আজকের শিরোনাম :

যেসব ভুলের কারণে শেষ ষোলোয় যেতে পারেনি জার্মানি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০১৮, ১৩:১৮

ঢাকা, ২৮ জুন, এবিনিউজ : ৪ বছর আগে জার্মানিকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচ জোয়াকিম লোর এবারের বিশ্বকাপের দল বাছাই নিয়েই সমালোচনা তৈরি হয় আসর শুরুর আগে। আর আসরে গ্রুপপর্ব থেকে বাদ হওয়ার পর নিশ্চিতভাবে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়বেন তিনি।

বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ২২ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড লিরয় সেইনকে রাখেননি তিনি। গত মৌসুমে এ ফরোয়ার্ড ম্যানচেস্টার সিটির প্রিমিয়ার লিগ বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল দেয়া মারিও গোয়েৎজেকেও দলে রাখেননি তিনি।

দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ৫টি পরিবর্তন নিয়ে একাদশ সাজান লো। থমাস মুলারকে বসিয়ে মেসুত ওজিলকে খেলালেও আর্সেনাল মিডফিল্ডার দলকে জয় এনে দিতে পারেননি।

২০০৬ থেকে জার্মানির দায়িত্বে থাকা লো দলকে ২০০৮-এর ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নিয়ে যান। তার অধীনেই পরবর্তী সময়ে বিশ্বকাপ জেতে জার্মানরা।

তবে লোর দলের প্রধান কয়েকজন খেলোয়াড়ের ভবিষ্যতে এখন শঙ্কার মুখে।

ম্যানুয়েল ন্যয়ারের বয়স ৩২, স্যামি খেদিরার ৩১ আর ওজিল ও মার্কো রয়েসের বয়স ২৯। অর্থাৎ বিশ্বকাপের মূলপর্বে তাদেরকে আর খেলতে নাও দেখা যেতে পারে।

তবে লো বলেছেন, জার্মানির ফুটবলে সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এ হার কি জার্মান ফুটবলে অন্ধকার অধ্যায় শুরু করবে? আমার মনে হয় না।’

গোলের সুযোগ হাতছাড়া করার মাশুল
গ্রুপ ‘এফ’র আরেক খেলায় যখন মেক্সিকোর বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতছিল সুইডেন, তখন দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে গোল দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল জার্মানি। জার্মানি জিতলে গোল ব্যবধানে মেক্সিকোর বাদ পড়তো বিশ্বকাপ থেকে। কিন্তু তখন উল্টো গোল করে বসে দক্ষিণ কোরিয়া। তবে কিমের গোল শুরুতে অফসাইডের কারণে বাতিল করে দেয়া হয়।

ভিডিও রিভিউ করে দেখা যায়, জার্মান মিডফিল্ডার টনি ক্রুসের গায়ে লেগে কিমের কাছে বল আসে। কাজেই বাতিল করে দেয়া হয় অফসাইডের সিদ্ধান্ত আর এগিয়ে যায় দক্ষিণ কোরিয়া। ম্যাচে ফেরার জন্য মরিয়া জার্মানদের হয়ে আক্রমণে যোগ দেন গোলরক্ষক ন্যয়ারও।

আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগান টটেনহাম ফরোয়ার্ড সন হিউং-মিন। আক্রমণভাগে থাকা ন্যয়ারের অনুপস্থিতির সুযোগে খালি পোস্টে গোল করে নিশ্চিত করেন ২-০ গোলের জয়।

দুই গোল খেলেও ম্যাচে জার্মানির হতাশা হয়ে থাকবে কয়েকটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করা।

লিয়ন গোরেৎজকার একটি হেড দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন দক্ষিণ কোরিয়ার গোলরক্ষক চো হিয়েওন-উ। সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন টিমো উইনারও। প্রায় ১২ গজ দূর থেকে পোস্টের বাইরে শট নেন তিনি।

দক্ষিণ কোরিয়া দুই গোল দেয়ার আগে একটি সুযোগ হাতছাড়া করেন ম্যাটস হামেলসও। ৬ গজ দূর থেকে নেয়া তার হেড চলে যায় পোস্টের ওপর দিয়ে।

এই হারের সঙ্গে হতাশাজনকভাবে শেষ হলো জার্মানির টানা দুই বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন।

আবারো চ্যাম্পিয়নদের অকাল বিদায়
আগেরবারের চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপের শেষ ৫ আসরের মধ্যে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেয়া চতুর্থ দল জার্মানি (২০০২-এ ফ্রান্স, ২০১০-এ ইতালি আর ২০১৪-তে স্পেন)

বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকে জার্মানির বাদ পড়ার ঘটনা ঘটল দ্বিতীয়বারের মতো। ১৯৩৮ সালে শেষবার তারা প্রথম রাউন্ডে বাদ পড়েছিল। আর বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড গ্রুপ পদ্ধতিতে হওয়ার পর থেকে এই প্রথমবার জার্মানির সঙ্গে ঘটল এমন ঘটনা। 

আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন জার্মানি এবার গোল করেছে ২টি, যা বিশ্বকাপে কোনো ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের জন্য দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নের সবচেয়ে কম গোল করার রেকর্ড ফ্রান্সের। ১৯৯৮ এর চ্যাম্পিয়নরা ২০০২ সালে একটিও গোল করতে পারেনি। 

বিশ্বকাপে কোনো এশিয়ান দলের সঙ্গে খেলা ৬ ম্যাচে এটিই ছিল জার্মানির প্রথম হার। 

সন হিউং-মিনের গোলটি (৯৫:৫২) বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচে জার্মানির সবচেয়ে বেশি সময়ে গোল খাওয়ার রেকর্ড।
সূত্র : বিবিসি

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ