আজকের শিরোনাম :

সাকিব ছাড়া কী হবে বাংলাদেশের?

  ডয়চে ভেলে

৩১ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:৩৫ | অনলাইন সংস্করণ

শাস্তি না কমলে আগামী এক বছর সাকিবকে পাবে না বাংলাদেশ দল৷ তাই বলে কি ‘সাকিব নেই! সাকিব নেই!' আহাজারি করে আগেই হেরে বসতে হবে? মোটেও না৷ বরং ভারত সফর থেকেই শুরু করতে হবে নতুন লড়াই৷ সেই লড়াইয়ে জয় পাওয়া খুব সম্ভব৷

টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়ে দিলে খুব অবাক হবো না আমি৷ অবাক হবো না, কারণ, আমি জানি, টি-টোয়েন্টিতে ভারত সেরা দল নয়৷গত পরশুই টি-টোয়েন্টির ব়্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে আইসিসি৷ সেখানে সবার ওপরে কোন দেশের নাম লেখা দেখেছেন নিশ্চয়ই? পাকিস্তান৷ ভারতের নাম আছে পাঁচ নাম্বারে৷ বাংলাদেশ অবশ্য আরো পেছনে— নয় নাম্বারে৷ তা নয় নাম্বার দল কি পাঁচ নাম্বারকে হারাতে পারে না? খুব পারে৷

বেশি দূরে যেতে হবে না৷ ব়্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল পাকিস্তানের সবশেষ সিরিজটার কথাই ভাবুন না! তিন ম্যাচের সিরিজটি নিজের দেশেই খেলেছে সরফরাজের দল৷ প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা৷ নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকায় তাদের প্রথম একাদশের অনেক খেলোয়াড়ই পাকিস্তানে যাননি৷ ফলে দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে মাঠে নেমেছিল শ্রীলঙ্কা৷ তারপর? সবাই ভেবেছিলেন, দুর্বল প্রতিপক্ষকে নিজের মাঠে নাস্তানাবুদ করে ছাড়বে পাকিস্তান৷ কিন্তু ফল হয়েছে উল্টো৷ পাকিস্তানকেই ৩-০ তে উড়িয়ে হাসিমুখে দেশে ফিরেছেন ভানিদু হাসারাঙ্গারা৷

এত খেলোয়াড় থাকতে শুধু ভানিদু হাসারাঙ্গার নামটা কেন বললাম? বলেছি, কারণ, পাকিস্তান-বধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে এই ভানুদিই হয়েছেন ম্যান অব দ্য সিরিজ৷ মনে রাখতে হবে, পাকিস্তান সিরিজের তিনটিসহ এ পর্যন্ত মাত্র সাতটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্ট খেলেছেন ভানুদি৷

আরো মনে রাখতে হবে, ‘‘দলে মালিঙ্গা নেই, অমুক নেই, তমুক নেই'' আহাজারি করে করে কিন্তু সময় পার করেনি শ্রীলঙ্কা৷ অনেকের না থাকাটাকেই সবাই দেখেছে খুব বড় সুযোগ হিসেবে৷ তার ফলাফলটা দেখুন৷

প্রথম ম্যাচে ৩৮ বলে ৫৭ রান করে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছেন ক্যারিয়ারের ১৮তম ম্যাচ খেলা দানুশকা গুনাতিলাকা৷ তৃতীয় ম্যাচে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৮ রানের (অপরাজিত) ইনিংস খেলেছেন মাত্র দুটি টি-টোয়েন্টি খেলা ওশাদা ফার্নান্দো৷ আর প্লেয়ার অব দ্য হয়েছেন মাত্র চার ম্যাচের অভিজ্ঞতা নিয়ে সিরিজ শুরু করা ভানুদি৷ প্রতিষ্ঠিতরা নেই বলে শ্রীলঙ্কার কিন্তু বিশ্বসেরা পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতেও কোনো অসুবিধা হয়নি৷

তাহলে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ কেন পারবে না? না পারার কোনো কারণ নেই৷ ম্যাচের আগে মনের বাঘে খেয়ে ফেললেই শুধু সমস্যা৷

ভারতের বিপক্ষে অনেকবারই তীরে গিয়ে তরী ডুবেছে বাংলাদেশের৷ এবার সেই গেরোটা খুলতে হবে৷ সাকিব, তামিমের অভাব পূরণ করতে হবে সামষ্টিক পারফর্ম্যান্সে৷নিজেদের শক্তি, সামর্থ্যের ওপর আস্থা রেখে মাঠে খেলতে হবে পজিটিভ ক্রিকেট৷

টেস্ট ক্রিকেটে বরাবরই বাংলাদেশ একটু দুর্বল৷ এতদিন দেশের মাটিতে দুর্বলতাটা ঢাকা যেতো৷ আফগানিস্তানের বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচে তা-ও সম্ভব হয়নি৷ সাকিবের উপস্থিতিও পারেনি রশিদ খানদের জয় ঠেকাতে৷ সুতরাং ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে খুব ভালো করা একটু কঠিন৷ তবে ব্যাটসম্যানরা খেলাটা যে পাঁচদিনের, সেটা মনে রেখে সেশন ধরে ধরে ব্যাট করলে সেখানেও কিছু অর্জনের আশা থাকবেই৷ ভালো একটা স্কোর পেলে বোলাররাও কিছু একটা করে দেখার প্রেরণা পাবেন৷ হোক না, টেস্ট ক্রিকেটে এ মুহূর্তে এক নাম্বার দল ভারত৷ মাশরাফির ‘ধরে দেবানে' মানসিকতা নিয়ে খেললে ভারত থেকে অন্তত মাথা নীচু করে ফিরবে না মাহমুদুল্লাহ আর মুমিনুলের দল৷

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ