আজকের শিরোনাম :

বিসিবির চুক্তি থেকে বাদ পড়ছেন সাকিব

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০১৯, ১০:৩৮

মেরিলিবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) ক্রিকেট কমিটি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সাকিব আল হাসান। দুর্নীতিবিরোধী আইন লঙ্ঘনের কারণে মঙ্গলবার রাতে আইসিসির দেওয়া দুই বছরের নিষেধাজ্ঞার পরপরই এমসিসিতে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন সাকিব। পদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় ইউনিসেফ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) শুভেচ্ছাদূতের পদ থেকেও সরে দাঁড়ানোর চিন্তাভাবনা করছেন তিনি। বাদ পড়ছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকেও। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার বাণিজ্যিক চুক্তিগুলোও এখন হুমকির মুখে। বিসিবির বেলায় অবশ্য আইসিসির বাধ্যবাধকতা আছে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর চুক্তি রাখা না রাখা সম্পূর্ণ তাদের নিজস্ব এখতিয়ার। তবে নিষিদ্ধ ক্রিকেটারের সঙ্গে সাধারণত কেউ চুক্তি রাখে না।

আইসিসির নিষেধাজ্ঞার পর বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে সাকিবের বাদ পড়াটা যে সময়ের ব্যাপার, সে ইঙ্গিত গতকাল পাওয়া গেছে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরীর কথায়, 'এটা অবশ্যই বাতিল হওয়ার কথা। যে নিয়ম আছে, সে অনুযায়ী এটা ২৯ অক্টোবর থেকেই বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা। তবে বোর্ড এখনও যেহেতু এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি, তাই আমি এখন নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারব না।' সাকিবের চুক্তি বাতিল হওয়াটা যে সময়ের ব্যাপার তা জানিয়েছেন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান আকরাম খানও, 'আমাদের তো নিয়ম অনুযায়ী চলতে হবে। নিয়ম বলছে, সাকিবের সঙ্গে বিসিবির চুক্তি আর থাকছে না।' মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের কণ্ঠেও একই সুর, 'নিষেধাজ্ঞার পর তো চব্বিশ ঘণ্টাও পার হয়নি। ব্যাপারটা নিয়ে আমরা এখনও আলোচনা করতে পারিনি। এমনিতে সাধারণ নিয়ম হলো, নিষিদ্ধ ক্রিকেটার চুক্তিতে থাকতে পারে না।' বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে শীর্ষ গ্রেডে আছেন সাকিব। এই গ্রেডের মাসিক বেতন চার লাখ টাকা। সঙ্গে আনুষঙ্গিক আরও সুযোগ-সুবিধাও থাকে।

কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় থাকা ক্রিকেটারকে সাধারণত সব ধরনের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম থেকেও দূরে রাখা হয়। কোনো ধরনের ম্যাচ খেলা তো দূরের বিষয়, অনুশীলনের সুযোগ-সুবিধা পর্যন্ত দিতে চায় না কোনো বোর্ড। এই যেমন নিষিদ্ধ হওয়ার পর মোহাম্মদ আশরাফুল বিসিবির কোনো ট্রেনিং সুবিধা ব্যবহার করতে পারেননি। সাকিবের বেলায় অবশ্য এমনটি হচ্ছে না। বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়লেও সাকিবকে ট্রেনিং সুবিধা দেবেন তারা। জালাল ইউনুস বলেন, 'ট্রেনিংয়ের সুযোগ দেওয়াটা বিসিবির নিজস্ব এখতিয়ার। সেটা আমরা সাকিবকে দেব। তবে কোনো দলের সঙ্গে সে অনুশীলন করতে পারবে না, এখানে আইসিসির নিষেধ আছে; কিন্তু আলাদাভাবে ট্রেনিং করার সুযোগ পাবে সে। আমরা চাই, নিষেধাজ্ঞা শেষে সে যেন মাঠে নামতে প্রস্তুত থাকে।'

এমসিসির ক্রিকেট কমিটি সাকিবের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে নিজেদের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে খবরটি। সাম্মানিক এ পদ থেকে সাকিবের সরে দাঁড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটির সভাপতি মাইক গ্যাটিং বলেন, 'সাকিবকে কমিটি থেকে হারানোয় আমরা ব্যথিত। গত কয়েক বছর সাকিব যথেষ্ট অবদান রেখেছে। আমরা তার পদত্যাগের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানাই। আমি মনে করি, সে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।' ২০১৭ সালে বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এমসিসির ক্রিকেট কমিটির সদস্য হয়েছিলেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। ক্রিকেট বিশ্বের আইকনিক ব্যক্তিরাই এ পদে সদস্য হন। ক্রিকেট-সংশ্নিষ্ট বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এমসিসির ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটি কাজ করে। এ কমিটির পরামর্শের ভিত্তিতেই ক্রিকেটের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে প্রস্তাব দেয় এমসিসি। তাদের প্রস্তাবেই ক্রিকেটে নানা পরিবর্তন আসে। ২০১৭ সালের অক্টোবরে সদস্য হওয়ার পর সিডনি ও ব্যাঙ্গালুরুতে কমিটির দুটি সভায় অংশ নিয়েছিলেন সাকিব।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ