বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন
সীমান্তে রাতের বেলায় বিজিবি-গ্রামবাসীর পাহারা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৩:৩১
ঝিনাইদহ ও রাজশাহীর বিভিন্ন সীমান্তে ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সাথে স্থানীয় লোকজন কমিটি গঠন করে প্রতি রাতে পাহারা দিচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
ঝিনাইদহে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজিবির এক কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, মাসখানেক আগে মহেশপুর সীমান্ত এলাকায় হঠাৎ তারা লক্ষ্য করেন দু-একদিন পরপর ভারত থেকে নারী-পুরুষ-শিশুদের ছোটো ছোটো দল বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ওই সীমান্তে তারা নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
ঝিনাইদহে বিজিবির কর্মকর্তারা বলেছেন, গত এক মাসে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে তারা প্রায় ২৫০ জনকে আটক করে পুলিশের কাছে দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১০০ জনের মতো নারী ও শিশু রয়েছে।
বিজিবির অনুরোধে মহেশপুরে স্থানীয় প্রশাসন সীমান্তবর্তী ইউনিয়নগুলোর চেয়ারম্যান কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। স্থানীয় লোকজন নিয়ে তৈরি ওইসব কমিটি সীমান্ত এলাকায় পাহারা দিচ্ছে।
মহেশপুরের সীমান্তবর্তী একটি ইউনিয়নের এক কাউন্সিলর সায়রা খাতুন বলছিলেন, নজরদারি বাড়ানোর ফলে অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে উদ্বেগ কিছুটা কমেছে। গত কিছুদিন ১০-২০ জন করে ছোট ছোট দলে ভারত থেকে আমাদের দেশে আসছিল। কিন্তু এখন একটা বিরতি দেখছি।
বিজিবির কর্মকর্তারাও বলছেন, সীমান্তে স্থানীয় লোকজনকে সম্পৃক্ত করে সতর্ক থাকার কারণে অনুপ্রবেশের চেষ্টা কমেছে।
রাজশাহীর পবা উপজেলায় পদ্মা নদীতে সীমান্তবর্তী চর এবং গ্রামগুলোর মানুষজন রাত জেগে সীমান্ত পাহারা দিচ্ছেন যাতে ভারত থেকে অবৈধভাবে কেউ ঢুকতে না পারে। সেখানে সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন পরিষদগুলোর সদস্যদের নেতৃত্বে গ্রামবাসীদের নিয়ে কমিটি গঠন করে পাহারার এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।
চরখানপুর নামের একটি ইউনিয়নের কাউন্সিলর কোহিনুর বেগম বিবিসিকে বলেন, বিজিবির অনুরোধে তারা দুই সপ্তাহ ধরে পাহারা দিচ্ছেন, কিন্তু অবৈধ অনুপ্রবেশের কোনো ঘটনা তাদের হাতে ধরা পড়েনি। বিজিবি থেকে বলছে যে ভারত থেকে বাংলাদেশে মানুষ ঢুকতে পারে, সে জন্য পাহারা দিতে হবে। বিজিবি ক্যাম্পের দুই পাশে কয়েকটা গ্রুপ করা হয়েছে। গ্রুপে ভাগ করে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ১টা এবং রাত ১টা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত পাহারা দেওয়া হচ্ছে গত দুই সপ্তাহ ধরে।
বিজিবির এক কর্মকর্তার বক্তব্য
রাজশাহীতে বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল ফেরদৌস মাহমুদ বিবিসিকে বলেন, তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই, তবে সম্প্রতি অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন খবর প্রকাশ হওয়ায় তারা সজাগ থাকছেন। গত মাসেই দক্ষিণ ভারতের ব্যাঙ্গালোর থেকে অবৈধ বাংলাদেশী সন্দেহে ৫৯ জনকে ধরে তাদের বাংলাদেশে পুশব্যাকের উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় আনা হয় যা নিয়ে ভারতের অনেক পত্রিকাতে খবর হয়েছে। তবে কোন সীমান্ত দিয়ে তাদের ঢোকানো হয়েছে, অথবা তাদের পরিণতি কী হয়েছে- তা জানা যায়নি। ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে, তাদের পুলিশ পাহারায় হাওড়ার একটি সরকারি ভবনে আটকে রাখা হয়। দুদিন পর শনিবার তারা লাপাত্তা হয়ে গেলে হাওড়ার এক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা বিবিসির কাছে স্বীকার করেছিলেন, তাদের দলে দলে ভাগ করে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজিবির কর্মকর্তারা বলছেন, গত মাসে যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে যে ভারতে নাগরিক তালিকা বা এনআরসির ভয়ে তারা বাংলাদেশে ঢুকছে। সরকার কী বলছে
বাংলাদেশের সরকার এই ইস্যুকে স্পর্শকাতর হিসেবে বিবেচনা করে কৌশলে এগোতে চাইছে। এই অবৈধ অনুপ্রবেশের ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভারত সরকার বিষয়টিতে আশ্বস্ত করার কারণে বাংলাদেশ এনিয়ে ভারতকে বিব্রত করছে না। এনআরসি নিয়ে ভারত বার বার বলছে যে এনিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই। ভারতের স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন। সেখানে আমরা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিব্রত করতে চাই না। সেটা করা ঠিক হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বক্তব্য হচ্ছে, এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি। এবিএন/সাদিক/জসিম
রাজশাহীতে বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল ফেরদৌস মাহমুদ বিবিসিকে বলেন, তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই, তবে সম্প্রতি অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন খবর প্রকাশ হওয়ায় তারা সজাগ থাকছেন। গত মাসেই দক্ষিণ ভারতের ব্যাঙ্গালোর থেকে অবৈধ বাংলাদেশী সন্দেহে ৫৯ জনকে ধরে তাদের বাংলাদেশে পুশব্যাকের উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় আনা হয় যা নিয়ে ভারতের অনেক পত্রিকাতে খবর হয়েছে। তবে কোন সীমান্ত দিয়ে তাদের ঢোকানো হয়েছে, অথবা তাদের পরিণতি কী হয়েছে- তা জানা যায়নি। ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে, তাদের পুলিশ পাহারায় হাওড়ার একটি সরকারি ভবনে আটকে রাখা হয়। দুদিন পর শনিবার তারা লাপাত্তা হয়ে গেলে হাওড়ার এক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা বিবিসির কাছে স্বীকার করেছিলেন, তাদের দলে দলে ভাগ করে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজিবির কর্মকর্তারা বলছেন, গত মাসে যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে যে ভারতে নাগরিক তালিকা বা এনআরসির ভয়ে তারা বাংলাদেশে ঢুকছে। সরকার কী বলছে
বাংলাদেশের সরকার এই ইস্যুকে স্পর্শকাতর হিসেবে বিবেচনা করে কৌশলে এগোতে চাইছে। এই অবৈধ অনুপ্রবেশের ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভারত সরকার বিষয়টিতে আশ্বস্ত করার কারণে বাংলাদেশ এনিয়ে ভারতকে বিব্রত করছে না। এনআরসি নিয়ে ভারত বার বার বলছে যে এনিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই। ভারতের স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন। সেখানে আমরা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিব্রত করতে চাই না। সেটা করা ঠিক হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বক্তব্য হচ্ছে, এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি। এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ