আজকের শিরোনাম :

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন : হেরে গেলে কি ফলাফল মেনে নেবেন ট্রাম্প?

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:০০

‘আপনি কি অঙ্গীকার করছেন যে নির্বাচনের পরে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর হবে?’

আমেরিকার মত দেশের রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টকে এ প্রশ্ন করলে তার একটাই উত্তর পতে পারে বলেই মনে করা হয়।

তা হলো: ‘হ্যাঁ’।

আসলে নির্বাচনের পাঁচ সপ্তাহ আগে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এমন প্রশ্ন করতেও শোনা যায় না। কারণ এর যে অন্য কোন উত্তর হতে পারে সেটাও অকল্পনীয়।

ভোটের পর পরাজিত পক্ষ ফলাফল মেনে নিচ্ছে না- এমন ঘটনা শুধু তৃতীয় বিশ্বের দেশেই হয়তো ঘটতে পারে বলে মনে করা হয়।

কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হবার পর সেখানে এমন অনেক কিছুই ঘটে গেছে যা দেশটির ইতিহাসে প্রায় নজিরবিহীন।

নির্বাচনের মাত্র পাঁচ-ছয় সপ্তাহ বাকি থাকতে ডোনাল্ড ট্রাম্প এমনি এক বিস্ফোরক কথা বলেছেন।

বুধবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন, নির্বাচনে যদি তিনি পরাজিত হন তাহলে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে- এমন নিশ্চয়তা তিনি দিচ্ছেন কিনা।

ট্রাম্প বললেন, ‘দেখা যাক কী হয়’, তার পর তিনি ডাকযোগে দেয়া ভোটের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে তার সন্দেহের কথা পুনর্ব্যক্ত করলেন।

তার পর বললেন, ‘খোলাখুলি বলতে গেলে, আপনারা দেখবেন যে হস্তান্তর নয়, অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ধারাবাহিকতা থাকবে।’

অর্থাৎ তিনিই প্রেসিডেন্ট থাকবেন, ক্ষমতা হস্তান্তরের দরকার হবে না।

তার আগে রোববার ফক্স নিউজের সাথে আরেক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক ক্রিস ওয়ালেস জানতে চেয়েছিলেন, ট্রাম্প ২০২০ নির্বাচনের ফল মেনে নেবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন কিনা।

তিনি জবাব দিলেন, আমি এক্ষুণি ‘হ্যাঁ’ বলছি না।

এর পর জোর আলোচনা-বিতর্ক শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ।

সবার মনে প্রশ্ন: নভেম্বরের ৩ তারিখ যুক্তরাষ্ট্রে যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে তাতে মি ট্রাম্প হেরে গেলে - তিনি কি আদৌ ফলাফল মেনে নেবেন? এবং ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবেন ? আরো বড় প্রশ্ন: নির্বাচনের ফল মেনে না নিলে কী হবে?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আধুনিক যুগে সব প্রেসিডেন্টই নির্বাচনের ফল বিপক্ষে গেলে হার স্বীকার করে নিয়েছেন।

কিন্তুট্রাম্প যদি নির্বাচনের ফল মানতে অস্বীকার করেন, তা হবে সাম্প্রতিককালের এক অভূতপূর্ব ঘটনা এবং সেক্ষেত্রে কি ঘটবে তা স্পষ্ট নয়।

তার প্রতিপক্ষ ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন বলেছেন, সে ক্ষেত্রে হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্পকে সরিয়ে দিতে সামরিক বাহিনী ডাকা হতে পারে।

রিপাব্লিকান সেনেটর মিট রমনি বুধবার টুইট করেন, ‘শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর গণতন্ত্রের মৌলিক ব্যাপার, এটা না থাকার মানে হচ্ছে বেলারুস হয়ে যাওয়া।’

সেনেটে রিপাব্লিকান নেতা মিচ ম্যাককনেল বলেন, নির্বাচনে যিনি জিতবেন, জানুয়ারি মাসে তার অভিষেক হবে। যুক্তরাষ্ট্রে ১৭৯২ সাল থেকে যেভাবে সুশৃঙ্খলভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর হচ্ছে - এবারও তাই হবে।

আরেকজন সিনিয়র রিপাব্লিকান লিজ চেনি বলেন, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্ত সংবিধানের অংশ এবং প্রজাতন্ত্রের টিকে থাকার জন্য আবশ্যিক।

ট্রাম্পের একজন মিত্র সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহামও বলেন, যদি সুপ্রিম কোর্ট জো বাইডেনের পক্ষে রায় দেয় - তাহলেও রিপাবলিকানরা নিবাচনের ফল মেনে নেবে।
সামরিক বাহিনী কি হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্পকে বের করে দেবে?

কথাটা বলেছেন ট্রাম্পের ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন। সিএনএন-এ দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, তিনি উদ্বিগ্ন যে ট্রাম্প হয়তো নির্বাচনের ফল ‘চুরি করে নিতে পারেন’ বা ভোটে হারলেও হোয়াইট হাউস ছাড়তে অস্বীকার করবেন।

তিনি আরও বলেন, সে রকম কিছু যদি ঘটে তাহলে তিনি নিশ্চিত যে সামরিক বাহিনী এসে ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউস থেকে বের করে দেবে।

পরে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কেলি ম্যাকএনানি বাইডেনের এ উক্তির সমালোচনা করেন। তা ছাড়া ট্রাম্পের মুখপাত্রও বলেছেন, প্রেসিডেন্ট অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেবেন।

তবে বিতর্ক থামছে না। এতে গলা মিলিয়েছেন আইন বিশেষজ্ঞ এবং ম্যাসাচুসেটসএর এ্যামহার্স্ট কলেজের অধ্যাপক লরেন্স ডগলাস।

তার সন্দেহ, নির্বাচনে ট্রাম্প হেরে গেলে - বিশেষ করে ব্যবধান সামান্য হলে - তিনি ফলাফল প্রত্যাখ্যান করবেন।

লরেন্স ডগলাস এ নিয়ে একটি বই লিখেছেন যা আগস্ট মাসে প্রকাশিত হয়েছে। ‘উইল হি গো? ট্রাম্প এ্যান্ড দ্য লুমিং ইলেকশন মেল্টডাউন ইন ২০২০’ নামের বইটিতে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন ও সংবিধান পরীক্ষা করে সবিস্তারে তুলে ধরেছেন - ট্রাম্প নির্বাচনের ফলাফল মানতে অস্বীকার করলে কী কী হতে পারে।

ডগলাস বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার পদ্ধতি এ ধরনের সম্ভাবনার জন্য প্রস্তুত নয়। তার কথা- ‘মার্কিন সংবিধান শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করে না বরং ধরেই নেয় যে এমনটাই হবে।’

২০০০ সালের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট আল গোর পপুলার ভোট বেশি পেলেও সাংবিধানিক সংকট এড়াতে পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছিলেন। এ ছাড়া ১৮০০ ও ১৮৭৬ সালেও নির্বাচনের ফলাফল অস্পষ্ট হলে সংবিধান ও সদিচ্ছার ভিত্তিতে আপোষরফা হয়েছিল, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর ঘটেছিল।

নির্বাচনে স্পষ্ট ফলাফল না এলে কী ঘটতে পারে?
নিউ ইয়র্কার পত্রিকার এক রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে লরেন্স ডগলাসের বই থেকে তিনটি ‘সম্ভাব্য বিপর্যয়ের’ চিত্র ।

বিপর্যয় ১
জো বাইডেনের চেয়ে ৫০ লক্ষ পপুলার ভোট কম পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তিনি আবার ইলেকটোরাল ভোট বেশি পেয়েছেন। কারণ যদিও একেকটি অঙ্গরাজ্যে যে প্রার্থী পপুলার ভোট বেশি পান তিনিই ওই রাজ্যের সবগুলো ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে যান, কিন্তু শেষ মুহূর্তে পেনসিলভানিয়ার দুজন রিপাবলিকান ইলেকটর জনমতের বিরুদ্ধে গিয়ে ভোট দিয়েছেন। এর ফলে বিজয়ী নির্ধারণে চরম গোলযোগ বেধে যেতে পারে।

বিপর্যয় ২
ডগলাসের দ্বিতীয় সম্ভাব্য চিত্রে বলা হচ্ছে, হ্যাকাররা ডেট্রয়েট শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। শহর অন্ধকার, ভোট গণনা বন্ধ।

মিশিগান অঙ্গরাজ্যের সাথে সাথে পুরো দেশেই ভোটের ফল কি হবে তা অনিশ্চিত।

শহরের মেয়র ও ডেমোক্র্যাটরা পুননির্বাচন দাবি করায়: দ্বিতীয়বার ভোট গ্রহণ হলো। সুপ্রিম কোর্ট সে ফলাফলকে স্বীকৃতি দিল কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প ফল স্বীকার করলেন না।

বিপর্যয় ৩
তৃতীয় সম্ভাব্য চিত্রে ডগলাস বলছেন, এমন হলো যে নির্বাচনের দিন ফক্স নিউজ পূর্বাভাস দিলো  ট্রাম্প জয়ী হতে চলেছেন। কিন্তু নজিরবিহীন রকমের বিপুল সংখ্যক ভোট ডাকযোগে ভোট দিল। তাদের ভোট গণনার পর দেখা গেল, আমেরিকানরা জো বাইডেনকেই বেছে নিয়েছে।

তবে ভোটকেন্দ্রে না আসা ভোটারদের ব্যালট গণনার প্রক্রিয়া এতই জটিল ও সময়সাপেক্ষ যে কিছু রাজ্যে ফল জমা দেবার সময়সীমা পার হয়ে গেল।

ফলে তিনটি রাজ্য থেকে দু-রকম রিপোর্ট এলো- যার একটিতে সময়সীমা মানা হয়েছে, অন্যটিতে হয়নি। প্রথম রিপোর্ট বলছে ট্রাম্প জিতেছেন, দ্বিতীয়টি বলছে - বাইডেন জিতেছেন।

এগুলো কোন অলীক কল্পনা নয়
লরেন্স ডগলাস ব্রিটেনের দৈনিক দি গার্ডিয়ানে এক নিবন্ধে এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন।

তিনি বলছেন, তিনি তার এই কল্পিত চিত্রে যেসব ঘটনা তুলে ধরেছেন - তার সবগুলোই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোন না কোন সময় ঘটেছে। ইলেকটররা পপুলার ভোটের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। রাশিয়া আমেরিকান নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে কম্পিউটার হ্যাক করেছে, অন্য কিছু দেশে ডিজিটাল অবকাঠামো ভেঙে দিয়েছে। কোন কোন অঙ্গরাজ্যে পুনর্বার ভোট গ্রহণ হয়েছে।

একই রাজ্য থেকে পরস্পরবিরোধী নির্বাচনী ফল আসা- সেটাও হয়েছে। ১৮৭৬ সালের নির্বাচনে তিনটি অঙ্গরাজ্যে এমন হয়েছিল।

দুই প্রার্থী ডেমোক্র্যাট হেইস ও রিপাবলিকান টিলডেন কেউই ২৭০এর কম ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছিলেন। এখনকার মত তখনও সেনেট ছিল রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রণে, আর কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে ছিল ডেমোক্র্যাট সংখ্যাগরিষ্ঠতা। কে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হবেন তা নিয়ে দুই পক্ষে কয়েক মাস ধরে তীব্র বিবাদ চলেছিল। তখন আমেরিকার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ছিলেন ইউলিসিস এস গ্রান্ট । সংকট এড়ানোর জন্য তিনি নাকি সামরিক শাসন জারি করার কথাও ভেবেছিলেন।

শেষ পর্যন্ত এক আপোষ ফর্মুলায় পরাজয় স্বীকার করে নেন হেইস, প্রেসিডেন্ট হন টিলডেন।

এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে একটা আইন করা হয়েছিল যে একটি অঙ্গরাজ্য কখনো একটির বেশি নির্বাচনী রিপোর্ট দিতে পারবে না। কিন্তু এখন আইন বিশেষজ্ঞরা উপলব্ধি করছেন যে ১৮৮৭ সালের ওই আইনের অনেক ফাঁক-ফোকর রয়ে গেছে।

ডগলাস যে চিত্রগুলো কল্পনা করেছেন - তেমন কিছু যদি সত্যি ঘটে তাহলে- তাহলে প্রতিটি ক্ষেত্রেই ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে প্রেসিডেন্ট মনে করতে পারেন, যদিও জো বাইডেন মনে করতে পারেন তিনিই নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।

এ নিয়ে কংগ্রেসের দুই কক্ষ -যার একটি ডেমোক্র্যাট ও অন্যটি রিপাবরিকান নিয়ন্ত্রিত- তাদের মধ্যে তীব্র বিবাদ এবং পরস্পরবিরোধী অবস্থান তৈরি হতে পারে। এ অবস্থায় দুপক্ষই সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন, বলছেন ডগলাস। কিন্তু তাতেও সমাধান হবে না কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনের বিষয়ে কোন বিতর্ক একবার কংগ্রেসের হাতে গেলে তা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে আদালত কোন ভুমিকা রাখতে পারে না - এবং ১৮৮৭ সালের সেই আইনে এর সমর্থন আছে।

তখন আদালত সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে তারা এতে হস্তক্ষেপ করবে না।

ডগলাস বলছেন, এ অবস্থায় দেখা গেল, কংগ্রেসে অচলাবস্থা তৈরি হলো। কোন পক্ষই পরাজয় স্বীকার করছে না। সারা দেশে বিক্ষোভ শুরু হলো।

ট্রাম্প তখন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাবলে তার ‘বিজয়’ সুরক্ষিত করার জন্য সামরিক বাহিনী ডাকতে পারেন।

এক দেশে তিন প্রেসিডেন্ট?
সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কে জিতেছেন তা স্পষ্ট না হলে, কংগ্রেসের স্পিকার ভারপ্রাপ্ত পেসিডেন্ট হবেন।

ডগলাস মনে করছেন, সে ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি হয়ত ন্যান্সি পেলোসি শপথ গ্রহণ করাবেন, আবার অন্যদিকে আরেক বিচারপতি ক্ল্যারেন্স টমাস শপথ গ্রহণ করাবেন ট্রাম্পকে।


এমনও হতে পারে যে কেউই শপথ নিলেন না এবং ট্রাম্প, বাইডেন ও পেলোসি - এরা সবাই প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব এবং অধিকার দাবি করতে পারেন।

ডগলাস লিখছেন এর মধ্যে মি. ট্রাম্প হয়তো এমন সব টুইট করা শুরু করলেন যা সহিংসতা উস্কে দিতে পারে।

তিনি বলছেন, ‘মনে রাখতে হবে এদেশে প্রচুর বন্দুক আছে এবং এর অধিকাংশ আছে প্রেসিডেন্টের সবচেয়ে উগ্র সমর্থকদের হাতে।’

একটা সমাধান হতে পারে বিপুল ভোটে ট্রাম্পের পরাজয়
তিনি বলছেন, এ বিপর্যয় এড়ানো যেতে পারে যদি ট্রাম্প বিপুল ভোটে পরাজিত হন।

বিপুল ব্যবধানে স্পষ্ট পরাজয় হলে হয়তো তিনি তা মেনে নেবেন - তবে তিনি এর জন্য ‘ডিপ স্টেট’ এবং অনিবন্ধিত অভিবাসীদের দায়ী করতে পারেন। কিন্তু যদি দেখা যায় যে জয়পরাজয় নির্ধারণে মূল ভূমিকা পালন করছে পোস্টাল ভোট - তাহলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকুন- বলছেন লরেন্স ডগলাস।
সব সমস্যার মূলে পোস্টাল ভোট নিয়ে সন্দেহ

নির্বাচনের আগে সবশেষ জনমত জরিপগুলোতে দেখা যাচ্ছে সাধারণভাবে জো বাইডেন মোটামুটি ৮ পয়েন্টের ব্যবধানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন।

কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট শুধু জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন না। তাকে জিততে হবে ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজের ভোট। সেই হিসেব নিকেশে দেখা যায় - ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে কে জিতবেন, তা বলা কঠিন।

কারণ মনে করা হচ্ছে বাইডেন ২৫২টি এবং ট্রাম্প ২৪০টি ইলেকটোরাল ভোট পাবেন কিন্তু তাদের কোন একজনকে ২৭০টি ভোট পেতে হলে মিশিগান পেনসিলভানিয়া এবং উইসকনসিন রাজ্যের মোট ৪৬টি ইলেকটোরাল ভোট জিততে হবে। কিন্তু এই তিনটি রাজ্যের জনমত জরিপে এগিয়ে আছেন ট্রাম্প - তবে সামান্য ব্যবধানে।

ফলে ৩ নভেম্বরের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তীব্র। তার ওপর এবার করোনাভাইরাসের কারণে ডাকযোগে ভোট দেয়া বেড়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ডাকযোগে দেয়া ভোটের ব্য্পাারে দীর্ঘদিন ধরেই সন্দেহ প্রকাশ করে আসছেন মি. ট্রাম্প।

বিগত ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন- যাতে ট্রাম্প জয়ী হন- তাতে প্রায় এক চতুর্থাংশ ভোটার ডাকযোগে ভোট দিয়েছিলেন। সেবারও পোস্টাল ভোট নিয়ে জালিয়াতির আশংকা প্রকাশ করে ফলাফল মেনে না নেয়ার কথা বলেছিলেন ট্রাম্প।

ডাকযোগে দেয়া ভোটে কি সত্যি জালিয়াতি হয়?
পোস্টাল ভোটে জালিয়াতি কতটা হয় - তা নিয়ে বহু গবেষণা-জরিপ হয়েছে। কিন্তু তাতে দেখা গেছে এর পরিমাণ অতি নগণ্য। ২০১৭ সালে ব্রেনান সেন্টারের এক জরিপে বলা হয়, সার্বিকভাবে পোস্টাল ভোটে জালিয়াতির সর্বোচ্চ পরিমাণ ০.০০০০৯ শতাংশ।

ওয়াশিংটন পোস্টের এক জরিপে বলা হয় ২০১৬ সালে প্রমাণিত জাল পোস্টাল ভোটের ঘটনা ছিল মাত্র একটি। আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা যায়, ২০০০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত নির্ব্চানগুলোয়- যাতে কোটি কোটি ভোটের মধ্যে পোস্টাল জাল ভোটের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৯১টি।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ