আজকের শিরোনাম :

যেভাবে বানানো হয়েছে এসজি গোলাপি বল

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ১৩:১৯

আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি বলের ওজন ১৫৬ থেকে ১৬৩ গ্রাম। ভারতের মাটিতে প্রথমবারের মতো হতে যাচ্ছে দিবারাত্রির টেস্ট। কৃত্রিম আলোয় ব্যাট-বলের ঠুকঠাক শব্দ শোনা যাবে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে। মুখোমুখি হচ্ছে দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ও ভারত।

দিবারাত্রির টেস্ট মানেই গোলাপি বল। এখন পর্যন্ত যে ১১টি দিবারাত্রির টেস্ট হয়েছে, প্রত্যেকটিতে ব্যবহৃত হয়েছে কুকাবুরার প্রস্তুতকৃত গোলাপি বল। ভারত তাদের মাটিতে নিয়মিত খেলে আসছে এসজি বলে। গোলাপি বলও প্রস্তুত করেছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান এসজি।

প্রতিষ্ঠানটির মার্কেটিং ডিরেক্টর পরশ আনন্দ জানালেন, একটি গোলাপি বল প্রস্তুত করতে তাদের সময় লেগেছে আট দিন। আর ইডেনে যেহেতু প্রথমবারের মতো ম্যাচ হবে গোলাপি বলে, তাই বল প্রস্তুতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেছেন তারা।

এসজি বল বরাবরই পেস বোলারদের সহায়তা করে। কুকাবুরার তুলনায় এসজি বলের সিম বেশ ভালো হয়। বাতাসে সুইং কিংবা পিচে পড়ে আরও ভালো সুইং করতে পারে। বল যত পুরোনো হতে থাকে, ততই রিভার্স হতে থাকে। ফিল্ডাররা তখন শুধু একদিকেই ঘষতে থাকেন। এতে করে বলের একদিক পুরোনো হয়, অন্যদিক চকচক করতে থাকে।
পরশ আনন্দ নিশ্চিত করেছেন, গোলাপি বলে পেসাররা স্পিনারদের থেকে বাড়তি সুবিধা পাবে, ‘বলটিতে সিম অনেকক্ষণ স্থায়ী হবে। ফলে দ্রুতগতির বোলাররা বেশি সুবিধা পাবে। বাউন্সও পাবে পছন্দমতো। তবে ব্যাটসম্যানরা একটু আস্তে খেললেই বল দ্রুত দৌড়াবে।’

গোলাপি বলে অনুশীলন করে বাংলাদেশের মেহেদী হাসান মিরাজ একই কথা বলেছিলেন। বল ব্যাটে লাগলেই দ্রুত যায়। ফলে ফিল্ডারদের জন্য এটা নতুন এক চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে। ইন্দোরে স্লিপ অনুশীলনে ইমরুল, সাদমান, মিথুনদের ক্যাচ দিয়েছেন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। তার ব্যাট ছুঁয়ে আসা বলও গেছে খুব দ্রুতগতিতে।

ভারতের উত্তর প্রদেশের মিরাটে এসজি কোম্পানির ফ্যাক্টরি। সেখানেই গোলাপি বল প্রস্তুত হয়েছে। কীভাবে এসজি গোলাপি বল প্রস্তুত হয়েছে, সেটাই এখন সবার আগ্রহ। পরশ আনন্দ কিছুটা ধারণা দিয়েছেন, ‘প্রথমে চামড়ায় গোলাপি রং শুকানো হয়। এরপর মেশিন ও হাতের সাহায্যে সেই চামড়া প্রেস করার কাজ করা হয়। প্রথম স্তরে দুটি কাজ করা হয়।’

‘এরপর মসৃণ চামড়া থেকে টুকরো টুকরো পিস কাটা হয়। একটি বলে ব্যবহৃত হয় চার পিস চামড়ার টুকরো। দুটি আলাদা আলাদা পিস সেলাই করা হয়, যা বলের অর্ধেক অংশের আকৃতি নেয়। মোট চারটি পিসে দুটো হাফ কাপ তৈরি করে তার মধ্যে কর্ক ঢুকিয়ে সেলাই করা হয়। সেলাইয়ের পর বল মজবুত করার জন্য রাখা হয় একটা নির্দিষ্ট টেম্পারমেন্টে। এরপর রংয়ের হালকা প্রলেপ দেওয়া হয়। এরপর শুকানো ও পলিশের কাজ। পলিশের কাজটা করা হয় মেশিনে, নিখুঁতভাবে। সবশেষে বলের সিম নিয়ে কাজ করা হয়। বলের ওপর চলে সুতোঁর কাজ। এভাবেই দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় অতি যত্নের সঙ্গে একটি গোলাপি বল তৈরি করা হয়’- বলেন পরশ আনন্দ।

লাল ও গোলাপি বলে গুণগত পার্থক্য নেই। তবে গোলাপি বল নোংরা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখছে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসজি।

ভারতে প্রথমবারের মতো গোলাপি বলে দিবারাত্রির টেস্ট। শত বাধা পেরিয়ে মাঠে গোলাপি বলে ম্যাচ হবে, এ যেন পরম পাওয়া। বাংলাদেশ ও ভারতের ম্যাচের ওপর উপমহাদেশে গোলাপি বলের ভবিষ্যত নির্ভর করছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এজন্য ক্রিকেট বিশ্বের বিশেষ নজর থাকবে ঐতিহাসিক ইডেন গার্ডেনে।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ