আজকের শিরোনাম :

রেস্তোরাঁয় গ্রেডিং প্রথা কী নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে পারবে?

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০১৯, ২০:৫৮

বাংলাদেশে রোববার চালু হয়েছে রেস্তোরাঁয় জন্য গ্রেডিং ব্যবস্থা। প্রাথমিকভাবে কেবল ঢাকার ৫৭টি রেস্তোরাঁকেএ ব্যবস্থায় গ্রেডিং বা মান অনুযায়ী স্তর বিন্যাস করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ হোটেল এবং রেস্তোরাঁর মান অনুসারে স্টিকারের নাম দিয়েছে।

এ প্লাসকে সবুজ, এ গ্রেডকে কে নীল, বি গ্রেড কে হলুদ এবং সি গ্রেড কে কমলা রংয়ের স্টিকার দিচ্ছে।

এ প্লাস মানে উত্তম, এ মানে ভালো, বি মানে গড়পড়তা বা মোটামুটি এবং সি মানে- অনিরাপদ।

বাংলাদেশের নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মাহাবুব কবির জানিয়েছেন এসব হোটেলগুলোকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং সেগুলোর নির্দিষ্ট সময় সীমা থাকবে।

এর ফলে নিরাপদ খাদ্যের বিষয়টা নিশ্চিত হবে বলে তিনি মনে করছেন।

"ব্লু এবং গ্রিন যারা পেয়েছে তাদের অফিসিয়াল রিনিউয়াল সময় এক বছর। যদিও আমরা কন্টিনিউয়াস মনিটর করবো। তবে ত্রুটির উপর নির্ভর করে তাদের অবস্থানের পরিবর্তন হবে।

সে ক্ষেত্রে যদি তারা হলুদ বা কমলা স্টিকারে চলে আসে তাহলে আমরা শাস্তি স্বরূপ বন্ধ করে দেব, সীলগালা করে দেব সেই হোটেল।"

বি এবং সি গ্রেড পাওয়া হোটেল গুলোর রিনিউয়াল মেয়াদ কম হবে।

বি গ্রেডকে ৩ মাস সময় দেয়া হবে বাধ্যতামূলক ভাবে আপগ্রেড করার জন্য। না হলে বন্ধ করা দেয়া হবে।

আর সি গ্রেডকে পেন্ডিং রাখা হচ্ছে এবং একমাস সময় দেয়া হচ্ছে 'এ' অথবা 'এ-প্লাস' এ উন্নীত করার জন্য।

বাংলাদেশের নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ বলছে ২০১৯ সালের মধ্যে সারাদেশের ৬৪ জেলায় হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে তারা পাইলটিং শুরু করবেন বলে আশা করছেন।


কী মানদণ্ডে গ্রেডিং করা হয়েছে?
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গত নয় মাস ধরে ঢাকায় ছয়টি এলাকার ২০০ হোটেল-রেস্তোরাঁর ওপর একটি জরিপ চালায়।

এর মধ্যে রান্নাঘরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, রান্নার পদ্ধতি ভোক্তাদের দেখার ব্যবস্থা করা, কর্মীদের পরিচ্ছন্নতা, রেস্তোরাঁর পয়:নিস্কাশন ব্যবস্থাসহ আরো বেশ কয়েকটি বিষয় পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।

জরিপের ওপর ভিত্তি করে ঢাকার ৫৭ টি হোটেলে-রেস্তোরাঁর গ্রেডিং পদ্ধতির আওতায় আনা হয়েছে।

এর মধ্যে ১৮টি রেস্তোরাঁ পেয়েছে এ প্লাস মর্যাদা এবং ৩৯টি পেয়েছে এ গ্রেড।


কিন্তু এসব করে খাদ্য কতটা নিরাপদ করা যাবে?
বাংলাদেশের নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মি. কবির বলছিলেন সি গ্রেডের স্টিকার থাকলে এমনিতেই সেই প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা হবে না।

একে তিনি একটা শাস্তি বলে মনে করছেন। এছাড়া মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করার প্রক্রিয়া চালু থাকবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড.শারমীন রুমি আলীম মনে করেন, কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগ সময় সাপেক্ষ হলেও, প্রতিমাসে পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব।

"আজকে আপনি চিন্তা করলেন কাল শুরু করে দিলেন এটা সম্ভব না। এবং রেস্তোরাঁগুলোর ক্যাটাগরি আলাদা, তাই খাদ্য নিরাপদ করার জন্য এক এক ধরণের সেফটি মেজার দরকার হয়। তবে সব কিছু মাথায় রেখে যদি আপনি কাজে নামেন তাহলে সম্ভব।"

বাংলাদেশে- নিরাপদ খাদ্য আইন করা হয় ২০১৩ সালে। সেখানে অনিরাপদ খাদ্য বন্ধের ব্যপারে বিস্তর নিয়ম কানুন রয়েছে।

এরপরেও খাদ্যে ভেজাল নিয়ে শঙ্কা জনমনে প্রতিনিয়ত থেকে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির হিসাব অনুযায়ী এখন সারা দেশে ছোট বড় ৫৫ থেকে ৬০ হাজার রেস্টুরেন্ট আছে।

সমিতির মহাসচিব রেজাউল করিম মনে করেন, এখন যে গ্রেডিং ব্যবস্থা করা হচ্ছে সেটা যদি ৪০ থেকে ৫০% সফল হয় তাহলে সারাদেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

এবিএন/রাজ্জাক/জসিম/এআর

এই বিভাগের আরো সংবাদ