আজকের শিরোনাম :

চশমাধারীরা প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন!

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০১৮, ১৭:৩৪

ঢাকা, ০৬ জুন, এবিনিউজ : চশমা চোখে দিলেই কেমন একটা ‘জ্ঞানী ভাব’ চলে আসে তাই না? এটার কোনো বাস্তব ভিত্তি আছে কিনা সে সম্পর্কে কেউ নিশ্চিত ছিলেন না। কিন্তু এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন, জিন বা বংশগত বৈশিষ্ট্যের কারণে প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেদের দৃষ্টি শক্তি দুর্বল হয়। যেসব বংশগত বৈশিষ্ট্য বা জিনের কারনে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয় সেগুলো অত্যন্ত বুদ্ধিমান মানুষদের শরীরে থাকার সম্ভাবনা সাধারণ মানুষদের চেয়ে ৩০% বেশি বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

ব্রিটিশ পত্রিকা ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ইউনিভার্সিটি অফ এডিনবরার গবেষকরা বুদ্ধিমত্তা ও দুর্বল দৃষ্টিশক্তি মধ্যে এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। বিজ্ঞানীরা অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় ৫৭টি গবেষণায় অংশ নেয়া ১৬ থেকে ১০২ বছর বয়সী তিন লাখ চারশো ছিয়াশি জন মানুষের জিনগত তথ্য বিশ্লেষণ করেন। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন ধরনের ‘থিঙ্কিং টেস্ট বা চিন্তাগত পরীক্ষায়’ অংশ নেন। এসব পরীক্ষায় যারা সর্বোচ্চ স্কোর করেছেন তাদের চশমা ব্যবহার করার সম্ভাবনা কম স্কোর করা মানুষদের চেয়ে ৩০% বেশি। গবেষণায় আরও দেখা গেছে উচ্চ ‘চিন্তাশক্তির’ সাথে হৃদযন্ত্রের সুস্বাস্থ্যের জন্য জিনের সম্পর্ক রয়েছে। তবে দুঃখজনক ভাবে, বুদ্ধিমত্তা ও দুর্বল দৃষ্টিশক্তি ও হৃদযন্ত্রের সুস্বাস্থ্য কেন একটির সাথে আরেকটি সম্পর্কিত তা বের করতে পারেননি গবেষকরা। তবে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এই গবেষণার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে আরও গবেষণা চালালে ভবিষ্যতে আলঝেইমার, স্মৃতিভ্রংশসহ বিভিন্ন রোগের উন্নততর চিকিৎসা উদ্ভাবন সম্ভব হবে।

গবেষক দলটি দক্ষ চিন্তাশক্তি, যেমন স্মৃতি, যুক্তি প্রয়োগ, দ্রুত তথ্য বিশ্লেষণ এবং স্থান সম্পর্কে সচেতন হওয়ার সাথে সম্পর্কিত ১৪৮ জিন শনাক্ত করেছেন। এর মধ্যে ৫৮টি জিনের কথা বিজ্ঞানীরা আগে জানতেন না। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. গেইল ডেভিস বলেন, এটা ছিল চিন্তাশক্তি সম্পর্কে সবচেয়ে বড় গবেষণা। উত্তরাধিকার সূত্রে উন্নত চিন্তাশক্তির লাভের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে এমন অনেকগুলো জিন এতে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। আরেকজন গবেষক ইয়ান ডিরি বলেন, ‘দশ বছর আগে তিন হাজার মানুষের ওপর এমন গবেষণা চালানো হয়েছিল, এবার তার ১০০ গুণ বেশি মানুষের ওপর একই গবেষণা চালানো হয়েছে। ২০০–এরও বেশি বিজ্ঞানী এতে অংশ নিয়ে মানুষের বুদ্ধিমত্তার সাথে সম্পর্কিত ১৫০টি জিন শনাক্ত করেছেন।’ ‘আমরা এও বুঝতে পেরেছি পুরো বিষয়টি সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা লাভের জন্য আরও বড় আকারে গবেষণা পরিচালনা করতে হবে। কিন্তু একটা জিনিস এসব থেকে পরিষ্কার, ভাল স্বাস্থ্যের সাথে উন্নত চিন্তাশক্তির সম্পর্ক রয়েছে,’ যোগ করেন ডিরি। ন্যাচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটিতে কাজ করেছেন অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, হল্যান্ড, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন ও যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা।

এবিএন/ফরিদুজ্জামান/জসিম/এফডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ