আজকের শিরোনাম :

বাংলাদেশের নতুন সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জ কী হতে পারে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯, ১৯:৫২

বাংলাদেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকারের নতুন মন্ত্রিসভা সোমবার শপথ নেয়ার কথা রয়েছে । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ দলটি ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশ শাসন করছে ।

এবারেও শেখ হাসিনাকেই আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের প্রধান নির্বাচিত করেছে এবং তিনি সোমবারই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ।

এবারের সংসদ নির্বাচন বিরোধীদল বিএনপিসহ সব দলের অংশগ্রহণে হওয়ায় এ নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক আগ্রহ ছিলো সর্বত্র ।

নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ২৮৮টি আসন লাভ করে যদিও এ নির্বাচনে ব্যাপক ভোট কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ করে ফল প্রত্যাখ্যান করেছে বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ।

ড: কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন এই ঐক্যফ্রন্ট থেকে মাত্র সাতজন নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। বিরোধী দল নতুন নির্বাচনের দাবি জানালেও নির্বাচন কমিশন এবং সরকারি দল আওয়ামী লীগ তা প্রত্যাখ্যান করেছে । এর মধ্যেই শপথ নিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত সাতজন ছাড়া বাকী সবাই।

আওয়ামী লীগের মিত্র জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ এবার সরকারে না গিয়ে বিরোধী দল হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

ঘোষণা অনুযায়ী দলটির নেতা এইচ এম এরশাদ সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হবেন ও তার ভাই জি এম কাদের বিরোধী দলীয় উপনেতা হবেন। আর দলটির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা হবে বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ।

নতুন সরকারের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ

নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে ক্ষমতায় আসা নতুন সরকারের জন্য দুর্নীতি মোকাবেলা আর সুশাসন প্রতিষ্ঠাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করছেন দুর্নীতি বিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড: ইফতেখারুজ্জামান।

বিবিসি বাংলায় এক বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন একটি অভূতপূর্ব নির্বাচন ও অভূতপূর্ব ফলাফলের মাধ্যমে যে সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে তার জন্য চ্যালেঞ্জটাও বহুমুখী ও অনেক ক্ষেত্রে অভূতপূর্বই হবে।

"যে ফল এসেছে তার জন্যে দলের অভ্যন্তরে যারা আছে এবং এর বাইরেও বিভিন্ন সংস্থা কাজ করেছে।"

তিনি বলেন, "যারা এ ফলের উপাদান যুগিয়েছে তাদের মধ্যে হয়তো জাতীয় স্বার্থ থাকবে কিন্তু ক্ষমতায় থাকলে সম্পদের বিকাশ হবে বলে যারা মনে করেন তাদের প্রত্যাশা ম্যানেজ করাই সুশাসনের জন্য বড় ঝুঁকি হবে বলে মনে করছি," বলেন তিনি।

অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সায়মা হক বিদিশা বলেছেন, গত কয়েক বছরে অর্থনীতিতে যে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে এখন সেই প্রবৃদ্ধির সুফল সবাই পাচ্ছে কি-না সেটাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ।

"কর্মসংস্থান সেভাবে তৈরি হচ্ছে না আর এটিই বড় চ্যালেঞ্জ। তাই উন্নতি বা প্রবৃদ্ধির সুবিধা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া গুরুত্বপূর্ণ।"

তিনি বলেন, "ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিয়ে প্রশ্ন আছে। নতুন সরকার উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে সিরিয়াস থাকলে তাদের আর্থিক খাতে সুশাসনের কথা চিন্তা করতেই হবে। একই সাথে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগে মন্দা আছে । বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার বিকল্প নাই," বলেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে ড: ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ওপরই নির্ভর করবে সুশাসন বা অর্থনীতির চাকা কেমন চলবে।

তিনি বলেন, "এখন সরকার পরিচালনায় চেকস অ্যান্ড ব্যাল্যান্স বা জবাবদিহিতার ক্ষেত্র প্রস্তুত নেই। তাই জবাবদিহিমূলক শাসন প্রতিষ্ঠাই বড় চ্যালেঞ্জ হবে। সরকার প্রধান নিজেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা বলেছেন। এখন সেটি বাস্তবায়ন না হলে এটি বক্তব্যের জায়গাতেই থেকে যাবে।" সূত্র: বিবিসি বাংলা। 

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ