আজকের শিরোনাম :

যেভাবে যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে বাংলাদেশ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:৪৪

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের যুবারা। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আকবর আলীর নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ক্রিকেটের কোনো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ।

এর আগে, ২০১৬ সালে নিজ দেশে যুব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছিল যুবারা। দক্ষিণ আফ্রিকায় চলমান বিশ্বকাপে এবার সে সাফল্যকেও ছাড়িয়ে গেল তামিম-সাকিবদের উত্তরসূরিরা।

যুব বিশ্বকাপের ১৩তম আসরে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ ছিল সি গ্রুপে। একই গ্রুপে বাংলাদেশ ছাড়াও ছিল জিম্বাবুয়ে, স্কটল্যান্ড ও শক্তিশালী পাকিস্তান। তাদের টপকে গ্রুপ সেরা হয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে ছোট টাইগাররা। এরপর কোয়ার্টারে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা ও সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে নিশ্চিত করে ফাইনাল।

১৭ জানুয়ারি যুব বিশ্বকাপের পর্দা উঠলেও বাংলাদেশের মিশন শুরু হয় ১৮ জানুয়ারি। নিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ মাঠে নামে অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। জুনিয়র টাইগারদের প্রথম ম্যাচেই বাধা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টি। তবে সে বাধাকে উপেক্ষা করে আফ্রিকান দলটিকে উড়িয়ে দিয়ে শুভ সূচনা করে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের চাপের মুখে পড়ে জিম্বাবুয়ে। ২৮.১ ওভারে জিম্বাবুয়ে ১৩৬ রান তুলতেই তারা হারায় ৬ উইকেট। এরপরই নামে বৃষ্টি। পরে বৃষ্টি থামলেও জিম্বাবুয়ে আর ব্যাটিংয়ের সুযোগ পায়নি। ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২২ ওভারে ১৩০। ব্যাটসম্যানদের তাণ্ডবে ১১.২ ওভারেই ১ উইকেট হারিয়ে সে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় যুবারা। ৩৩ বলে ৫৮ রান করে ম্যাচসেরা হন পারভেজ হোসেন।

দ্বিতীয় ম্যাচেও বড় জয় তুলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। স্কটল্যান্ডকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে দেয় আকবর আলীর দল। এ ম্যাচেও পরে ব্যাট করে বাংলাদেশ। টাইগার বোলারদের তোপে ৩০.৩ ওভারে মাত্র ৮৯ রানেই গুটিয়ে যায় স্কটল্যান্ড। আর ৯০ রানের মামুলি লক্ষ্য ১৬.৪ ওভারে ৭ উইকেট হাতে রেখেই টপকে যায় বাংলাদেশ। হ্যাটট্রিকসহ ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন রকিবুল।

তৃতীয় ম্যাচে গ্রুপসেরা হওয়ার লড়াইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নামে যুবারা। এ ম্যাচে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। পাক বোলারদের তোপে ২৫ ওভারে মাত্র ১০৬ রানেই ৯ উইকেট হারায়। বৃষ্টিতে শেষরক্ষা হয় যুবাদের, ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় পয়েন্ট ভাগাভাগিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় দুই দলকে। তবে রান রেটে এগিয়ে থেকে গ্রুপ সেরা হয় বাংলাদেশই।

কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের বড় ব্যবধানে হারিয়েই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। ব্যাট করে তামিম, শাহাদাত ও হৃদয়ের হাফসেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ২৬১ রান জমা করে আকবর আলীরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশি বোলারদের তাণ্ডবে ভেঙে পড়ে প্রোটিয়া ব্যাটিং লাইনআপ। ১৫৭ রানেই গুটিয়ে যায় তারা। ফলে ১০৪ রানের দাপুটে জয় পায় বাংলাদেশ। ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন রকিবুল।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) পচেফস্ট্রুমে ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয় টাইগার যুবারা। টস জিতে কিউইদের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান আকবর আলী। এরপর দাপট দেখায় বাংলাদেশি বোলাররা। শরিফুল-শামিমদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২১১ রান সংগ্রহ করতে পারে নিউজিল্যান্ড। শরিফুল সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩২ রানে দুই উইকেট হারালেও মাহমুদুল হাসান জয়ের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। মাহমুদুল করেন ১০০ রান।

ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত। প্রথম সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে তারা। ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে টুর্নামেন্টের ফাইনাল। প্রথমবার বিশ্বকাপ জয়ের হাতছানি বাংলাদেশের সামনে।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ