আজকের শিরোনাম :

লাল-সবুজের জার্সিতে আবারও ভক্তদের হাসি ফুটাতে চান আশরাফুল

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০১৮, ০১:১৩

ঢাকা, ২৫ আগস্ট, এবিনিউজ : ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে একে একে পাঁচটি বছর হারিয়ে গেছে। লাল-সবুজের জার্সিটা হয়তো ধূলি-বালিতে মলিন হয়ে আছে। তবে ব্যাট-প্যাডে এতটুকুও মরীচা ধরতে দেননি জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুল। তারই প্রমাণ গেল বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে দিয়েছেন বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ এই সেঞ্চুরিয়ান। বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘরোয়া ক্রিকেটের এক মৌসুমে ৫টি সেঞ্চুরির রেকর্ডতো কেবল আশরাফুলেরই। গত ১৩ আগস্ট ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে জাতীয় দল ও বিপিএলসহ আন্তর্জাতিক আসরে খেলার অনুমতি পেয়েছেন যিনি, তিনি কি পারবেন আবারও জাতীয় দলে জায়গা করে নিতে, এমন প্রশ্ন আশরাফুল ভ্ক্তদের। আশরাফুলেরও চোখে-মুখেও কেবল একটিই স্বপ্ন-আর তা হলো লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়িয়ে টাইগার ভক্তদের হাসি উপহার দেওয়া।

২০০১ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে অভিষেক হয় আশরাফুলের। কিন্তু ২০১৩ সালে এক ঝড়ই সবকিছু উলট পালট করে দেয়। ম্যাচ গড়াপেটায় জড়িয়ে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন তিনি। ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট ঘরোয়া লিগে খেলার অনুমতি মিললেও এতদিন জাতীয় দল আর বিপিএলে নিষিদ্ধ ছিলেন আশরাফুল। আবারও ফেরার সুযোগ পেয়ে দারুণ খুশি আশরাফুল। নিজের অনুভুতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন’ খুব বাজে সময় কাটিয়েছি। একজন ক্রিকেটার হিসেবে মাঠের বাইরে থাকা কতটা অপমানের-কষ্টের তা মুখের ভাষায় বলা সম্ভব না।

আশরাফুল আবারও আশার ফুল ফোটাতে চান জানিয়ে বলেন, জাতীয় দলে ফেরা আমার জন্য সহজ হবে না। তবে সুযোগ পেলেই আমি নিজেকে প্রমাণ করতে পারবো। তিনি আরও বলেন, ‘আবারও বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারলে সেটা আমার জন্য সবচেয়ে বড় অর্জন হবে। আমি ভালো মানুষ হিসেবে আবারও ফিরতে চাই। খেলতে চাই জাতীয় দলের জার্সি পরে।

গত দুই বছরে তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরে গেছে। প্রথম বছর তেমন ভাল না কাটলেও ২০১৭-১৮ মৌসুমে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের হয়ে পাঁচটি সেঞ্চুরি পেয়েছেন আশরাফুল। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের এক আসরে তিনি মাত্র দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে এই কীর্তি গড়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরার পর ২৩টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে ৪৭.৬৩ গড়ে রান তুলেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের জুনে বিপিএলের দুর্নীতি বিরোধী ট্রাইব্যুনাল আশরাফুলের উপর ৮ বছরের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ডিসিপ্লিনারি প্যানেল শাস্তি কমিয়ে পাঁচ বছরে নামিয়ে আনে। তবে বিসিবি ও আইসিসি শাস্তি কমানোর বিরোধিতা করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাঁচ বছরই স্থির হয়।

অস্ট্রেলিয়ার মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে প্রথম জয়। ব্যাট উঁচিয়ে সেঞ্চুরির উদযাপন প্রথম কোনো বাংলাদেশির। আর সেটাতে এসেছিল খোদ আশরাফুলের ব্যাট থেকেই। ২০০৫ সালের ১৮ জানুয়ারি পাওয়া সেই জয়টির নায়কও ছিলেন তাই মোহাম্মদ আশরাফুল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ই নয়, আরও অনেক সাফল্যের অংশীদার ছিলেন আশরাফুল। একই সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে যাওয়া ম্যাচে ৫২ বলে ৯৪ রানের এক অনবদ্য ইনিংসও খেলেন আশরাফুল যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দ্রুত গতির বেশি ব্যাটিং রেট।

এর আগে ২০০১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর শ্রীলংকার বিপক্ষে অভিষেক টেস্টেই ক্রিকেট বিশ্বে আলোড়ন তৈরি করেন ‘এসস্কু‘ শটের জনক আশরাফুল। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়িয়ে আবারও দর্শক মাতাবেন, এমন স্বপ্ন আশরাফুলের চোখে-মুখে। আবারও হেসে উঠবে আশরাফুলের ব্যাট। আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠবে টাইগাররা, এমন স্বপ্ন আশরাফুলের। কোটি দর্শকও স্বপ্ন দেখছেন, আবার ফিরবেন তাদের স্বপ্নের নায়ক আশরাফুল। দর্শকদের প্রার্থনা কি শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখবে, তা কেবল বিসিবি-ই বলতে পারে।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ