আজকের শিরোনাম :

পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে ফাইনালে বাংলাদেশ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৪৩ | আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৫১

চলতি এশিয়া কাপে অলিখিত সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ পাকিস্তানকে ৩৮ রানে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলার গৌরব অর্জন করলো বাংলাদেশ। 

সেমিতে বাংলাদেশ টসে জিতে ব্যাট করে ৪৮.৫ ওভারে ২৩৯ রান তোলে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৯ রান আসে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে। এছাড়া ৬০ রানের দারুণ ইনিংস আসে মোহাম্মদ মিঠুনের ব্যাট থেকে।

এর আগে দলীয় ১২ রানে তিন উইকেট হারানোর পর মুশফিক-মিঠুনের হার না মানা ১৪৪ রানের জুটি ভাঙেন পাকিস্তানি পেসার হাসান আলী। ইনিংসের ৩৪তম ওভারের চতুর্থ বলে ব্যক্তিগত ৮৪ বলে ব্যক্তিগত ৬০ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।

টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে তিন ওভারের মাথায় দলীয় ১২ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তখনই ব্যাট হাতে পাকি বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়েন মুশফিক ও মিঠুন।

ইনিংসের শুরুতেই কোনও রান না করে সাজঘরে ফিরেন দীর্ঘদিন পর ওয়ানডে দলে ডাক পাওয়া সৌম্য সরকার। আগের ম্যাচে ৪১ রান করা লিটন এদিন ১৬ বলে মাত্র ৬ রান করে জুনায়েদ খানের দ্বিতীয় শিকার হন।

ভরসা ছিল অভিজ্ঞ মুমিনুল হকের ওপর। সাকিবের ইনজুরিতে একাদশে জায়গা পাওয়া মুমিনুলও আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে সরাসরি বোল্ড আউট হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে মুমিনুলের ব্যাট থেকে আসে ৫ বলে ৪ রান।

এরপরে ক্রিজে আসেন ইমরুল কায়েস। তিনি ফিরেন ৯ রানে। এরপর ক্রিজে আসেন মাহমুদউল্লাহ। মুশফিককে নিয়ে দেখেশুনে ব্যাট করনে। তবে ৯৯ রানের মাথায় মুশফিকের আউটই হয়তো আফসোসের কারণ।

তারপরে ক্রিজে আসেন মিরাজ। তিনি করেন ১২ রান। তবে তার আউট ও শেষের দিকে মাহমুদউল্লার বিদায়ে শেষের দিকে বাউন্ডারি না আসায় ২৪০ রানের মাঝেই আটকে যায় দল। 

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুরতেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান।  কাটার বয় মুস্তাফিজুর রহমানের গোলায় পরাস্ত পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপ। দুই ওভার বোলিং করেই দুই উইকেট তুলে নিয়েছেন বিস্ময় এ বালক। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৩ উইকেটে ১৮ রান। মুস্তাফিজ ১ ওভার ৩ বল করে ১৩ রান খরচে দুই উইকেট তুলে নিয়েছেন। অন্যদিকে মেহেদী হাসান মিরাজ ২ ওভার বল করে ৩ রান খরচে এক উইকেট তুলে নেন। 

তবে একপাশ আগলে রেখে ঠিকই বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন ওপেনার ইমাম উল হক। ১০৫ বলে ৮৩ রান করা ইমাম যখন দলীয় ১৬৭ রানে আউট হলেন তখন যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল বাংলাদেশ। মুলত তখনই নির্ধারিত হয় পাকিস্তানের ভাগ্য। শেষটুকু ছিলো শুধুই আনুষ্ঠানিকতা।

এর আগে অবশ্য দুই সেট ব্যাটসম্যান শোয়েব মালিক (৫১ বলে ৩০) আর আসিফ আলিকে (৪৭ বলে ৩১) তুলে নেন যথাক্রমে রুবেল হোসেন এবং মেহেদী।

পুরো ম্যাচে বরাবরের মতো প্রসংসিত হয়েছে টাইগার অধিনায়ক মাশরাফির অধিনায়কত্ব। তবে ফিল্ডিং সমস্যায় ভোগা বাংলাদেশকে আজ দেখা গেছে অন্য রূপে। উইকেটের পিছনে দাঁড়ানো লিটস দাসের দুইট সহজ ক্যাচ বাদ দিলে মাঠে ফিল্ডারদের পারফরম্যান্স মন জয় করেছে সবার।

বিশেষ করে মাত্র ০.৮৬ সেকেন্ড রিফ্লেক্সে শোয়েব মালিকের মাশরাফির ক্যাচ ধরা, ০.১৬ রিফ্লেক্সে আসিফ আলিকে স্ট্যাম্পিং করা বারবার আলোচনায় ছিলো ধারাভাষ্যকারদের।

এছাড়াও শেষ দশ ওভারের পাওয়ার প্লেতে পার্টটাইম বোলার মাহমুদুল্লাহ ও সৌম্য সরকারকে দিয়ে করানো স্পেলে নিজেদের আক্রমণাত্মক ও সাহসী অধিনায়কত্বের আবারও পরিচয় দেন মাশরাফি। আর ১১৬ বলে ৯৯ রান করা মুশফিকুর রহিম নির্বাচিত হন ম্যাচসেরা।

আগামী শুক্রবার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৪৮.৫ ওভারে ২৩৯ (লিটন ৬, সৌম্য ০, মুমিনুল ৫, মুশফিক ৯৯, মিঠুন ৬০, ইমরুল ৯, মাহমুদউল্লাহ ২৫, মিরাজ ১২, মাশরাফি ১৩, রুবেল ১, মুস্তাফিজ ০*; জুনাইদ ৪/১৯, আফ্রিদি ২/৪৭, হাসান ২/৬০, নওয়াজ ০/৩৯, মালিক ০/১৪, শাদাব ১/৫২)।

পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ২০২/৯ (ফখর ১, ইমাম ৮৩, বাবর ১, সরফরাজ ১০, মালিক ৩০, শাদাব ৪, আসিফ ৩১, নওয়াজ ৮, হাসান ৮, আফ্রিদি ১৪*, জুনাইদ ৩*; মিরাজ ২/২৭, মুস্তাফিজ ৪/৪৩, মাশরাফি ০/৩৩, রুবেল ১/৩৮, মাহমুদউল্লাহ ১/৩৮, সৌম্য ১/১৯)।

এবিএন/মাইকেল/জসিম/এমসি

এই বিভাগের আরো সংবাদ