আজকের শিরোনাম :

আগাম বার্তা ও গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়ে তালগোল পাকিয়েছে শ্রীলংকার প্রশাসন?

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:৪৫

রবিবারের বোমা হামলার আগাম সতর্কবার্তা পাওয়ার খবর নিয়ে এখন তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ছে শ্রীলংকার নেতৃত্বের মধ্যকার বিরোধ।

গির্জা ও বিলাসবহুল হোটেলে একাধিক বিস্ফোরণে ৩১০ জন নিহত ও ৫০ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে।

নিরাপত্তা সংস্থাগুলো জিহাদি গ্রুপ ন্যাশনাল তাওহীদ জামাতের দিকে নজর দিচ্ছে বলে খবর আসছে। যদিও আগেই পুলিশকে সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে তথ্য দেয়া হয়েছিল।

এদিকে ভয়াবহ হামলায় নিহতদের স্মরণে আজ শোক পালন করা হচ্ছে শ্রীলংকায়।

এক টুইট বার্তায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, ‘অবর্ণনীয় এই ট্র্যাজেডির পরও আমরা শ্রীলংকানরা ঐক্যবদ্ধ আছি।’

মন্ত্রিপরিষদ মুখপাত্র রাজিথা সেনারত্নে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, নিরাপত্তা বিষয়ক আগাম তথ্য সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।

মূলত প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার সঙ্গে তার গত বছরের বিরোধের জেরেই এটা ঘটেছে।

সিরিসেনা রনিল বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত করে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছিলেন, যার জেরে তীব্র সাংবিধানিক সংকট তৈরি হয়েছিল।

তিনি পরে বিক্রমাসিংহেকে সুপ্রিম কোর্টের চাপের মুখে পুনর্বহাল করতে বাধ্য হয়েছিলেন, কিন্তু মনে হচ্ছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্রিফিং থেকে তাকে অবহিত করা হয়নি।

সেনারতেœ বলেন, নিরাপত্তা সংস্থাগুলো গত ৪ এপ্রিল থেকেই সতর্কবার্তা ইস্যু করতে শুরু করে। এর আগেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সতর্কবার্তার বিস্তারিত পুলিশ প্রধানের কাছে পাঠিয়েছিল। ১১ এপ্রিল নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিভাগের প্রধানদের কাছে একটি বার্তা পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে হামলাকারী গোষ্ঠী ও তাদের সদস্যদের নামও বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে পাওয়ার পর তা পুলিশকে দেয়া হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে ইতোমধ্যেই খবর এসেছে যে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা শ্রীলংকা সরকারকে এ বিষয়ে সতর্ক করেছিল। তবে এটা পরিষ্কার নয় যে সিরিসেনাকে এসব সতর্কবার্তার বিষয়ে জানানো হয়েছিল কি-না।

সিরিসেনার এক উপদেষ্টা শিরাল লাকথিলাকা বিবিসি বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি যে এটা সঠিকভাবেই নিরাপত্তা সংস্থা ও পুলিশকে দেয়া হয়েছিল।’

তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট ইতোমধ্যেই ঘটনা তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারকের নেতৃত্বে একটি বিশেষ কমিটি করেছে।

দেশটির নগর পরিকল্পনা বিষয়কমন্ত্রী রাউফ হাকিম এ ঘটনাকে ‘বড় গোয়েন্দা ব্যর্থতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ‘এটা আমাদের সবার জন্য লজ্জাজনক। আমরা সবাই লজ্জিত।’

টেলিযোগাযোগমন্ত্রী হারিন ফার্নান্দো টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘কিছু গোয়েন্দা কর্মকর্তা এ বিষয়ে জানতেন। তার পরও ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হয়েছে। কেন সতর্কতাকে এড়িয়ে গেল সে জন্য কঠিন ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’

সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে?
সোমবার মধ্যরাত থেকে জরুরি অবস্থার পাশাপাশি এক ঘোষণায় দেশটির পুলিশকে আদালতের আদেশ ছাড়াই সন্দেহভাজনদের ধরা ও জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এ ধরনের ক্ষমতা তারা সর্বশেষ গৃহযুদ্ধের সময় প্রয়োগ করেছিল।

রাতে কারফিউ দেয়া হয়েছিল ও রাতভর সশস্ত্র বাহিনী রাস্তায় টহলে ছিল। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইন্সটগ্রামসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। পুলিশ নানা জায়গা থেকে ২৪ জনকে আটক করেছে।

উদ্ধার করা হয়েছে আরও ৮৭টি বোমা ডেটোনেটর যার একটি পরে নিষ্ক্রিয় করার সময় বিস্ফোরিত হয়েছে।
খবর বিবিসি

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ