আজকের শিরোনাম :

জার্সি নিয়ে অন্তরালে কী ঘটেছিল?

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ মে ২০১৯, ১৭:৫০

"লাল রঙটা থাকায় ব্যাপারটা ভাল্লাগছে, এতোদিন যেহেতু আমরা লাল-সবুজ জার্সি দেখে অভ্যস্ত, হঠাৎ লাল রঙ না থাকায় চোখের প্রশান্তি পাচ্ছিলাম না," বলছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ফারহানা নাসরিন।

তবে অনেকেই যেমনটা বলছিলেন, পাকিস্তানের জার্সির সাথে বাংলাদেশের বিশ্বকাপের প্রথম জার্সি মিলে গেছে সেই ব্যাপারটায় দ্বিমত পোষণ করেছেন তিনি।

"সবাই যেটা বলছে যে পাকিস্তানি জার্সির সাথে মিলে গেছে আমার কাছে সেটা মনে হয়নি, কিন্তু ক্রিকেটাররা যেহেতু দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন, তাই জার্সিও দেশের প্রতিনিধিত্ব করে।"

তবে জার্সি নিয়ে যে বিতর্ক হলো সেটাকে হাস্যকর বলেছেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শামিমা রহমান শাম্মি।

"আসলে বিষয়টি বুঝতেই সময় লেগেছে, জার্সির কালারের মধ্যে যে দেশপ্রেম লুকিয়ে থাকবে এটা হাস্যকর, আর সবুজ হলেই যে পাকিস্তানের জার্সি হবে সেটাও হাস্যকর," বলছিলেন শাম্মি।

"আমার কোনো পারসোনাল চয়েস ছিল না, প্রথম জার্সিটাও ভালো লেগেছে, এখন যেটা দেখছি সেটাও ভালো লেগেছে।"

ডিজাইনার কী বলছেন?

"আমাদের বলা হয় কোনো ইভেন্টের জন্য ডিজাইন করে দেয়ার জন্য, সেগুলো সাবমিট করি, পছন্দ না করলে আবার ডিজাইন করি, এরপর যেটা পছন্দ করে সেটা আমরা তৈরি করি," বলছিলেন জার্সির ডিজাইনার মেহতাব উদ্দিন আনোয়ার আহমেদ।

এবার মোট ২০টি জার্সির ডিজাইন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাছে জমা দেন তারা।

"জার্সি জমা দেয়ার পরের প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমরা অবগত না, এরপর বাকিটা বিসিবি নির্ধারণ করে ও আমাদের কাছে পাঠায়।"

কী কী হলো জার্সি নিয়ে?

২৯শে এপ্রিল সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে শের-এ-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সি উন্মোচন করা হয়।

কিন্তু এর আগেই জার্সির কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সেখানে অধিকাংশ মন্তব্যেই জার্সির প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে ভক্তরা।

বিবিসি বাংলার ফেসবুক পাতায় জার্সি পরিহিত অবস্থায় ক্রিকেটার সাইফুদ্দিনের ছবি দিয়ে মন্তব্য চাওয়া হলে অনেকেই "বেস্ট অফ লাক পাকিস্তান" লিখেছেন সেখানে।

এর মানে অনেকেই পাকিস্তানের জার্সির সাথে এই জার্সির মিল খুঁজে পেয়ে হতাশ হয়েছেন।

জার্সির যেসব বিষয় ভক্তদের ভালো লাগেনি

ক্সসবুজের আধিক্য, অনেকেই বলছেন লাল রঙ নেই কেনো, বিসিবি অ্যাওয়ে জার্সি পুরোটা লাল রঙের করেছে।

জার্সি পাকিস্তানের মতো বলেছেন অনেকে।

অনেকেই বলেছেন আয়ারল্যান্ডের মতো।

লাল রঙের জার্সিটিকে অনেকে বলছেন জিম্বাবুয়ের মতো।

জার্সিটি অনেকের চোখে সাদামাটা হয়েছে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ২৯শে এপ্রিল জার্সি উন্মোচনের সময় সাংবাদিকদের বলেন জার্সিটা সেখানেই প্রথম দেখেন তিনি এবং ক্রিকেটারদের দেখিয়ে জার্সি নির্ধারণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, "আমি দেখতে চাইলে দেখতে পারবোনা ব্যাপারটা এমন নয়, একটা কমিটি আছে ওরা ডিজাইন দেখে বাছাই করে দিয়ে দেয়।"

"তবে কাল আমি এটা বলার পর জানলাম আমিও দেখিনি, মাশরাফীও দেখেনি, ক্রিকেটাররাও দেখেনি।"

"আমাদের কমিটি জার্সি নির্ধারণ করে পাঠিয়ে দেয় আইসিসিকে, আইসিসি বাংলাদেশ লেখাটা লাল থেকে সাদা করে দেয়ার কথা বলে।"

জার্সি বদলের সিদ্ধান্ত যেভাবে এলো

প্রবল সমালোচনার মুখে বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ জার্সি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় বিসিবি।
সেজন্য তখন আইসিসির নিয়মের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় বোর্ডকে।

মঙ্গলবার সকালে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরি বিবিসি বাংলাকে বলেন, "জার্সিতে কিন্তু শুরুতে লাল রং ছিল, আমরা বাংলাদেশ ও ক্রিকেটারের নামটা লাল রঙে লিখেছিলাম। কিন্তু আইসিসি আমাদের বলে সেটা সাদা রঙে দিতে।''

আইসিসি তাদের ফেসবুক ও টুইটারের কাভার ফটো করেছে বাংলাদেশ দলের এই ছবি দিয়ে।

সব দেশকেই তাদের বিশ্বকাপ জার্সির জন্য আইসিসির অনুমোদন নিতে হয়।

এবার তাই পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও আইসিসির কাছেই আবেদন করতে হয় বিসিবিকে।

ততক্ষণে এই জার্সির ছবি আইসিসি সবখানে ব্যবহার শুরু করেছে।

বিকেলে ব্যক্তিগত কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি বলেন এটিই আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করেছে আইসিসি।

"আমরা যখন মাঠে জার্সি উন্মোচন করতে যাই তখনই বলেছি আমি দেখিনি, এটা ক্রিকেটাররা দেখেছে হয়তো বা দেখেনি, কিন্তু যেহেতু আইসিসি অনুমোদন পেয়েছি আমরা আর এটা নিয়ে দেরি করতে চাইনা," মঙ্গলবার একথা বলেন মি: হাসান। বিবিসি

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ