আজকের শিরোনাম :

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রচারে যেসব বিষয় গুরুত্ব পাবে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৪:৪১

আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন সামনে আজ থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করছে বিএনপি ও তাদের শরিক দলগুলো। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ও তার শরিকদলগুলো আগামীকাল থেকে মাঠে নামার কথা রয়েছে।

গতকাল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষ হয়ে হওয়ায় কোন আসনে কোন দলের কে কে প্রার্থী হচ্ছেন, সেটাও এখন চূড়ান্ত। এ ছাড়া দুই প্রধান জোটের মধ্যে আসন ভাগাভাগিও শেষ।

এ নির্বাচনী প্রচাওে প্রধান দুই দল ভোটারদের সমর্থন আদায়ে কোন কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিতে পারে?

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মির্জা তাসলিমা সুলতানা বলেছেন, ‘বিএনপি মূলত সাধারণ মানুষের ঘাটতির জায়গাগুলো নিয়ে প্রচার চালাতে পারে।’
ভোটারদের অপূরণীয় দাবিগুলো অনুধাবন করে সেগুলোকে তারা তাদের ভোট চাওয়ার জন্য ব্যবহার করতে পারে বলে জানান তিনি।

এর মধ্যে তিনি তিনটি প্রধান ইস্যুকে চিহ্নিত করেন- সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় চলমান অরাজকতা দূরীকরণ এবং মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা; বিশেষ করে আইসিটি আইনের পরিবর্তন যেখানে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে নজরদারির মধ্যে রাখা হবে না।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ তাদের প্রচারণায় গত ১০ বছরে তাদের যে অর্জন, সেগুলোকেই তারা সামনে তুলে ধরবে বলেই মনে করেন মির্জা তাসলিমা সুলতানা।

তিনি বলেন, ‘এটা তো অনুমেয় যে যারা টানা ১০ বছর ক্ষমতায় ছিল তারা ক্ষমতায় থেকে কী কী ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে, কী ধরণের উন্নয়ন করেছে তারা সেই অর্জনগুলোর কথাই তুলে ধরে মানুষের কাছে ভোট চাইবে।’

‘এর মধ্যে রয়েছে পদ্মাসেতু, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, নারীর অগ্রগতিসহ আরও নানা ইস্যু,’ যোগ করেন তিনি।

এ ছাড়া হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ অনেক দিন ধরে সংখ্যালঘুদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয়ের যে দাবি জানিয়ে আসছিল, সেটা করার একটা প্রসঙ্গও আওয়ামী লীগ আনবে বলে মনে করেন সুলতানা।

কেননা এর মাধ্যমে তারা দেশে যে সংখ্যালঘুরা আছেন তাদের ভোট টানতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।
ঐক্যফ্রন্টের ১৯ প্রার্থী রয়েছেন। তাদের প্রচাওে আর বিএনপি জামায়াতের যে নিজেদের প্রার্থী তাদের প্রচারের বক্তব্য কি একই রকম হবে?

বিবিসির এমন প্রশ্নের জবাবে সুলতানা বলেন, ‘প্রচারে কোন বিষয়গুলো আনা হবে সেগুলো নিশ্চয়ই তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করবে। তবে তারা যেহেতু জোট বেঁধেছে সেক্ষেত্রে মানুষ তো আশা করতেই পারে তারা একই ধরণের বক্তব্য দেবে।’

জোট হিসেবে জামায়াতে ইসলাম যখন ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সেটাও জোটের মধ্যে অন্তঃকলহের সৃষ্টি করেছিল।

কেননা বিএনপির শরিক অন্য দলগুলোর একটা শর্ত ছিল যে জামায়াত আসতে পারবে না। এ নিয়ে জোটের মতভেদকে স্বাভাবিকভাবেই দেখছেনে তসলিমা।

তিনি বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্ট ছাড়াও আরেকটি প্রধান জোটেও কিন্তু সিট ভাগাভাগি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। সেটা এখানেও আছে। এটাই তো স্বাভাবিক।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন, অন্যদিকে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দেশে নেই।

বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের কাছে এখন এটিই সবচেয়ে বড় বিষয়।

এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার কৌশলটা আসলে কেমন হতে পারে?

এমন প্রশ্নের উত্তরে মির্জা তসলিমা বলেন, ‘দলটির দাবি, তাদের প্রধান এই দুই নেতার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ পুরোপুরি সত্য নয় এবং তারা রাজনৈতিকভাবে প্রতিহিংসার শিকার। ফলে নির্বাচনী প্রচাওে তারা নিশ্চয়ই বলবে যে তারা ক্ষমতায় গেলে তাদের নেত্রীকে মুক্ত করে আনবে। এ ছাড়া যিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের জন্য দেশে ফিরতে পারছেন না তাকেও দেশে ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দেয়া হবে।’

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ