আজকের শিরোনাম :

ঘরের মাঠে রিয়ালের হার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২১:২৫

টানা ছয় ম্যাচ জিতে দারুণ আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু তাদের এক ঝাঁকুনিতেই আত্মবিশ্বাসের সেই পাল ছিঁড়ে দিয়েছে জিরোনা। অবনমনের খাড়ায় দাঁড়ানো কাতালান ক্লাবের দুর্দান্ত কামব্যাক করা ম্যাচে এগিয়ে গিয়েও রিয়াল হেরেছে ২-১ গোলে। ফলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার সঙ্গে শিরোপা লড়াইতে আবারও পিছিয়ে পড়ল মাদ্রিদের কুলিনরা।

রিয়ালের ঘরের মাঠে প্রথম ১৫ মিনিট গুছিয়ে উঠতে পারেনি কোনো দলই। ১৬ মিনিটে গিয়ে প্রথম আক্রমণটা করে রিয়াল। টনি ক্রজের পাস থেকে জিরোনা পোস্টে শট নেন লুকাস ভাসকুয়েজ। কিন্তু প্রতিপক্ষ ডিফেন্সে প্রতিহত হয় তার প্রথম প্রচেষ্টা।

দুই মিনিট পর ক্রিস্টিয়ান স্টুয়ানির শট আটকে দেন মার্সেলো। এরপর দুই মিনিটে দুটি আক্রমণ করে রিয়াল। কিন্তু ফলাফল শূন্য। ২৩ মিনিটে টনি ক্রজের পাস থেকে নেয়া করিম বেনজেমার শট বিফল হওয়ার এক মিনিট পরই লিড নেয় রিয়াল। ক্রজের সেন্টার থেকেই হেডে গোল করেন কাসেমিরো।

রিয়াল লিড নেয়ার পর মিনিট দশেক খেলায় গতি হারায় দুদল। ৩৮ মিনিটে আবার গোলের সুযোগ সৃষ্টি করে রিয়াল। যদিও অ্যাসেনসিও’র শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এক মিনিট পর ক্রজের ক্রস থেকেই প্রায় গোল করে ফেলেছিলেন মার্সেলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়নি। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণে রিয়ালের ডিফেন্স কাঁপিয়ে দেন জিরোনার অ্যালেক্স গার্নেল। এরপর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ হলেও গোল করতে পারেনি কোনো দল। ফলে ১-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় রিয়াল।

বিরতির পর ৫১ মিনিটে অ্যাসেনসিও’র ক্রস থেকে বেনজেমার জোরালো হেড ক্রসবারের সামান্য উপর দিয়ে চলে যায়। তিন মিনিট পর একই রকম একটি আক্রমণ থেকে রক্ষা পায় রিয়ালও। তবে এক মিনিট পর ম্যাচে পাওয়া সেরা সুযোগ নষ্ট করে জিরোনা।

৫৭ লুকাস ভাসকুয়েজের জায়গায় মাঠে নামেন ভিনিসিয়ার জুনিয়র। এর এক মিনিট পরই আরও বড় বাঁচা বাঁচে রিয়াল। প্রথমে অ্যান্থনিও লুজানোর হেড ঠেকিয়ে দেন থিবো কোর্তায়া। এসময় রিয়ালের বক্সে জটলা পাকিয়ে যাওয়ার পর ফাঁকায় বল পেলেও বাঁ-পায়ের শটে ক্রসবারের অনেক উপর দিয়ে পাঠিয়ে দেন অ্যালেক্স গার্সিয়া।

অবশ্য ৬৪ মিনিটে সমতায় ফেরে জিরোনা। এসময় ক্রিস্টিয়ান স্টুয়ানির হেড বারে লেগে ফিরে আসার পর গোলে জোরালো শট নেন ডগলাস লুইস। কিন্তু সেই বল গোলকিপারের মতোই হাত দিয়ে আটকে দেন সার্জিও রামোস। রিয়ালের অধিনায়ককে হলুদ কার্ড দেখানোর সঙ্গে জিরোনাকে পেনাল্টি দেন রেফারি। স্পটকিক থেকে বল জালে জড়ান উরুগুয়েন ফরোয়ার্ড স্টুয়ানি।

সমতায় ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই খেলায় দুর্দান্ত ছন্দ পেয়ে যায় জিরোনা। এরপর একের পর এক আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত রাখে রিয়ালের ডিফেন্স। ৬৯ মিনিটে জিরোনাকে গোলবঞ্চিত করে গোলবার। ডগলাস লুইসের পাস থেকে পাওয়া বল ৩৫ গজ দূর থেকে শট নেন গার্নেল। কিন্তু তার বুলেট শট কোর্তোয়াকে পরাস্ত করলেও বারে লেগে ফিরে আসে।

এরপর ৭০ ও ৭৪ মিনিটে আরও দুটি সম্ভাবনাময় আক্রমণ করে জিরোনা। দুটি আক্রমণই আটকে দেন স্বাগতিক ডিফেন্ডাররা। তবে ৭৬ মিনিটে আর আটকাতে পারেননি তারা। প্রান্তের কোনা থেকে পাওয়া বল হেডে রিয়ালের জালে জড়ান পোর্তু।

৭৯ মিনিটে রিয়ালকে সমতায় ফেরানোর কাছাকাছি নিয়েছিলেন ভিনিসিয়াস। বেনজেমার কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে ফিলিপে কৌতিনহোর ট্রেডমার্ক করা সেই আড়াআড়ি শট নেন ভিনিসিয়াস। কিন্তু অল্পে সেই শট ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়।

৮৩ মিনিটে তৃতীয় গোলের কাছে গিয়েও ফিরে আসে জিরোনা। অ্যালেক্স গার্নেলের ক্রস থেকে হেড করেছিলেন লুজানো। কিন্তু অনেক কাছ থেকে নেয়া সেই হেড আটকে দেন কোর্তোয়া। ৮৫ মিনিটে গোলে শোধের একটা চেষ্টা করেছিলেন বদলি নামা গ্যারেথ বেল। কিন্তু অতিথিদের ডিফেন্স দেয়ালে আটকে যায় ওয়েলস তারকার সেই চেষ্টা।

অতিরিক্ত সময়সহ ম্যাচের শেষ কয়েক মিনিট রিয়ালকে খেলতে হয় ১০জনকে নিয়ে। ৯০ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক সার্জিও রামোস। জিরোনার ডি-বক্সে উঁচু বল বাইসাইকেল কিক নিতে গিয়ে রামোসের লাথি লাগে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের মুখে। আগেই একটি হলুদ কার্ড দেখেছিলেন রামোস, ফলে এবার তাকে সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে দেন। চলতি লা লিগায় পঞ্চম হলুদ কার্ড দেখে বড় শাস্তির মুখে রিয়াল অধিনায়ক।

বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হওয়ায় ঘরের দর্শকের সামনে ২-১ গোলে হেরেই মাথা নিঁচু করে মাঠ ছাড়তে হয় রিয়ালকে।

এই হারে ২৪ ম্যাচে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে রিয়াল মাদ্রিদ। সমানসংখ্যক ম্যাচে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে এরপরই আছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ২৪ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ