আজকের শিরোনাম :

করোনার বিস্তারে আতঙ্কে রোহিঙ্গা, সতর্কতামূলক কর্মসূচি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২০, ১৯:৫০

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবং বাংলাদেশে এ রোগের বিস্তারের কারণে  বাংলাদেশের নাগরিকরা ছাড়াও কক্সবাজারে আশ্রিত প্রায় ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার মধ্যেও আতঙ্কে ছড়িয়ে পড়েছে।

কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে ঠাসাঠাসি করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসকারী এসব উদ্বাস্তু মানুষদের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিলে তা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। 

রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহে যেসব যেসব বিদেশি আগে থেকে কাজ করে আসছেন তারা ব্যতিত নতুন কোন বিদেশিকে যাতায়াত করতে দেয়া হচ্ছে না।

এদিকে, সরকার ১৭ মার্চ থেকে দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত সতর্কতা জারির পর থেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে আশ্রয়শিবিরের বসবাসকারী রোহিঙ্গারা।

এ অবস্থায়, নিজেদের অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে কুতুপালং ক্যাম্প-২ এর পশ্চিমের হেডমাঝি মোহাম্মদ ওসমান  জানান, তারা খুবই ঝুঁকির মাঝে রয়েছেন, ক্যাম্পে যদি কেউ আক্রান্ত হয় তা হলে মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়বে। কারণ এখানে সীমিত জায়গার উপর বিশাল জনগোষ্ঠীর বসবাস। তাছাড়া পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য সেবার সুবিধা খুবই সীমিত। 

এ প্রসঙ্গে রোহিঙ্গা অ্যাডুকেশন ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রামের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জমিরউদ্দিন বলেন, উখিয়া টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে জমায়েত বা জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ক্যাম্পের বাসিন্দাদের মধ্য আতঙ্ক বিরাজ করছে। কিন্তু তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে এ ব্যাপারে কোন প্রতিরোধের উপায় বা করণীয় সমর্কে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জানতে পারছে না। কারণ ক্যাম্পে থ্রি-জি বা ফোর-জি নেটওয়ার্ক বন্ধ।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে গঠিত 'ইন্টার সেকটরাল কোঅরডিনেশন গ্রুপ'- এর কর্মকর্তা সৈকত বিশ্বাস জানান, করোনা মোকাবেলায় তারা নিজেদের একটি সমন্বিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। সে অনুযায়ী ক্যাম্পের বাসিন্দাদের মাঝে প্রচারণা চালাচ্ছেন, ঘরে ঘরে গিয়ে স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক পরামর্শ দিচ্ছেন এবং আইসোলেশন ক্যাম্প স্থাপনের কাজ করছেন। 

কুতুপালং রেজিষ্ট্রার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চেয়ারম্যান হাফেজ জালাল জানিয়েছেন, ক্যাম্পের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইসোলেশন সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, যদি কোনো রোহিঙ্গা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে যোগাযোগ করে তাহলে তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে উখিয়া প্রেস ক্লাবের এক অনুষ্ঠানে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মর্জিনা আকতার মরজু সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, সরকারের ঘোষিত সতর্কতামূলক কর্মসূচির সাথে আল্লাহর ওপর ভরসাই হবে করোনা থেকে বাঁচার সবচাইতে বড় উপায়।


এদিকে, উখিয়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা সর্তকতা নিয়ে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা গুলোর সাথে কথা বলে প্রয়োজনে করোনা আক্রান্তদের জন্য আলাদা হাসপাতাল স্থাপনের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।

এছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যেকোন ধরনের সমাবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এবং সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য বারবার সর্তক করা হচ্ছে। এমনকি রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং গোটা উখিয়া উপজেলায় মাইকিং করে করোনা ভাইরাস থেকে সতর্ক থাকতে বিভিন্ন প্রকার দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ