিতে থাকা এমন ৪০৮জন কিশোরীর মাঝে এক কালীন ১৫ হাজার টাকা ‘শিশু সুরক্ষা বৃত্তি’ প্রদান করা হয়।
এই টাকা পেয়ে স্ব-স্ব কিশোরী এখন স্বাবলম্বী। তারা তাদের নিজের পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারের খরচও চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে অনেকাংশেই শিশু বিবাহ কমিয়ে আনার পাশাপাশি পরিবারের স্বচ্ছলতাও ফিরে এসেছে। বিশেষ করে আমাদের বৃত্তি পেয়ে প্রতিবন্ধি শিশুরাও এখন অনেক কিছু করতে পারছে। ভবিষ্যৎ আমরা আরো বৃত্তি দেয়ার চেষ্টা করবো। এর ফলে স্কুল থেকে ঝরে পড়াও শিশু বিবাহর সংখ্যাও কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে জানান। এবিএন/ আদিল হোসেন তপু/জসিম/নির্ঝর
তাই সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে পড়াশোনার পাশাপাশি সেলাই এর কাজ করে স্বপ্ন পূরনের দিকে এগিয়ে চলছে। বর্তমানে ইউনিসেফ এর সহযোগীতায় ও কোস্ট ট্রাষ্ট এর আইইসিএম প্রকল্পের ব্যবস্থাপনায় ‘শিশু সুরক্ষা বৃত্তি’ নিয়ে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে সেলাই মেশিন কিনে কাপড় চোপড় সেলাই করা অর্থ দিয়ে পড়াশোনারা খরচ চালিয়ে যাচ্ছে। তাইতো সেলাই মেশিনের চাকায় বর্তমানে স্বপ্ন দেখছে লাইজু বেগম।
লাইজু বেগম জানায়,আমি যখন ছোট ছিলাম তখন ঢাকাতে মাত্র দুই বছর বয়স থাকতে গ্যাসের আগুনে আমার ডান হাত পুড়ে গিয়ে বেকে যায়। শুধু হাত নয় আমার গালের কিছুটা অংশ জুরেও পুরে গেছিলো। এর জন্য বাবা-মা আমাকে অনেক অর্থ ব্যায় করে ডাক্তার দেখিয়েছিলো ভালো করার জন্য। অর্থর জন্য উন্নত চিকিৎসা করাতে না পেরে সব আশা ছেড়ে দিয়েছে। পরে ঢাকা থেকে পরিবারের সাথে লালমোহন চলে আসি। দুই ভাই ৩ বোনের সংসার আমাদের।
বড় দুই ঢাকাতে থাকলে পরিবারের কোন খোজঁ খবর রাখেনা। তাই বাবা আমাদের সংসারের এক মাত্র আয়ের উৎস। লালমোহন বাজারে সেলাই এর কাজ করে যে অর্থ পায় তা দিয়েই আমাদের সংসার চলে। আর মাত গৃহিনী হিসাবে আমাদের ৩ বোন কে আগলে রাখে।
লাইজু জানান, প্রথম দিকে আমার যে কোন কাজ করতে কষ্ট হচ্ছিল। বাবার কষ্টের সংসারে আমি নিজেকে পরিবারে ভোজা হিসাবে থাকতে চাচ্ছিলাম না। তাই তো বাম হাত দিয়েই আমার সব কাজ করা শুরু করি। এখন বাম হাত দিয়েই লেখি, ছবি আকিঁ।
লাইজু আরো জানায়, আমি ২০১৭ সালে আমার বান্ধবী আচিয়া এর মাধ্যমে কোস্ট ট্রাস্ট এর কিশোরী ক্লাব স্বপ্নচূড়া ক্লাবের সদস্য হই। সেখান থেকে আমাকে ১৫ হাজার টাকার ‘শিশু সুরক্ষা বৃত্তি’ পাই।
সেই টাকা দিয়ে আমি সেলাই মেশিন কিনি।স্থানীয় ভাবে প্রশিক্ষন নিয়ে এখন আমি মাসে স্থানীয় মানুষের জামা-কাপড় সেলাই করে মাসে পাচঁশত টাকা থেকে-এক-হাজার টাকা আয় করি। সেই টাকা দিয়ে আমি আমার পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারের অর্থিক ভাবে সহায়তা করে যাচ্ছি।
লাইজু জানায়, ভবিৎতে একজন সরকারী চাকুরী করতে চায়। পরিবারে আর্থিক অভাব অনটন দূর করতে চায়।
এছাড়াও মেয়েরা যে সমাজের ভোজা নয় সেটাই প্রমান করতে চায়। পাশাপাশি বাল্য বিবাহ মুক্ত সমাজ গড়তে লাইজু সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে চায়। এর জন্য কোস্ট ট্রাস্ট কিশোরী ক্লাবের মাধ্যমে কিশোরীদের বাল্য বিয়ে কুফল সর্ম্পকে অন্যান্য মেয়েদের সচেতন করে থাকেন। বাল্যবিয়ে একজন মেয়ের স্বপ্ন পূরনে বাধাঁগ্রস্ত করে।
তাই এই অভিশাপ থেকে এই প্রজন্মের কিশোরীদের রক্ষা করতে অগ্রনী ভূমিকা রেখে চলছে লাইজু বেগম।
লাইজু তার স্বপ্নকে পূরনে জন্য পাশে ধারানোর জন্য ইউনিসেফ ও কোস্ট ট্রাস্টকে ধন্যবাদ জানান।
লাইজু পিতা আব্দুল মন্নান ও মাতা শাফিয়া খাতুন জানায়, লাইজু আমাদের সবচেয়ে ছোট মেয়ে। ছোট বেলায় আগুনে ওর হাত পুড়ে বেকেঁ যাওয়াায় আমরা অনেক চিন্তিত ছিলাম ওর ভবিষৎ নিয়ে। কিন্তুু এখন লাইজু তার পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি আমাদের পরিবারে অর্থিক ভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে। আমরা চাই আমাদের লাইজু যেন অনেক বড় হয়।
কোস্ট ট্রাস্ট আইইসিএম প্রকল্পের লালমোহন উপজেলার ম্যানেজার ফাতেমা বেগম জানায়, আমরা লাইজু মতো একজন সংগ্রামী মেয়ের পাশে দাড়াঁতে পেরে খুব ভালো লাগছে। শিশু সুরক্ষা বৃত্তির প্রতিবন্ধির কোটায় ১৫০০ হাজার টাকার বৃত্তি পেয়ে আজ সে আমাদের জন্য রোল মডেল হিসাবে এগিয়ে চলছে । পাশাপাশি ক্লাবের সদস্যদের কাছে তিনি রোল মডেল হয়ে উঠেছে। কোস্ট ট্রাস্ট আইইসিএম প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী মো: মিজানুর রহমান জানায়, ভোলা, লালমোহন, চরফ্যাশনের প্রান্তিক ও অবহেলিত, বিদ্যালয় হতে ঝড়ে পড়া, এতিম, অশ্রিত, বিশেষ গুন সম্পন্ন প্রতিবন্ধী এবং শিশু বিবাহের ঝুঁকিতে থাকা এমন ৪০৮জন কিশোরীর মাঝে এক কালীন ১৫ হাজার টাকা ‘শিশু সুরক্ষা বৃত্তি’ প্রদান করা হয়।
এই টাকা পেয়ে স্ব-স্ব কিশোরী এখন স্বাবলম্বী। তারা তাদের নিজের পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারের খরচও চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে অনেকাংশেই শিশু বিবাহ কমিয়ে আনার পাশাপাশি পরিবারের স্বচ্ছলতাও ফিরে এসেছে। বিশেষ করে আমাদের বৃত্তি পেয়ে প্রতিবন্ধি শিশুরাও এখন অনেক কিছু করতে পারছে। ভবিষ্যৎ আমরা আরো বৃত্তি দেয়ার চেষ্টা করবো। এর ফলে স্কুল থেকে ঝরে পড়াও শিশু বিবাহর সংখ্যাও কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে জানান। এবিএন/ আদিল হোসেন তপু/জসিম/নির্ঝর
এই বিভাগের আরো সংবাদ