আজকের শিরোনাম :

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

সংসদ নির্বাচন : টেনশন ‘বিএনপির আসা না আসা’ নিয়ে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:২৬ | আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:২৮

বাংলাদেশে একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর শুক্রবার থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্র জাতীয় পার্টিও।

আলোচনায় আসছে আসন ভাগাভাগি কি ধরনের হবে- সে কথাও। আর তা নিয়েই দলগুলোর ভেতরে কাজ করছে একটা চাপা উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তা।

কারণটা পরিষ্কার। সেটা হলো- বিএনপি নির্বাচন করবে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তাই সামনে সম্ভাব্য পরিস্থিতি হচ্ছে দুই রকম।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পাটি এর আগের নির্বাচনে যেভাবে আসন ভাগাভাগি করেছে, তা এবার নাটকীয়ভাবে বদলে যেতে পারে- যদি এবার বিএনপি ঘোষণা করে যে, তারা নির্বাচন করবে।

ব্যাপক উৎসবমুখর পরিবেশে আজ শুরু হয় নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রয়। একই কর্মসূচি শুরু করেছে গত এক দশক ধরে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় নির্বাচনী মিত্র জাতীয় পার্টিও।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রির সূচনা হয়েছে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য ফরম কেনার মাধ্যমে। অনেক নেতাই ফরম কিনতে আসেন সমর্থকদের মিছিল নিয়ে। ফলে স্লোগান আর বাজনার শব্দে আজ দিনভর মুখরিত ছিলও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়।

তবে এত আগ্রহ উদ্দীপনার মধ্যেও অনেক কর্মী-সমর্থকের সাথে কথা বলে বোঝা গেল- নির্বাচন নিয়ে কিংবা নির্বাচনী জোট নিয়ে অনেকের মধ্যেই উদ্বেগ আছে, আছে উৎকণ্ঠাও।

অনেকের মধ্যেই কাজ করছে এই প্রশ্ন- বিএনপি এবার নির্বাচনে অংশ নিলে কি হবে, আর না নিলে কি হবে।

তেমনি প্রশ্ন আছে জাতীয় পার্টির সঙ্গে শেষ পর্যন্ত জোট হবে কি-না তা নিয়েও। জোট হলে আওয়ামী লীগ কিছু আসন দেবে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের দলকে। কিন্তু এবার কি সে রকম কিছু হবে ?

 

আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, পুরো বিষয়টিই নির্ভর করবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামনে ‘রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন হয়’ তার ওপর।

তিনি বলেন, ‘সংলাপের সময় ও তার পর জাতীয় পার্টি নিজেই বলেছে বিএনপি না এলে আমরা ৩০০ আসনেই নির্বাচন করবে। আর যদি বিএনপি আসে- তা হলে মহাজোটে থেকেই নির্বাচন করব আমরা। তাই বিষয়টি নির্ভর করছে রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপরই।

২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোটের অংশ হিসেবে নির্বাচন করে ২৭টি আসন পেয়েছিল দলটি। আর ২০১৪ সালের নানা নাটকীয়তার পর নির্বাচন করে ১৩টি আসনে আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পেয়েছিল আরও ২০টি আসন।

কিন্তু এবারকার সবচেয়ে বড় প্রশ্ন: যদি বিএনপি নির্বাচন করে ও জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল ও সমমনাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ নির্বাচন করে – তা হলে কত আসন পাবে তারা ? এগুলো কি চূড়ান্ত হয়েছে? জবাবে মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘আমরা জোট সহযোগীদের জন্য ৬০-৭০টি আসন রেখেছি। তবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যার জেতার সম্ভাবনা থাকবে- কেবল তাকেই বিবেচনা করা হবে।

তবে আসন বণ্টন বা জোট মহাজোট নিয়ে প্রকাশ্যে যে বক্তব্যই আসুক না কেন- জাতীয় পার্টির বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের ঘটনা গত নির্বাচনের আগে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। আর সে কারণেই জাতীয় পার্টির অবস্থানজনিত অনিশ্চয়তা নিয়ে নানা ধরনের খবর আসে গণমাধ্যমেও।

এবারে আওয়ামী লীগের অন্য সহযোগীদের নিয়ে তেমন অনিশ্চয়তা এখনো না দেখা গেলেও, বিএনপি নির্বাচনে এলে জাতীয় পার্টি কি করবে বা কোন দিকে যাবে - তা নিয়ে কি কোন অনিশ্চয়তা আসলে আছে?

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের অবশ্য বলছেন, কোনো অনিশ্চয়তা নেই। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার যে বিএনপি না এলে ৩০০ আসনে নির্বাচন করব। সে জন্য আমরাও মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছি এবং প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া চলবে।

যদিও শেষ পর্যন্ত বিএনপির নির্বাচনে আসা বা না আসা কিংবা আসন নিয়ে পর্দার অন্তরালে দরকষাকষি বা আলোচনা- সব কিছু পেরিয়ে বাংলাদেশের একাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী সমীকরণ কেমন দাঁড়াবে?

সেটি দেখতে অপেক্ষা করতে হবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ