আজকের শিরোনাম :

এক অবাঙালির চিৎকার— ‘শেষ করে আসো’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:৩৩

ধীরে ধীরে জমে উঠেছে ফাইনালের নাটক। বিশ্বকাপ জিততে হলে আকবর আলী ও রকিবুলকে করতে হবে ১৫ রান। বল আছে ৫৪টি। এমন সময় ক্যামেরায় ধরা পড়ল, মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে এক ভদ্রলোক চিৎকার করে বলছেন ‘শেষ করে আসো’। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে জড়ানো লোকটি বাংলায় বাক্যটি বললেও তাকে দেখলেই বোঝা যায় তিনি বাঙালী নন।

ভদ্রলোকের নাম রিচার্ড স্টনিয়ার। জাতিতে তিনি নাক উঁচু ইংরেজ। তবে তাকে দেখলে ইংরেজদের সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা পাল্টে যেতেই পারে। সর্বদা হাসিখুশি আর চনমনে থাকা স্টনিয়ার এক মুহূর্তের মধ্যেই মিশে যেতে পারবে আপনার সঙ্গে। পুরো যুব বিশ্বকাপেই তাকে দেখা গেছে আকবর আলীদের উৎসাহ দিতে। আর জুনিয়র টাইগারদের সাফল্যের নেপথ্যেও রয়েছে তার অবদান।

রিচার্ড স্টনিয়ার কাজ করছেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের স্ট্রেন্থ ও কন্ডিশনিং কোচ হিসেবে। স্টনিয়ারের শুরুটা ছিল বাংলাদেশ এ দলের হয়ে। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে এ দলের দায়িত্ব নিতে বাংলাদেশ আসেন তিনি। ১২ মাস আগে তাকে দেওয়া হয় যুব দলের দায়িত্ব। গত ১২ মাস ধরেই দলটির প্রত্যেকটি ক্রিকেটারকে ফিট রাখার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি। তার কঠোর পরিশ্রমের ফলাফল যুব বিশ্বকাপেই পেল বাংলাদেশ। বিশ্বজয় করা আকবর আলীরা স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে পরিণত যুব দলের। গোটা টিমের শরীরী ভাষা আর আগ্রাসী মনোভাব মুগ্ধ করেছে পুরো বিশ্বকেই।

অন্যান্য ইংরেজ কিংবা কোচদের মতো গম্ভীর নন স্টয়নিয়ার। ১৮ বছর বয়সী তরুণদের শাসন নয় বরং বোঝার চেষ্টা করেন তিনি। তাদের সঙ্গে করেন বন্ধুর মতো আচরণ। টাইগার যুবাদের সঙ্গে তার সম্পর্কের গভীরতা জানাতে গিয়ে  এক সাক্ষাৎকারে স্টয়নিয়ার বলেছিলেন, তারা অন্য কোচদের স্যার ডাকে। আমাকে বলে ভাই। তার মানে তারা আমাকে অনেক ভালোবাসে।

জুনিয়র টাইগারদের ভাই স্টয়নিয়ার এবারের বিশ্বকাপে নজর কেড়েছেন আলাদাভাবে। তার ঠোটের কোণে থাকা হাসির জন্য আর যুবাদের ক্রমাগত উৎসাহ দেওয়ার জন্য। প্রতিটা ম্যাচ জয়ের পর তিনি আনন্দে নেচেছেন, করেছেন রকিবুলদের মতো ছেলেমানুষি উদযাপনও। বাংলাদেশের বিশ্বজয়ের পর স্টয়নিয়ার এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, এটা তার কাছে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো। তার মতো পুরো বাংলাদেশের মানুষেরও স্বপ্ন সত্যি হয়েছে এই যুবাদের মাধ্যমেই। বহু কাঙ্ক্ষিত একটা ট্রফি এসেছে এ দেশে। আর স্টয়নিয়ারের সে স্বপ্ন পূরণের একজন নেপথ্য নায়ক হিসেবেই বিবেচিত হবেন। ইতিহাস তৈরিতে তার অবদানও মনে রাখবে বাংলাদেশের মানুষ।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ