আজকের শিরোনাম :

বোতল বন্দি বাগান, ৪৮ বছরেও বোতলের মুখ খোলা হয়নি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২০, ১০:৩৯ | আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২০, ১০:৫০

বোতলে আবদ্ধ বাস্তুসংস্থানের সবচেয়ে সুন্দর উদাহরণটি দিতে পারবেন ডেভিড ল্যাটিমার। কাঁচের স্বচ্ছ বোতলের ভেতরেই তিনি গাছ রোপন করেছেন। গত ৪৮ বছর ধরে ওই বোতলের ছিপি কখনোই খোলা হয়নি। কিন্তু আশ্চর্যভাবে সেই অঙ্কুর থেকে বেড়ে বাগানে পরিণত হয়েছে এবং এত বছর ধরে দারুণ সতেজ আছে গাছটি!
১৯৬০ সালে ল্যাটিমার মাথায় কাঁচের বোতলে বনায়ন করার চিন্তা জাগে। সে বছরই ইস্টার সানডেতে এই বাগানের কাজ শুরু করেন।

১০ গ্যালন তরল রাখা যায় এমন একটি বোতল সংগ্রহ করেন তিনি। এরপর পাত্রটির মধ্যে কিছুটা মিশ্র জৈব সারের সঙ্গে ১/৮ গ্যালন পানি মেশান। এতে তারের সাহায্যে একটা স্পাইডারওয়ার্ট গাছের অঙ্কুর লাগান। এরপর তিনি বোতলের মুখ আটকে দেন। এরপর কেটে গেল এক যুগ! ততদিনে গাছ বিকশিত হয়েছে ডালপালা সমেত।

১৯৭২ সালে অল্প পানি দেয়ার জন্য তিনি প্রথমবারের মতো ওই বোতলের মুখ খোলেন। সেই একবারই! এই ব্যতিক্রম ছাড়া আজপর্যন্ত বোতলটি আর খোলা হয়নি। কিন্তু আশ্চর্যভাবে সেই অঙ্কুর থেকে বেড়ে বাগানে পরিণত হয়েছে এবং এত বছর ধরে দারুণ সতেজ আছে। শুধু মাত্র প্রচুর রোদ খাওয়াতে হয়েছে বাগানটিকে!

‘এটাকে জানালা হতে ৬ ফুট দূরে রাখা হয়, তাই পর্যাপ্ত আলো পায়। এর এটি আলোর দিকে বাড়ার চেষ্টা করে তাই মাঝে মাঝে ঘুরিয়ে দেয়া হয়; যেন সবদিকে সুষমভাবে বৃদ্ধি পায়’—ল্যাটিমার জানান। তিনি আরো বলেন, ‘এটিকে আমি কখনোই ছাঁটাই করিনি, তাই এটি বোতলের ধারণক্ষমতা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।’

দেখে বিস্ময় জাগা স্বাভাবিক যে এতগুলো বছর ধরে সম্পূর্ণ একটি বদ্ধ বাগান কী করে বেঁচে থাকতে পারে! কিন্তু বিস্মিত হওয়ার কিছুই নেই কারণ এই বাগানটি একটি নিখুঁত স্বয়ংসম্পূর্ণ ইকোসিস্টেম। গাছটি নিজের অক্সিজেন নিজেই উৎপন্ন করে এবং মাটিস্থ হিউমাস থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে। গাছের ঝরে যাওয়া পাতা ও অন্যান্য অংশ মাটিতে পড়ে ব্যাক্টেরিয়ার মাধ্যমে পুনরায় সরল উপাদানে পরিণত হয় এবং এর ফলে জৈব বস্তু ভেঙ্গে গিয়ে কার্বন-ডাইঅক্সাইডও বায়ুতে আসে।

প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন বাষ্প ঘনীভূত হয়ে মাটিতে জমা হয় এবং মূলের মাধ্যমে পুনরায় গাছ শোষন করে। ফলে একটি পানি চক্রও তৈরি হয়। গাছের প্রয়োজনীয় যাবতীয় উপদান গাছ আর মাটি হতেই রিসাইকেল হয় বলে এতে বাইরে থেকে কিছুই সরবরাহ করতে হয় না।

 

এবিএন/ইমরান/জসিম/এসই

এই বিভাগের আরো সংবাদ