আজকের শিরোনাম :

মস্তিষ্কের তরঙ্গই বলে দেবে কথা!

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২০, ২১:১৩

মেশিনের সাহায্যে মানুষের মস্তিষ্কের তরঙ্গ অনুবাদ করে তা সামনে হাজির করা সম্ভব! না, এটা কোনো বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি নয়। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা মেশিন লার্নিং (এমএল) ব্যবহার করে অনেকটাই এই পথে এগিয়েছেন।

সম্প্রতি বিবিসির এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই জানানো হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কথা বলার সময় বিজ্ঞানীরা কোনো ব্যক্তির মস্তিষ্কের তরঙ্গ দেখে তা ডিকোড করার ক্ষমতার একটি ধাপ অতিক্রম করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও সান ফ্রান্সিসকোর (ইউসিএসএফ) গবেষকেরা অ্যালগরিদমকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন, যা কিনা মস্তিষ্কের ধরনকে রিয়েল টাইমে বাক্যে পরিবর্তন করতে পারে। আর এই সময়ে যন্ত্রটির বাক্য গঠনে ভুলের হার মাত্র ৩ শতাংশ। একে বলা হয় ‘ব্রেন-মেশিন ইন্টারফেস’। এর আগে স্নায়বিক কার্যকলাপ ডিকোডিং বা কোড থেকে বাক্য রূপান্তর করতে সাফল্যের হার অনেক সীমিত ছিল।

ইতোমধ্যেই এই গবেষণাবিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার নিউরোসায়েন্স’ সাময়িকীতে।

আগে গবেষকেরা কেবল কোনো শব্দের ক্ষুদ্র অংশ বা কোনো বাক্যের সামান্য কিছু অংশ ডিকোড করতে পারত। তবে পরবর্তীকালে মেশিন লার্নিং বিশেষজ্ঞ ড. জোসেপ মাকিন ও তার সহকর্মীরা মস্তিষ্কের তরঙ্গ দেখে পুরো বাক্য পড়ে ফেলার কাজটি নিখুঁতভাবে করার চেষ্টা চালান। এজন্য চারজন স্বেচ্ছাসেবক বাক্য জোরে পড়ে শোনানোর সময় ইলেকট্রোড তাদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ রেকর্ড করে রাখে। এরপর তা কম্পিউটিং সিস্টেমে দেওয়া হয়। সবশেষে কম্পিউটার সিস্টেম সেখান থেকে তথ্য বিশ্লেষণ করে শব্দ গঠন এবং পরে বাক্য গঠন করে।

তবে গবেষকেরা এখনও তাদের গবেষণার সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করেছেন। এখন পর্যন্ত তাদের তৈরি এই পদ্ধতিতে ৩০ থেকে ৫০টি বাক্য ডিকোড করা যায়।

‘নেচার নিউরোসায়েন্স’ সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধে গবেষকেরা লিখেছেন, তাদের ডিকোডারকে আরও বেশি শেখানো হবে এবং নিয়মিত ভাষা ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কী পরিমাণ ডেটা বা তথ্য লাগবে, তা জানা প্রয়োজন। তাদের তৈরি ডিকোডার বাক্য গঠন করতে সাধারণ বাক্য বিন্যাস ব্যবহার করছে না। তাদের মেশিন ইন্টারফেস একক শব্দ শনাক্ত করছে। এর কারণে প্রশিক্ষণের সময় ব্যবহার করা হয়নি—এমন বাক্যও ডিকোড করে ফেলতে পারে তাদের সিস্টেম।

গবেষকদের দাবি- এক স্বেচ্ছাসেবক থেকে আরেক স্বেচ্ছাসেবকের কাছে যাওয়ার আগে কম্পিউটার সিস্টেমকে যখন কোনো ব্যক্তির মস্তিষ্কের তরঙ্গ ও কথার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, তখন তার ডিকোডিং ফলাফল উন্নত হয়েছে। এর অর্থ দাঁড়ায়, কৌশলটি লোকজনের মধ্যেও স্থানান্তরযোগ্য হতে পারে।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ