পানির সন্ধান পাওয়া গেল সম্ভাব্য বাসযোগ্য গ্রহে
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:০৭
প্রথমবারের মতো জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একটি দূরবর্তী নক্ষত্রের সম্ভাব্য বাসযোগ্য অঞ্চলের কক্ষপথের একটি গ্রহে পানি থাকার প্রমাণ পেয়েছেন। ১১১ আলোকবর্ষ দূরে কে২-১৮বি নামের গ্রহটিতে পানির সন্ধান পাওয়ার পর তাতে প্রাণের অস্তিত্ব অনুসন্ধানের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোনো নক্ষত্রের বাসযোগ্য দূরত্বের কোনো গ্রহের বায়ুমণ্ডলে পানির অস্তিত্ব পাওয়া গেল এই প্রথম।
অর্থাৎ সূর্যের সঙ্গে যেমন দূরত্ব রেখে পৃথিবী ঘুরছে, ওই গ্রহটি যে নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে, তাদের তুলনামূলক দূরত্বও তেমন। ফলে পৃথিবীতে যেমন প্রাণের উদ্ভব ঘটেছে, ওই গ্রহটিতেও প্রাণের অস্তিত্ব থাকার বাস্তব পরিবেশ রয়েছে।
পৃথিবী থেকে ৬৫০ মিলিয়ন মিলিয়ন মাইল দূরত্বের কে২-১৮বি নামে গ্রহটিতে পানি পাওয়ার খবর বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার অ্যাস্ট্রনমিতে প্রকাশিত হয়েছে।
তবে গ্রহটিতে আদৌ প্রাণে বিকাশ ঘটেছে কিনা বা পৃথিবীর সঙ্গী আর কোনো গ্রহ রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হতে লাগবে আরও অন্তত ১০ বছর।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই সময়ের মধ্যে নতুন স্পেস টেলিস্কোপ আবিষ্কার হবে, যা দিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে প্রাণের উদ্ভব ঘটানোর মতো গ্যাস ওই গ্রহটিতে রয়েছে কি না?
কে২-১৮বিতে পানির সন্ধানের অভিযানের নেতৃত্বদাতা ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক জিওভান্না তাদের আবিষ্কারকে এক কথায় বলেছেন ‘অভূতপূর্ব’। এই প্রথম আমরা এমন গ্রহে পানির সন্ধান পেলাম, যেটি তার নক্ষত্রের বাসযোগ্য অংশে রয়েছে। যেখানকার তাপমাত্রা প্রাণের অস্তিত্বের জন্য সম্ভাবনাময়।
নক্ষত্রের এই বাসযোগ্য অংশের মানে হলো সেই অঞ্চলটি, যেখানে তাপমাত্রা এমন থাকে যাতে পানি তরলকারে কোনো গ্রহের পৃষ্ঠদেশে থাকতে পারে।
ওই গ্রহটির বিষয়ে আরও জানতে হাবলের চেয়ে আরও আধুনিক টেলিস্কোপ আবিষ্কারের অপেক্ষায় থাকতে হলেও ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ড. ইনগো ওয়াল্ডমান এখনই উচ্ছ্বসিত।
তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞানে এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এবং আমরা সবসময় রোমাঞ্চিত হই এই ভেবে যে মহাবিশ্বে প্রাণ শুধু আমাদের পৃথিবীতেই আছে। কিন্তু আগামী ১০ বছরের মধ্যে আমরা জানব, এমন কোনো রাসায়নিক কি রয়েছে, যা অন্য গ্রহেও প্রাণ সৃষ্টিতে সক্ষম।’
এই গবেষক দল হাবল স্পেস টেলিস্কোপে ২০১৬ ও ১০১৭ সালে নিবিড় পর্যবেক্ষণ চালিয়ে কে২-১৮বি গ্রহে পানির সন্ধান পেয়েছেন।
তারা বলছেন, এই গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে পানির ভাগ ৫০ শতাংশ; আর পানির গঠন পৃথিবীর পানির অনুরূপ। এই গ্রহটির আকার পৃথিবীর দ্বিগুণ। এর তাপমাত্রা শূন্য থেকে ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
খবর বিবিসি এবিএন/সাদিক/জসিম
খবর বিবিসি এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ