তল্লাশির ভিডিও করার অধিকার কি পুলিশের আছে?

সম্প্রতি ঢাকায় পুলিশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে তল্লাশি চালানোর সময় এক নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ওই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং তাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে, পুলিশি অভিযানের সময় ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ করা হয়েছে।

পুলিশের এ ধরনের আচরণ কতটা আইনসম্মত?
আইনজীবীদের মতে, কোনো নারী পুলিশের অনুপস্থিতিতে একজন নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার অনুমতি ছাড়াই সেই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করে আইনগতভাবে অপরাধ সংঘটন করেছেন ওই নিরাপত্তা চৌকির পুলিশ সদস্যরা।

আইনজীবী তানজীব উল আলম বলেন, ‘ওই নারীর সঙ্গে তিনটি অন্যায় করেছে পুলিশ। কোনো নারী পুলিশ সদস্য ছাড়া তাকে তল্লাশি করা, তল্লাশির সময় ঘটনার ভিডিও করা এবং ওই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করা।"

আইনজীব আলমের মতে, আইন অনুযায়ী এরকম ক্ষেত্রে একজন সাধারণ নাগরিককে হয়রানির দায় প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরো পুলিশ বাহিনীর ওপর বর্তায়।

পুলিশের মিডিয়া শাখার অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল রানা জানান, এ ঘটনায় কোনো মামলা বা অভিযোগ দায়ের করা হয়নি, তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্ত চলছে।

বাংলাদেশে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ঘটনার ক্ষেত্রে পুলিশি তদন্ত, জিজ্ঞাসাবাদ বা অভিযান চলার সময় সেই ঘটনার ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাই।

পুলিশ তল্লাশির ভিডিও ধারণ কেন?
কিন্তু তদন্ত বা জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশ কেন সেসবে ঘটনার ভিডিও করছে?

পুলিশের মিডিয়া শাখার অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল রানা জানান, বিশেষ অভিযানের ক্ষেত্রে প্রমাণ হিসেবে পুলিশ ঘটনার ভিডিও করে থাকে।

‘অস্ত্র উদ্ধার, মাদক উদ্ধারের মত গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের ক্ষেত্রে পুলিশ সাধারণত ঘটনার ভিডিও করে যা পরবর্তীতে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করতে পারে।’

তবে সম্প্রতি আলোচনায় আসা ঘটনাটির ক্ষেত্রে পুলিশের তদন্তকারী দল ভিডিও করার যৌক্তিকতা খুঁজে পাননি বলে নিশ্চিত করেন রানা।

তবে আইনজীবীদের মত পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারাও বলছেন, প্রমাণ রাখার স্বার্থে পুলিশের ভিডিও করার এখতিয়ার থাকলেও, অনুমতি ছাড়া সেগুলো সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করা সন্দেহাতীতভাবে বেআইনি একটি কাজ।

এবিএন/সাদিক/জসিম