আজকের শিরোনাম :

যেভাবে হবে ডিউক অব এডিনবরার শেষকৃত্য

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২১, ১৯:৪৬

আর ঘন্টা দুয়েক পরই ব্রিটেনের উইণ্ডসর দুর্গে অনুষ্ঠিত হবে রানি এলিজাবেথের প্রয়াত স্বামী ডিউক অব এডিনবরা প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্য। গত ৯ই এপ্রিল উইণ্ডসর কাসলে প্রিন্স ফিলিপ মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৯৯।

তার মরদেহ এখন উইণ্ডসর ক্যাসলের ভেতরে একটি হলঘরে রাখা আছে। এই দুর্গের প্রাকারের ভেতরেই অন্য প্রান্তে অবস্থিত সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলে তাকে সমাহিত করা হবে। সেখানে এখন চলছে শেষকৃত্যানুষ্ঠানের প্রস্তুতি।

রাজকীয় এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে শনিবার ব্রিটেনের সময় বিকেল তিনটায় (বাংলাদেশ সময় রাত আটটায়)।

জানা গেছে, মৃত্যুর আগে প্রিন্স ফিলিপ ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন যে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা যেন ন্যূনতম মাত্রায় রাখা হয়। তার মরদেহ সাধারণ জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শায়িত রাখা হয়নি। তবে শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানটি টিভিতে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে।

ইংল্যান্ডে এখন করোনাভাইরাস মহামারি-জনিত যেসব বিধিনিষেধ জারি রয়েছে, তার সাথে সংগতি রেখে এই শেষকৃত্যানুষ্ঠানে মাত্র ৩০ জন অতিথি উপস্থিত থাকবেন - এবং তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবেন এবং মাস্ক পরবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

অতিথিদের তালিকায় আছেন রানি এলিজাবেথ ও ডিউক অব এডিনবরার পরিবারের সদস্যরা, এবং ডিউক অব এডিনবরার তিন জন জার্মান সদস্য।

এতে যোগ দেবার জন্য ডিউকের নাতি প্রিন্স হ্যারি - যিনি গত বছর রাজপরিবারের সক্রিয় উর্ধতন সদস্যের দায়িত্ব ত্যাগ করেছেন - তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইতোমধ্যেই ব্রিটেনে এসেছেন। তবে তার স্ত্রী মেগান সন্তানসম্ভবা থাকার কারণে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন নি।

শেষকৃত্যের শুরুতে ডিউকের মরদেহ উইণ্ডসর দুর্গের প্রাইভেট গির্জা থেকে দুর্গের রাষ্ট্রীয় প্রবেশপথে নিয়ে আসা হবে।

এর পর তার মরদেহ একটি জলপাই রঙের ল্যান্ড রোভারে করে উইণ্ডসর দুর্গের ভেতরেই সেন্ট জর্জেস চ্যাপেল নামের গির্জায় নিয়ে যাওয়া হবে।

এই বিশেষ ল্যান্ড রোভার গাড়িটিই শববাহী গাড়ি হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে - কারণ প্রিন্স ফিলিপ নিজে এটি অনেক দিন ব্যবহার করেছেন এবং এটিতে যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছে তাতেও তিনি নিজে ভুমিকা রেখেছেন।

এর পেছনে থাকবেন রানি ও ডিউকের চার সন্তান প্রিন্স চার্লস, এ্যান্ড্রু, এডওয়ার্ড এবং প্রিন্সেস অ্যান। আরো থাকবেন ডিউকের দুই নাতি প্রিন্স উইলিয়াম ও হ্যারি। সাথে থাকবেন পরিবারের অন্য কিছু সদস্য এবং ডিউকের কর্মচারীবৃন্দ।

উইণ্ডসর দুর্গের ভেতরের ঘাসে আচ্ছাদিত চতুষ্কোণ জায়গাটিতে এর আগে থেকেই সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো থাকবে হাউজহোল্ড ক্যাভালরি, ফুট গার্ড, এবং ডিউকের সাথে বিশেষ যোগাযোগ ছিল এমন সেনা ইউনিটের ছোট কয়েকটি দল।

বিকেল পৌনে তিনটায় মূল শোভাযাত্রাটি শুরু হবে। এর শুরুতে থাকবে গ্রেনাডিয়ার গার্ড নামে সামরিক বাদকদল।

রানি এলিজাবেথ স্বয়ং রাজকীয় বেন্টলি গাড়িতে করে শোভাযাত্রার পেছনে থাকবেন।

এসময় দুর্গের ভেতর তোপধ্বনি এবং গির্জার ঘন্টাধনি করা হবে।

ডিউকের মরদেহ তার মর্যাদাসূচক নিজস্ব পতাকা দিয়ে ঢাকা থাকবে - তার ওপর থাকবে পুষ্পস্তবক এবং ডিউকের নৌবাহিনীর টুপি ও তরবারি।

সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলে শোভাযাত্রার সাথে মিলিত হবেন আর্চবিশপ অব ক্যান্টারবারি - যিনি এ্যাংলিকান চার্চের প্রধান।

মূল অনুষ্ঠানে থাকবে ডিউকের স্মরণে পুরো ব্রিটেন জুড়ে এক মিনিটের নিরবতা পালন, যা শুরু ও শেষ হবে তোপধ্বনির মধ্যে দিয়ে।

এর পর গির্জার ভেতরে কফিন নিয়ে যাওয়া হবে, এবং তা একটি মঞ্চের ওপর রাখা হবে। চারজন সঙ্গীতশিল্পীর একটি দল ডিউকের পছন্দের কয়েকটি গান পরিবেশন করবে।

এর পর গির্জার আনুষ্ঠানিকতা বা সার্ভিস শেষ হলে ডিউককে সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলের রাজকীয় ভল্টে সমাহিত করা হবে।

করোনাভাইরাস সংক্রান্ত স্বাস্থ্যগত বিধিনিষেধের কারণে ব্রিটেনের জনগণকে এই শেষকৃত্যের কোন অনুষ্ঠানে যোগ না দিতে বলা হয়েছে।

এই শেষকৃত্যানুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ব্রিটেনে জাতীয় শোক পালন শেষ হবে। তবে রাজপরিবার আরো এক সপ্তাহ ধরে শোক পালন করবে, এবং তাদের বিভিন্ন অুনুষ্ঠানে যোগ দেবার সময় তারা কালো পোশাক পরবেন।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ