আজকের শিরোনাম :

এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপ মাতানো পাঁচ তরুণ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০১৯, ১৭:৩৯

ক্রিস গেইল, শোয়েব মালিক, মাশরাফী, ধোনিদের যেমন শেষ বিশ্বকাপ ছিল এটা, ঠিক তেমনি কিছু ক্রিকেটার এসেছেন যারা আরো বিশ্বকাপ মাতানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছেন নিজেদের খেলা দিয়েই।

শাহীন শাহ আফ্রিদি

পাকিস্তান আর আফ্রিদি বলতে ক্রিকেট বিশ্ব যাকে সাধারণত বোঝেন তিনি শহীদ আফ্রিদি, নামে আর খেলাতেও তার জায়গা নিয়ে নেয়ার জন্য এসেছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি।

খাইবারের এই পেস বোলারের বয়স ১৯ বছরের একটু বেশি।

বিশ্বকাপে পাকিস্তানের শুরুর দিককার ম্যাচগুলোতে তিনি সুযোগ পাননি একাদশে।

প্রথমবার সুযোগ পান অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচে ৭০ রান দেন ২ উইকেটে। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১ উইকেট নেন ৫৪ রানে।

পাকিস্তান তখনো সেরা চারের লড়াইয়ে অনেক পিছিয়ে ছিল, সেমিফাইনালে ওঠাতে না পারলেও আশা শেষ পর্যন্ত টিকিয়ে রাখেন আফ্রিদিই।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৮ রানে ৩ উইকেট, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪৭ রানে ৪ উইকেট এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৫ রানে ৬টি উইকেট নেন তিনি।

বিশ্বকাপে মাত্র ৫ ম্যাচ খেলেই ১৬ উইকেট নেন তিনি, মাত্র ১৩.৭৮ গড়ে।

জোফরা আর্চার

এই বিশ্বকাপে আর্চার খেলেছেন ১০টি ওয়ানডে ম্যাচ, তার মোট ম্যাচ সংখ্যা ১৩টি, অর্থাৎ মাত্র ৩টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে দলে ঢোকেন তিনি।

প্রাথমিকভাবে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ছিলেন না জোফরা আর্চার।

পরবর্তীতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে যে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয় সেই ম্যাচে দুর্দান্ত একটি স্পেল করেন তিনি।

আরো পড়তে পারেন: ইংল্যান্ড দলে কিভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জোফরা আর্চার

সেখানেই টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থা অর্জন করেন এই ২৪ বছর বয়সী পেসার। ১৩ ওয়ানডেতে তার উইকেট সংখ্যা ২২, ইকোনমি রেট পাঁচের বেশ নিচে।

বিশ্বকাপে ১১ ম্যাচ খেলে ২০ উইকেট নিয়েছেন তিনি। সেমিফাইনালে তার গতি ও সুইংয়ের কাছে হার মেনেছে অস্ট্রেলিয়ান টপ অর্ডার।

মূলত প্রথম দশ ওভারে ক্রিস ওকস ও জোফরা আর্চারের স্পেলেই হেরে যায় অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপেও অন্যতম সেরা ইকোনমি রেট আর্চারের।

শুধুমাত্র পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গ্রুপপর্বের বিপক্ষে ম্যাচ দুটি ছাড়া বিশ্বকাপে প্রতিটি ম্যাচেই সফল এই তরুণ পেসার।

ফা ইনাল ম্যাচেও আর্চার নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন, সুপার ওভারে ১৫ রান দেন তিনি, ইংল্যান্ড বাউন্ডারির হিসেবে এগিয়ে থেকে বিশ্বকাপ জিতে নেয়।

মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন

একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডারের জন্য বাংলাদেশের নির্বাচকরা প্রায়ই আফসোস করে থাকেন। এই আসা-যাওয়ার তালিকায় আছে অনেক নাম।

ফরহাদ রেজা, জিয়াউর রহমানরা তো আছেনই। কখনোবা অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা নিজে মিটিয়েছেন বোলিং অলরাউন্ডারের অভাব।

সাইফুদ্দিন কি বাংলাদেশের পান্ডিয়া-স্টোকস হয়ে উঠতে পারবেন?

মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ২০১৭ সালে বাংলাদেশের জাতীয় দলের হয়ে প্রথমবারের মতো খেলেছেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের সম্প্রতি বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছেন তিনি।

এই বিশ্বকাপে সাইফুদ্দিন যখন প্রয়োজন হয়েছে তখনই দলের কাজে এসেছেন। উইকেট নেয়া কিংবা ডেথ ওভার বোলিং।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, অর্থাৎ ভারতের বিপক্ষে সাইফুদ্দিন ৫১ রানের একটি ইনিংস খেলে আশা টিকিয়ে রেখেছিলেন।

৭ ম্যাচ বল করে ১৩ উইকেট নিয়েছেন ফেনী থেকে উঠে আসা এই অলরাউন্ডার, তবে ইকোনমি রেটটা বেশি, ৭.১৮।

নিকোলাস পুরান

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট দলে চমক হিসেবেই এসেছিলেন নিকোলাস পুরান। মূলত তার পরিচয় টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট, ওয়ানডেতেও কাজটা ভালো করতে পারেন যার প্রমাণ দিয়েছেন এই বিশ্বকাপে।

বিশ্বকাপের আগে মাত্র একটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেন তিনি। এই বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচে ৩৬৭ রান তোলেন, ৫২.৪২ গড়ে। বিশ্বকাপে পুরানের স্ট্রাইক রেট ছিল ১০০।

ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে পুরান স্ট্রাইক রেটের জন্যই পরিচিত, যা প্রায় ১৪৪।

এই বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার সাথে সেঞ্চুরি, ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তানের সাথে পুরান ফিফটি তুলে নিয়েছেন।

ইমাম উল হক

ইমাম উল হক পাকিস্তানের ক্রিকেটে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন শুরু থেকেই। তার চাচা ইনজামাম উল হক, এখন পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচক।

তাই ইমামের ওপর প্রত্যাশার চাপটাও বেশি।

ইমাম এখন পর্যন্ত সেই চাপ সামলেছেন দারুণভাবেই। ২০১৭ সালে অভিষিক্ত ইমাম ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডেতেই শ্রীলংকার বিপক্ষে ১০০ রানের একটি ইনিংস খেলেন।

এই বিশ্বকাপে শুরুটা ভালো না হলেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে ব্যাটে রান এসেছে তার ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে চল্লিশোর্ধ্ব ইনিংস, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফিফটি ও বাংলাদেশের সাথে সেঞ্চুরি করেন ইমাম।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ