বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন
কাগজের ব্যাগ কি প্লাস্টিক ব্যাগের চেয়ে বেশি পরিবেশবান্ধব
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯, ১৩:১১
কাগজের ব্যাগের জনপ্রিয়তা ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, কিন্তু ১৯৭০-এর পর আরও টেকসই উপাদান হিসেবে প্লাস্টিকের ব্যবহার শুরুর পর থেকে সেগুলো তার জায়গা হারিয়ে ফেলে।
প্রশ্ন হলো, কাগজের ব্যাগ কি প্লাস্টিকের ব্যাগের চাইতে বেশি পরিবেশবান্ধব?
উত্তরগুলো এভাবে খুঁজে দেখা যেতে পারে-
>> এসব ব্যাগ উৎপাদনে কোন ক্ষেত্রে কত শক্তি ব্যবহার করা হয়?
>> ব্যাগটি কতটা টেকসই বা বলা যেতে পারে যে এটি কতবার পুনঃব্যবহার করা যায়?
>> ব্যবহার শেষে ফেলে দেওয়ার পর কত দ্রুত এটি পচে যাবে? চারগুণ বেশি শক্তি
উত্তর আয়ারল্যান্ডের ২০১১ সালের একটি গবেষণায় বলা হচ্ছে যে, একটি প্লাস্টিক ব্যাগ উৎপাদনের চাইতে অন্তত চারগুণ বেশি শক্তি প্রয়োজন একটি কাগজের ব্যাগ তৈরিতে। এ ছাড়া প্লাস্টিক ব্যাগের বিপরীতে কাগজের ব্যাগ তৈরিতে উজাড় হয় বনভূমি। গবেষণাটিতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, প্রতি এক একটি প্লাস্টিক ব্যাগ তৈরির তুলনায় কাগজের ব্যাগ উৎপাদনের সময় অত্যন্ত বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্যও তৈরি হয়। এর বাইরে কাগজের ব্যাগের ওজন বেশি হয় প্লাস্টিকের তুলনায়। সুতরাং এটি পরিবহনে প্রয়োজন আরও বেশি শক্তি, ফলে কার্বন উৎসরনের হারও বেশি- গবেষণা তেমনটাই নির্দেশ করে। সুপারমার্কেট মরিসন বলছে যে, তারা যেসব কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করছে তা শতভাগ বনের উপাদান থেকেই উৎপন্ন। কেটে ফেলা গাছগুলোর পরিবর্তে যদি দ্রুত নতুন বনায়ন করা সম্ভব হয় তবে তা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে বন্ধ করতে সহায়তা করবে, কেননা গাছ বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন শুষে নেয়। ২০০৬ সালে, এনভায়রনমেন্ট এজেন্সি একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। বৈশ্বিক উষ্ণায়ণের নিয়ামক খুঁজতে তারা দেখতে চেয়েছিল যে একটি ব্যাগ কতবার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পরীক্ষায় দেখা যায় যে, কাগজের তৈরি ব্যাগগুলো অন্তত ৩ বার পুনঃব্যবহার করা দরকার, প্লাস্টিকের ব্যাগের তুলনায় তা একবার কম। অন্যপক্ষে দেখা গেছে, কাপড়ের তৈরি ব্যাগ সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়, সংখ্যাটি ১৩১। তুলা থেকে সুতা উৎপাদনে যে বিশাল শক্তি ক্ষয় হয় এটি তাকে কিছুটা লাঘব করে। কাগজের ব্যাগ যদি সবচেয়ে কম বার ব্যবহার উপযোগী হয়, তবে কি এটি সুপারমার্কেটে টিকে থাকবে? বিশেষ করে ভিজে গেলে কাগজের ব্যাগের ব্যবহার উপযোগিতা যেখানে দ্রুত কমে যায়। তাই এনভায়রনমেন্ট এজেন্সি তাদের গবেষণার উপসংহারে বলছে, কাগজের ব্যাগের টিকে থাকার অযোগ্যতার কারণেই তার পুনঃব্যবহার কম হয়ে থাকে। যদিও প্লাস্টিক ব্যাগের চাইতে কাগজের ব্যাগের পুনঃব্যবহার হার কম, তবুও ‘মরিসন’ এটি ব্যবহারে জোড় দিচ্ছে। তাদের মতে কিভাবে বা কি উপায়ে ব্যাগটি ব্যবহার করা হবে সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। কাপড়ে ব্যাগ উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণ সত্ত্বেও এটি সবচেয়ে টেকসই এবং দীর্ঘস্থায়ী। তবে স্থায়িত্ব সবচেয়ে কম হলেও কাগজের ব্যাগ প্লাস্টিকের তুলনায় প্রকৃতিতে দ্রুত পচনশীল। এ ছাড়া, কাগজ অনেক বেশি পরিমাণে রিসাইকেল করা হয়ে থাকে। যেখানে প্রকৃতিতে মিশে যেতে একটি প্লাস্টিকের তৈরি ব্যাগের ৪০০ থেকে হাজার বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সুতরাং কোনটি সেরা?
একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক ব্যাগের তুলনায় কাগজের ব্যাগগুলি কিছু কম পুনঃব্যবহার প্রয়োজন। কেননা এটি অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব। অন্যদিকে কাগজের ব্যাগ অন্যান্য উপকরণের ব্যাগের চাইতে কম টেকসই হয়। তাই গ্রাহক যদি এটি একবারের বেশি ব্যবহার না করেন, তবে তার প্রভাব প্রকৃতিতে ভীষণভাবে পরবে। নর্থহ্যাম্পটন ইউনিভার্সিটির টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অধ্যাপক মার্গারেট বেটস বলছেন যে, বহন উপযোগী ব্যাগ কি উপাদানে তৈরি সেটি মূল বিষয় নয়। আসল ব্যাপার হলো ব্যাগটি কতবার ব্যবহার করা হচ্ছে। তার মতে, বেশিরভাগ মানুষই সপ্তাহের বাজার করতে সুপারমার্কেটে আসার সময় পুনরায় ব্যবহার উপযোগী ব্যাগটি নিয়ে আসতে ভুলে যায়। ফলাফল, আরও নতুন ব্যাগ সে কিনে নিয়ে যায়। সুতরাং কাগজ, প্লাস্টিক বা কাপড়ের তৈরি ব্যাগ বড় কথা নয়। অধ্যাপক বেটস বলছেন, একটি ব্যাগের পুনঃপুন ব্যবহারই পরিবেশের ওপর সবচেয়ে বড় প্রভাব রাখতে পারে। এবিএন/সাদিক/জসিম
>> এসব ব্যাগ উৎপাদনে কোন ক্ষেত্রে কত শক্তি ব্যবহার করা হয়?
>> ব্যাগটি কতটা টেকসই বা বলা যেতে পারে যে এটি কতবার পুনঃব্যবহার করা যায়?
>> ব্যবহার শেষে ফেলে দেওয়ার পর কত দ্রুত এটি পচে যাবে? চারগুণ বেশি শক্তি
উত্তর আয়ারল্যান্ডের ২০১১ সালের একটি গবেষণায় বলা হচ্ছে যে, একটি প্লাস্টিক ব্যাগ উৎপাদনের চাইতে অন্তত চারগুণ বেশি শক্তি প্রয়োজন একটি কাগজের ব্যাগ তৈরিতে। এ ছাড়া প্লাস্টিক ব্যাগের বিপরীতে কাগজের ব্যাগ তৈরিতে উজাড় হয় বনভূমি। গবেষণাটিতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, প্রতি এক একটি প্লাস্টিক ব্যাগ তৈরির তুলনায় কাগজের ব্যাগ উৎপাদনের সময় অত্যন্ত বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্যও তৈরি হয়। এর বাইরে কাগজের ব্যাগের ওজন বেশি হয় প্লাস্টিকের তুলনায়। সুতরাং এটি পরিবহনে প্রয়োজন আরও বেশি শক্তি, ফলে কার্বন উৎসরনের হারও বেশি- গবেষণা তেমনটাই নির্দেশ করে। সুপারমার্কেট মরিসন বলছে যে, তারা যেসব কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করছে তা শতভাগ বনের উপাদান থেকেই উৎপন্ন। কেটে ফেলা গাছগুলোর পরিবর্তে যদি দ্রুত নতুন বনায়ন করা সম্ভব হয় তবে তা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে বন্ধ করতে সহায়তা করবে, কেননা গাছ বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন শুষে নেয়। ২০০৬ সালে, এনভায়রনমেন্ট এজেন্সি একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। বৈশ্বিক উষ্ণায়ণের নিয়ামক খুঁজতে তারা দেখতে চেয়েছিল যে একটি ব্যাগ কতবার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পরীক্ষায় দেখা যায় যে, কাগজের তৈরি ব্যাগগুলো অন্তত ৩ বার পুনঃব্যবহার করা দরকার, প্লাস্টিকের ব্যাগের তুলনায় তা একবার কম। অন্যপক্ষে দেখা গেছে, কাপড়ের তৈরি ব্যাগ সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়, সংখ্যাটি ১৩১। তুলা থেকে সুতা উৎপাদনে যে বিশাল শক্তি ক্ষয় হয় এটি তাকে কিছুটা লাঘব করে। কাগজের ব্যাগ যদি সবচেয়ে কম বার ব্যবহার উপযোগী হয়, তবে কি এটি সুপারমার্কেটে টিকে থাকবে? বিশেষ করে ভিজে গেলে কাগজের ব্যাগের ব্যবহার উপযোগিতা যেখানে দ্রুত কমে যায়। তাই এনভায়রনমেন্ট এজেন্সি তাদের গবেষণার উপসংহারে বলছে, কাগজের ব্যাগের টিকে থাকার অযোগ্যতার কারণেই তার পুনঃব্যবহার কম হয়ে থাকে। যদিও প্লাস্টিক ব্যাগের চাইতে কাগজের ব্যাগের পুনঃব্যবহার হার কম, তবুও ‘মরিসন’ এটি ব্যবহারে জোড় দিচ্ছে। তাদের মতে কিভাবে বা কি উপায়ে ব্যাগটি ব্যবহার করা হবে সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। কাপড়ে ব্যাগ উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণ সত্ত্বেও এটি সবচেয়ে টেকসই এবং দীর্ঘস্থায়ী। তবে স্থায়িত্ব সবচেয়ে কম হলেও কাগজের ব্যাগ প্লাস্টিকের তুলনায় প্রকৃতিতে দ্রুত পচনশীল। এ ছাড়া, কাগজ অনেক বেশি পরিমাণে রিসাইকেল করা হয়ে থাকে। যেখানে প্রকৃতিতে মিশে যেতে একটি প্লাস্টিকের তৈরি ব্যাগের ৪০০ থেকে হাজার বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সুতরাং কোনটি সেরা?
একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক ব্যাগের তুলনায় কাগজের ব্যাগগুলি কিছু কম পুনঃব্যবহার প্রয়োজন। কেননা এটি অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব। অন্যদিকে কাগজের ব্যাগ অন্যান্য উপকরণের ব্যাগের চাইতে কম টেকসই হয়। তাই গ্রাহক যদি এটি একবারের বেশি ব্যবহার না করেন, তবে তার প্রভাব প্রকৃতিতে ভীষণভাবে পরবে। নর্থহ্যাম্পটন ইউনিভার্সিটির টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অধ্যাপক মার্গারেট বেটস বলছেন যে, বহন উপযোগী ব্যাগ কি উপাদানে তৈরি সেটি মূল বিষয় নয়। আসল ব্যাপার হলো ব্যাগটি কতবার ব্যবহার করা হচ্ছে। তার মতে, বেশিরভাগ মানুষই সপ্তাহের বাজার করতে সুপারমার্কেটে আসার সময় পুনরায় ব্যবহার উপযোগী ব্যাগটি নিয়ে আসতে ভুলে যায়। ফলাফল, আরও নতুন ব্যাগ সে কিনে নিয়ে যায়। সুতরাং কাগজ, প্লাস্টিক বা কাপড়ের তৈরি ব্যাগ বড় কথা নয়। অধ্যাপক বেটস বলছেন, একটি ব্যাগের পুনঃপুন ব্যবহারই পরিবেশের ওপর সবচেয়ে বড় প্রভাব রাখতে পারে। এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ