যুক্তরাজ্যের কিছু নারী ফেসবুকে খুঁজে নিচ্ছেন শুক্রাণু দাতা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২১, ১২:২৫
ব্রিটেনে যে দম্পতিদের সন্তান হচ্ছে না- তাদের অনেকেই নানা কারণে জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থায় উপযুক্ত চিকিৎসা পান না। ফলে তাদের কেউ কেউ গর্ভধারণের জন্য ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ থেকে খুঁজে নিচ্ছেন স্পার্ম ডোনার বা শুক্রাণু দাতা। তেমনি দুই নারী তাদের বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন বিবিসিকে।
এক বছর ধরে সন্তান নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন ক্লো আর তার সঙ্গী। কিন্তু কিছুতেই তার গর্ভসঞ্চার হচ্ছিল না।
পারিবারিক ডাক্তার তাদের বললেন, জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বা এনএইচএসের স্থানীয় ফার্টিলিটি ক্লিনিকে যেতে।
সেখানে গিয়ে নানা পরীক্ষার পর দেখা গেল, ক্লোর সঙ্গীর শুক্রাণুর কিছু সমস্যা রয়েছে এবং গর্ভধারণ করতে হলে তাকে কোনো একজন দাতার শুক্রাণু নিতে হবে।
ক্লিনিক থেকে তাদের শুক্রাণুদাতার একটি তালিকা দেয়া হলো। সেই তালিকা থেকে মাত্র একজন উপযুক্ত দাতার সন্ধান পেলেন তারা- যে ক্লোর মতো একই জাতিগোষ্ঠীর, এবং যাকে অন্য কোনো দম্পতি এখনো বেছে নেননি।
তার শুক্রাণু ব্যবহার করে ২০১৭ সালের অক্টোবরে ক্লোর প্রথম আইভিএফ বা কৃত্রিম গর্ভসঞ্চারের চেষ্টা করা হলো। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হলো না।
তখন ক্লিনিক থেকে ক্লোকে বলা হলো, তারা আইসিএসআই নামে আরেকটি পদ্ধতি চেষ্টা করে দেখতে পারেন- যাতে সরাসরি ডিম্বাণুর ভেতরে শুক্রাণু প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু এ পদ্ধতিটি আরও ব্যয়বহুল, এবং এর খরচ তাদেরই বহন করতে হবে।
‘আমাদের পক্ষে তখন হাজার হাজার পাউণ্ড খরচ করা সম্ভব ছিল না’- বলছিলেন ক্লো।
ফেসবুকে শুক্রাণু দাতার গ্রুপ
ততদিনে ক্লো আর তার সঙ্গী বিয়ে করেছেন। তার স্বামীই একদিন বললেন, অনলাইনে একজন শুক্রাণু দাতার খোঁজ করলে কেমন হয়? ক্লো তাই করলেন। তবে তার বন্ধুরা ও পরিবার যাতে ব্যাপারটা জানতে না পারে- সে জন্য তিনি একটা ভুয়া নাম নিয়ে ফেসবুকে কিছু গ্রুপে যোগদান করলেন, এবং কয়েকদিনের মধ্যে একজন সম্ভাব্য শুক্রাণু দাতা পেয়েও গেলেন। সেই শুক্রাণু দাতা লোকটি তার মেডিক্যাল ও পারিবারিক ইতিহাস জানালেন। তার কোনো যৌন রোগের সংক্রমণ হয়েছিল কিনা- তা চেক করার দলিলপত্রও দিলেন। দাতার সাথে দেখা কার পার্কে
এসব কিছুর পর ক্লো যেখানে থাকতেন- তার কয়েক মাইল দূরে একটি কারপার্কে লোকটির সাথে দেখা করার পরিকল্পনা করা হলো। ‘প্ল্যানটা ছিল, সেই দাতা তার নিজের বীর্য নিয়ে আসবেন, আমাদের দেখা হবে। তিনি আমার হাতে জিনিসটা তুলে দেবেন। তার পর আমি একটা টয়লেটে ঢুকবো এবং যা করতে হবে তা করব’- বলছিলেন ক্লো। তাই করা হলো। ক্লোর নিরাপত্তার কথা ভেবে তার স্বামীও সাথেই এসেছিলেন এবং গাড়িতে বসে অপেক্ষা করছিলেন। তারা মোট ৬ বার এটা করেছিলেন। ক্লো এতে একবার গর্ভবতী হয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার মিসক্যারেজ বা গর্ভপাত হয়ে যায়। প্রতিবার তারা সেই দাতা লোকটিকে তার শুক্রাণুর জন্য ৫০ পাউণ্ড এবং যাতায়াতের জন্য ১০ পাউণ্ড দিয়েছিলেন। বলা দরকার যে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে ব্রিটেনের আইনকানুনে কিছু অস্পষ্টতা আছে। ক্লো-র বাড়িতে এলেন শুক্রাণু দাতা
এর মধ্যে শুরু হলো করোনাভাইরাস মহামারি। লকডাউনের কারণে কোথাও যাতায়াত করার ওপর বিধিনিষেধ থাকায় ক্লো এবং তার স্বামী ভিন্ন উপায় বের করলেন। তারা ফেসবুক থেকেই অন্য একজন শুক্রাণুদাতা খুঁজে বের করলেন। এই লোকটি এলেন ক্লোর বাড়িতে। এতে ব্যাপারটা তার জন্য অনেক বেশি স্বস্তিদায়ক হয়েছিল- বলছিলেন ক্লো। ‘এতে আমি আমার নিজের সময়-সুবিধা অনুযায়ী কাজটা করতে পেরেছিলাম। তাড়াহুড়োর কিছু ছিল না। আমাকে একটা টয়লেটে ঢুকতে হয়নি। নিজের বাড়িতে হওয়ায় ব্যাপারটা আমার জন্য অনেক বেশি স্বস্তিদায়ক হয়েছিল।’ এবং এবার ক্লো সাফল্য পান। তিনি এখন সন্তানসম্ভবা। মা হওয়ার আনন্দ
‘আমরা ভীষণ আনন্দিত। অনেক দিন চেষ্টার পর এখন আমাদের একটি সন্তান হতে যাচ্ছে, পরিবার হতে যাচ্ছে- যা আমরা দুজনে অনেক দিন ধরে চেয়ে আসছি’- বলছেন ক্লো। ক্লো এবং তার স্বামী যে সন্তানের জন্য একজন শুক্রাণুদাতা ব্যবহার করেছেন- তা তারা তাদের পরিবার বা বন্ধুদের বলেননি। একটা কারণ হচ্ছে, ক্লোর স্বামী যে সন্তান উৎপাদনে অক্ষম তা তারা কাউকে জানতে দিতে চান না। আরেকটা কারণ হলো, কিছু লোক আছে যারা ভাববে যে এটা একটা গুরুতর অন্যায় কাজ করেছেন তারা। শুক্রাণুদাতাকে গর্ভবতী হওয়ার কথা জানানো হয়েছে
ক্লো বলছেন, সৌজন্যবোধ থেকেই তিনি তার গর্ভবতী হওয়ার কথা শুক্রাণুদাতাকে জানিয়েছেন। তবে তিনি বলছেন, এ শিশুর ওপর দাতার কোনো অধিকার থাকবে না এবং সন্তানের জন্ম সনদেও থাকবে ক্লোর স্বামীর নাম। এই দাতা লোকটি আরও সন্তানের পিতা হয়েছেন। একটি ক্লিনিকের মাধ্যমে তিনি অতীতে শুক্রাণু দান করেছেন। তবে ক্লিনিকের একটি নিয়ম আছে যে একজন দাতা ১০টির বেশি পরিবারকে তার শুক্রাণু দান করতে পারবেন না- যে সীমা তিনি ইতোমধ্যেই স্পর্শ করেছেন। তবে ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ হয়েছে এমন আরও তিনজন নারী তার শুক্রাণু নিয়ে সন্তানের মা হয়েছেন। ২০০৫ সালে ব্রিটেনে একটি আইন হয়েছে যার ফলে দান-করা শুক্রাণু থেকে জন্ম হয়েছে এমন সন্তানের বয়স ১৮ হলে তারা তাদের আসল পিতার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে। তবে ক্লো এবং তার স্বামী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তাদের সন্তানের কিভাবে জন্ম হয়েছিল তা তাকে বলা হবে না- যদি না কোন মেডিক্যাল কারণ থাকে। ‘তাদের এটা জানার দরকারও নেই’ বলেন ক্লো- ‘আমরা একটি সন্তান চেয়েছিলাম এবং এটাই ছিল আমাদের একমাত্র বিকল্প। আইভিএফের খরচ যে যোগাতে পারবে না - তার জন্য আর কোন উপায় নেই।’ এতে অনেক রকম বিপদের ঝুঁকি রয়েছে
ক্লোর ক্ষেত্রে বলতে হবে যে তিনি সফল হয়েছেন। কিন্তু তিনি জানেন যে এতে অনেক ঝুঁকি আছে। ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে তিনি জেনেছেন যে এতে বহু রকম অনাকাক্স্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি জেনেছেন, অনেক সময় স্পার্ম ডোনাররা যখন জানতে পারেন যে তার শুক্রাণু ব্যবহার করে কোনো নারী গর্ভবতী হয়েছেন- তখন তিনি সেই নারীর জীবনের অংশ হতে চান অথবা সেই সন্তানের সাথে যোগাযোগ রাখতে চান। এমন নারীর কথাও ক্লো জানেন, যারা একজন দাতাকে শুক্রাণু নিয়ে আসতে বলার পর সেই লোকটি এসে বলেছেন, তিনি যৌনমিলন করতে চান। অবশ্য ফেসবুক গ্রুপগুলো এ ধরনের লোকদের দূরে সরিয়ে রাখতে সবসময়ই চেষ্টা করে থাকে। ক্লো বলেন, এ জন্য ফেসবুক গ্রুপগুলো ঝুঁকিপূর্ণ পুরুষদের তালিকা করেছে, যে লোকদেরকে এড়িয়ে চলতে হবে তাদের নামের তালিকাও তৈরি করেছে। ‘কিন্তু এসব লোকেরা আবার একাধিক নামে অনেক অ্যাকাউন্ট চালায়’- জানান ক্লো। লোরেনের বিচিত্র কিছু অভিজ্ঞতা
লোরেন একজন লেসবিয়ান নারী। তার বয়স যখন ৩৮ তখন তিনি এবং তার নারী সঙ্গিনী সিদ্ধান্ত নেন যে- তারা একটা পরিবার গড়বেন, সন্তান নেবেন। কিন্তু ব্রিটেনে সরকারী স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থায় সমলিঙ্গের দম্পতির জন্য এধরণের চিকিৎসার ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ আছে। আর প্রাইভেট ক্লিনিকে কোনো দাতার শুক্রাণু ব্যবহার করে আইভিএফ বা ‘টেস্টটিউব বেবি’ নেয়া অত্যন্ত ব্যয়বহুল। ফলে লোরেন আর কোন উপায় না দেখে ফেসবুকের এক গ্রুপে যোগ দিলেন। তিনি তার প্রোফাইলে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন তিনি শুধু কৃত্রিম গর্ভসঞ্চার করতে চান- শুক্রাণু দাতার সাথে যৌনমিলনের কোনো আগ্রহ তার নেই। তিনি তার ঋতুচক্রের সময়ের হিসেব রাখা শুরু করলেন। আর যোগাযোগ রাখতে লাগলেন ২০ জন সম্ভাব্য শুক্রাণুদাতার সাথে । ‘তাদের কেউ কেউ খুব চমৎকার লোক। কিন্তু সবাই নয়।’ ‘একজন দাতা আমাকে সাহায্য করতে রাজি হওয়ার পর বলা শুরু করল, ‘‘আমার মনে হচ্ছে তুমি খুবই সুন্দরী’ তার পর সে বলল সে ‘প্রাকৃতিক পন্থায় গর্ভধারণ চায়’ অর্থাৎ সেক্স করতে চায়।’’ “সে তখন আমাকে একটি অশালীন ছবিও পাঠায়।” আবার অন্য কিছু দাতা আছে- যারা হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। লোরেন তাদের সম্পর্কে জানার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অনলাইন চ্যাট করেছেন। তাদের প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল তথ্য সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু যেই তার ঋতুচক্রে গর্ভসঞ্চারেরেউপযুক্ত সময় এলো এবং দাতার সহায়তা দরকার হলো- অমনি তারা মেসেজের জবাব দেয়া বন্ধ করে দিল। “আপনি তখন দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলেন, তাদেরকে ঘন ঘন টেক্সট করতে শুরু করলেন। তার পর হঠাৎ একদিন আপনাকে ওদিক থেকে ব্লক করে দেয়া হলো।” লোরেন বলছেন, তার ক্ষেত্রে এ রকম ঘটনা বেশ কয়েকবার ঘটেছে। “আমার মন ভেঙে গিয়েছিল। আমি ভাবছিলাম- এ চেষ্টা ছেড়ে দেই কারণ আমি ব্যাপারটা নিতে পারছিলাম না।” তার পর একদিন রাতে ফেসবুকে আরেকজন দাতার সাথে তার আলাপ হলো। তার একদিন পরেই লোরেনের ওভুলেশন অর্থাৎ ঋতুচক্রের উর্বর সময়টা শুরু হওয়ার কথা। সেই সময় ফেসবুক গ্রুপে তিনি একজন লোককে পেলেন- যিনি এক পোস্টে দীর্ঘ ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে কেন তিনি শুক্রাণু দান করতে চান। লোকটির ভাই একজন সমকামী এবং সন্তান জন্ম দিতে অক্ষম- তাই তিনি ঠিক করেছেন এমন পরিস্থিতিতে পড়া লোকদের তিনি সাহায্য করবেন। লোরেন বলছেন, তিনি এই লোকটির সাথে কথা বলতে শুরু করলেন এবং এই প্রথমবার তিনি নন, বরং সেই লোকটিই তাকে নানা রকম প্রশ্ন করতে শুরু করলেন। লোকটি বললেন, তিনি নিজে কিছু নিয়ম মেনে চলেন। তিনি শুধু প্রতিষ্ঠিত দম্পতি - যারা ধূমপায়ী বা মাদকসেবী নন- তাদেরই শুক্রাণু দান করবেন। তিন ঘন্টা ধরে কথাবার্তা হবার পর লোরেন অবশেষে লোকটিকে জানালেন, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তার ওভুলেশন হবে। পর দিন লোকটি লন্ডন থেকে ট্রেনে উঠলেন। তিনি শুক্রাণুর জন্য কোনো অর্থ নেননি। লোরেন তাকে শুধু তার ট্রেনভাড়া বাবদ ৩৬ পাউণ্ড ফেরত দিলেন। তিন বার চেষ্টার পর লোরেন আবিষ্কার করলেন, তিনি গর্ভবতী হয়েছেন। তার কন্যাসন্তানের বয়স এখন আট মাস। তিনি সেই দাতা লোকটিকে মেয়ের একটি ছবি পাঠিয়েছেন। সেই লোকটিও তার অনুমতি নিয়ে ফেসবুকে তার সন্তান জন্মের কথা জানিয়েছেন। তিনি নাকি তার প্রতিটি ‘সাফল্যের’ সময়ই এটা করে থাকেন। লোরেন এভাবেই জানতে পেরেছেন যে তার এ রকম ১৪টি সন্তান হয়েছে। আর লোরেনের মেয়ে হওয়ার পর সেই দাতার আরো তিনটি সন্তান জন্মেছে। লোরেন পরিকল্পনা করেছেন যে তার মেয়েকে তিনি এক সময় জানাবেন যে একজন বিশেষ ভদ্রলোক তাদের মতো পরিবারকে সাহায্য করে চলেছেন। শুক্রাণু দাতার ছোটবেলার একটি ছবিও আছে তার কাছে। লোরেনের ইচ্ছে আছে যে একসময় তিনি সেই ছবিটি তার মেয়েকে দেবেন, ফেসবুকে দেয়া তার নামটিও জানাবেন। যদিও তিনি জানেন যে সেই নাম তার আসল নাম নয়। লোরেন এবং সেই দাতা ১৬ পাতার একটি লিখিত দলিলে স্বাক্ষর করেছেন- যাতে বলা আছে যে তিনি বাচ্চার সাথে কোনো সম্পর্ক রাখবেন না, এবং লোরেনের পরিবারও তার কাছে কোন টাকা দাবি করবে না। তবে আদালতে হয়তো এ দলিলের কোন মূল্য থাকবে না। কারণ এটা কোন আইনজীবীর মাধ্যমে করা হয়নি - বলছেন লোরেন। এসব ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে সঠিকভাবে চুক্তি করা না হলে বর্তমান আইনের চোখে সন্তানের পিতা হিসেবে হয়তো শুক্রাণু দাতাকেই দেখা হবে, এবং অভিভাবকত্ব সংক্রান্ত দায়িত্ব হয়তো তার ওপরই পড়তে পারে। এ ধরনের চুক্তিতে যারা জড়িত হয়েছেন তাদের সুরক্ষার জন্য এখনো ব্রিটেনে কোন আইন নেই- বলেন যুক্তরাজ্যের ফাটিলিটি বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা এইচএফইএ’র চেয়ারপারসন স্যালি চেশায়ার। তা ছাড়া কোনো ক্লিনিকের বাইরে শুক্রাণু বেচাকেনার ব্যাপারে গত ৫ বছরে কেউ পুলিশের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে- এমন কোনো নজিরও নেই। বিবিসি এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছে যে এরকম কোন রিপোর্ট কখনো তারা পায়নি। ফেসবুকের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ফেসবুকে আমরা লোকজনকে শুক্রাণু দান নিয়ে আলোচনা করতে দিয়ে থাকি। কিন্তু স্থানীয় আইন ভঙ্গ করে এমন যে কোন কনটেন্ট সরিয়ে ফেলতে আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাখে কাজ করি। লোরেন মনে করেন ব্রিটেনের প্রাইভেট ক্লিনিকে শুক্রাণুর দাম অত্যন্ত বেশি এবং এটা বিনামূল্যের সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় পাওয়ার সুযোগ থাকা উচিত। তার কথা, ‘আমাদের হাজার হাজার পাউণ্ড নেই বলেই আমরা এসব জঘন্য পন্থা নিতে বাধ্য হচ্ছি।’ ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবার একজন মুখপাত্র বলেন, এসব ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে ক্লিনিক্যাল কমিশনিং গ্রুপগুলো।
খবর বিবিসি বাংলার এবিএন/সাদিক/জসিম
ততদিনে ক্লো আর তার সঙ্গী বিয়ে করেছেন। তার স্বামীই একদিন বললেন, অনলাইনে একজন শুক্রাণু দাতার খোঁজ করলে কেমন হয়? ক্লো তাই করলেন। তবে তার বন্ধুরা ও পরিবার যাতে ব্যাপারটা জানতে না পারে- সে জন্য তিনি একটা ভুয়া নাম নিয়ে ফেসবুকে কিছু গ্রুপে যোগদান করলেন, এবং কয়েকদিনের মধ্যে একজন সম্ভাব্য শুক্রাণু দাতা পেয়েও গেলেন। সেই শুক্রাণু দাতা লোকটি তার মেডিক্যাল ও পারিবারিক ইতিহাস জানালেন। তার কোনো যৌন রোগের সংক্রমণ হয়েছিল কিনা- তা চেক করার দলিলপত্রও দিলেন। দাতার সাথে দেখা কার পার্কে
এসব কিছুর পর ক্লো যেখানে থাকতেন- তার কয়েক মাইল দূরে একটি কারপার্কে লোকটির সাথে দেখা করার পরিকল্পনা করা হলো। ‘প্ল্যানটা ছিল, সেই দাতা তার নিজের বীর্য নিয়ে আসবেন, আমাদের দেখা হবে। তিনি আমার হাতে জিনিসটা তুলে দেবেন। তার পর আমি একটা টয়লেটে ঢুকবো এবং যা করতে হবে তা করব’- বলছিলেন ক্লো। তাই করা হলো। ক্লোর নিরাপত্তার কথা ভেবে তার স্বামীও সাথেই এসেছিলেন এবং গাড়িতে বসে অপেক্ষা করছিলেন। তারা মোট ৬ বার এটা করেছিলেন। ক্লো এতে একবার গর্ভবতী হয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার মিসক্যারেজ বা গর্ভপাত হয়ে যায়। প্রতিবার তারা সেই দাতা লোকটিকে তার শুক্রাণুর জন্য ৫০ পাউণ্ড এবং যাতায়াতের জন্য ১০ পাউণ্ড দিয়েছিলেন। বলা দরকার যে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে ব্রিটেনের আইনকানুনে কিছু অস্পষ্টতা আছে। ক্লো-র বাড়িতে এলেন শুক্রাণু দাতা
এর মধ্যে শুরু হলো করোনাভাইরাস মহামারি। লকডাউনের কারণে কোথাও যাতায়াত করার ওপর বিধিনিষেধ থাকায় ক্লো এবং তার স্বামী ভিন্ন উপায় বের করলেন। তারা ফেসবুক থেকেই অন্য একজন শুক্রাণুদাতা খুঁজে বের করলেন। এই লোকটি এলেন ক্লোর বাড়িতে। এতে ব্যাপারটা তার জন্য অনেক বেশি স্বস্তিদায়ক হয়েছিল- বলছিলেন ক্লো। ‘এতে আমি আমার নিজের সময়-সুবিধা অনুযায়ী কাজটা করতে পেরেছিলাম। তাড়াহুড়োর কিছু ছিল না। আমাকে একটা টয়লেটে ঢুকতে হয়নি। নিজের বাড়িতে হওয়ায় ব্যাপারটা আমার জন্য অনেক বেশি স্বস্তিদায়ক হয়েছিল।’ এবং এবার ক্লো সাফল্য পান। তিনি এখন সন্তানসম্ভবা। মা হওয়ার আনন্দ
‘আমরা ভীষণ আনন্দিত। অনেক দিন চেষ্টার পর এখন আমাদের একটি সন্তান হতে যাচ্ছে, পরিবার হতে যাচ্ছে- যা আমরা দুজনে অনেক দিন ধরে চেয়ে আসছি’- বলছেন ক্লো। ক্লো এবং তার স্বামী যে সন্তানের জন্য একজন শুক্রাণুদাতা ব্যবহার করেছেন- তা তারা তাদের পরিবার বা বন্ধুদের বলেননি। একটা কারণ হচ্ছে, ক্লোর স্বামী যে সন্তান উৎপাদনে অক্ষম তা তারা কাউকে জানতে দিতে চান না। আরেকটা কারণ হলো, কিছু লোক আছে যারা ভাববে যে এটা একটা গুরুতর অন্যায় কাজ করেছেন তারা। শুক্রাণুদাতাকে গর্ভবতী হওয়ার কথা জানানো হয়েছে
ক্লো বলছেন, সৌজন্যবোধ থেকেই তিনি তার গর্ভবতী হওয়ার কথা শুক্রাণুদাতাকে জানিয়েছেন। তবে তিনি বলছেন, এ শিশুর ওপর দাতার কোনো অধিকার থাকবে না এবং সন্তানের জন্ম সনদেও থাকবে ক্লোর স্বামীর নাম। এই দাতা লোকটি আরও সন্তানের পিতা হয়েছেন। একটি ক্লিনিকের মাধ্যমে তিনি অতীতে শুক্রাণু দান করেছেন। তবে ক্লিনিকের একটি নিয়ম আছে যে একজন দাতা ১০টির বেশি পরিবারকে তার শুক্রাণু দান করতে পারবেন না- যে সীমা তিনি ইতোমধ্যেই স্পর্শ করেছেন। তবে ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ হয়েছে এমন আরও তিনজন নারী তার শুক্রাণু নিয়ে সন্তানের মা হয়েছেন। ২০০৫ সালে ব্রিটেনে একটি আইন হয়েছে যার ফলে দান-করা শুক্রাণু থেকে জন্ম হয়েছে এমন সন্তানের বয়স ১৮ হলে তারা তাদের আসল পিতার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে। তবে ক্লো এবং তার স্বামী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তাদের সন্তানের কিভাবে জন্ম হয়েছিল তা তাকে বলা হবে না- যদি না কোন মেডিক্যাল কারণ থাকে। ‘তাদের এটা জানার দরকারও নেই’ বলেন ক্লো- ‘আমরা একটি সন্তান চেয়েছিলাম এবং এটাই ছিল আমাদের একমাত্র বিকল্প। আইভিএফের খরচ যে যোগাতে পারবে না - তার জন্য আর কোন উপায় নেই।’ এতে অনেক রকম বিপদের ঝুঁকি রয়েছে
ক্লোর ক্ষেত্রে বলতে হবে যে তিনি সফল হয়েছেন। কিন্তু তিনি জানেন যে এতে অনেক ঝুঁকি আছে। ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে তিনি জেনেছেন যে এতে বহু রকম অনাকাক্স্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি জেনেছেন, অনেক সময় স্পার্ম ডোনাররা যখন জানতে পারেন যে তার শুক্রাণু ব্যবহার করে কোনো নারী গর্ভবতী হয়েছেন- তখন তিনি সেই নারীর জীবনের অংশ হতে চান অথবা সেই সন্তানের সাথে যোগাযোগ রাখতে চান। এমন নারীর কথাও ক্লো জানেন, যারা একজন দাতাকে শুক্রাণু নিয়ে আসতে বলার পর সেই লোকটি এসে বলেছেন, তিনি যৌনমিলন করতে চান। অবশ্য ফেসবুক গ্রুপগুলো এ ধরনের লোকদের দূরে সরিয়ে রাখতে সবসময়ই চেষ্টা করে থাকে। ক্লো বলেন, এ জন্য ফেসবুক গ্রুপগুলো ঝুঁকিপূর্ণ পুরুষদের তালিকা করেছে, যে লোকদেরকে এড়িয়ে চলতে হবে তাদের নামের তালিকাও তৈরি করেছে। ‘কিন্তু এসব লোকেরা আবার একাধিক নামে অনেক অ্যাকাউন্ট চালায়’- জানান ক্লো। লোরেনের বিচিত্র কিছু অভিজ্ঞতা
লোরেন একজন লেসবিয়ান নারী। তার বয়স যখন ৩৮ তখন তিনি এবং তার নারী সঙ্গিনী সিদ্ধান্ত নেন যে- তারা একটা পরিবার গড়বেন, সন্তান নেবেন। কিন্তু ব্রিটেনে সরকারী স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থায় সমলিঙ্গের দম্পতির জন্য এধরণের চিকিৎসার ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ আছে। আর প্রাইভেট ক্লিনিকে কোনো দাতার শুক্রাণু ব্যবহার করে আইভিএফ বা ‘টেস্টটিউব বেবি’ নেয়া অত্যন্ত ব্যয়বহুল। ফলে লোরেন আর কোন উপায় না দেখে ফেসবুকের এক গ্রুপে যোগ দিলেন। তিনি তার প্রোফাইলে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন তিনি শুধু কৃত্রিম গর্ভসঞ্চার করতে চান- শুক্রাণু দাতার সাথে যৌনমিলনের কোনো আগ্রহ তার নেই। তিনি তার ঋতুচক্রের সময়ের হিসেব রাখা শুরু করলেন। আর যোগাযোগ রাখতে লাগলেন ২০ জন সম্ভাব্য শুক্রাণুদাতার সাথে । ‘তাদের কেউ কেউ খুব চমৎকার লোক। কিন্তু সবাই নয়।’ ‘একজন দাতা আমাকে সাহায্য করতে রাজি হওয়ার পর বলা শুরু করল, ‘‘আমার মনে হচ্ছে তুমি খুবই সুন্দরী’ তার পর সে বলল সে ‘প্রাকৃতিক পন্থায় গর্ভধারণ চায়’ অর্থাৎ সেক্স করতে চায়।’’ “সে তখন আমাকে একটি অশালীন ছবিও পাঠায়।” আবার অন্য কিছু দাতা আছে- যারা হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। লোরেন তাদের সম্পর্কে জানার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অনলাইন চ্যাট করেছেন। তাদের প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল তথ্য সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু যেই তার ঋতুচক্রে গর্ভসঞ্চারেরেউপযুক্ত সময় এলো এবং দাতার সহায়তা দরকার হলো- অমনি তারা মেসেজের জবাব দেয়া বন্ধ করে দিল। “আপনি তখন দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলেন, তাদেরকে ঘন ঘন টেক্সট করতে শুরু করলেন। তার পর হঠাৎ একদিন আপনাকে ওদিক থেকে ব্লক করে দেয়া হলো।” লোরেন বলছেন, তার ক্ষেত্রে এ রকম ঘটনা বেশ কয়েকবার ঘটেছে। “আমার মন ভেঙে গিয়েছিল। আমি ভাবছিলাম- এ চেষ্টা ছেড়ে দেই কারণ আমি ব্যাপারটা নিতে পারছিলাম না।” তার পর একদিন রাতে ফেসবুকে আরেকজন দাতার সাথে তার আলাপ হলো। তার একদিন পরেই লোরেনের ওভুলেশন অর্থাৎ ঋতুচক্রের উর্বর সময়টা শুরু হওয়ার কথা। সেই সময় ফেসবুক গ্রুপে তিনি একজন লোককে পেলেন- যিনি এক পোস্টে দীর্ঘ ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে কেন তিনি শুক্রাণু দান করতে চান। লোকটির ভাই একজন সমকামী এবং সন্তান জন্ম দিতে অক্ষম- তাই তিনি ঠিক করেছেন এমন পরিস্থিতিতে পড়া লোকদের তিনি সাহায্য করবেন। লোরেন বলছেন, তিনি এই লোকটির সাথে কথা বলতে শুরু করলেন এবং এই প্রথমবার তিনি নন, বরং সেই লোকটিই তাকে নানা রকম প্রশ্ন করতে শুরু করলেন। লোকটি বললেন, তিনি নিজে কিছু নিয়ম মেনে চলেন। তিনি শুধু প্রতিষ্ঠিত দম্পতি - যারা ধূমপায়ী বা মাদকসেবী নন- তাদেরই শুক্রাণু দান করবেন। তিন ঘন্টা ধরে কথাবার্তা হবার পর লোরেন অবশেষে লোকটিকে জানালেন, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তার ওভুলেশন হবে। পর দিন লোকটি লন্ডন থেকে ট্রেনে উঠলেন। তিনি শুক্রাণুর জন্য কোনো অর্থ নেননি। লোরেন তাকে শুধু তার ট্রেনভাড়া বাবদ ৩৬ পাউণ্ড ফেরত দিলেন। তিন বার চেষ্টার পর লোরেন আবিষ্কার করলেন, তিনি গর্ভবতী হয়েছেন। তার কন্যাসন্তানের বয়স এখন আট মাস। তিনি সেই দাতা লোকটিকে মেয়ের একটি ছবি পাঠিয়েছেন। সেই লোকটিও তার অনুমতি নিয়ে ফেসবুকে তার সন্তান জন্মের কথা জানিয়েছেন। তিনি নাকি তার প্রতিটি ‘সাফল্যের’ সময়ই এটা করে থাকেন। লোরেন এভাবেই জানতে পেরেছেন যে তার এ রকম ১৪টি সন্তান হয়েছে। আর লোরেনের মেয়ে হওয়ার পর সেই দাতার আরো তিনটি সন্তান জন্মেছে। লোরেন পরিকল্পনা করেছেন যে তার মেয়েকে তিনি এক সময় জানাবেন যে একজন বিশেষ ভদ্রলোক তাদের মতো পরিবারকে সাহায্য করে চলেছেন। শুক্রাণু দাতার ছোটবেলার একটি ছবিও আছে তার কাছে। লোরেনের ইচ্ছে আছে যে একসময় তিনি সেই ছবিটি তার মেয়েকে দেবেন, ফেসবুকে দেয়া তার নামটিও জানাবেন। যদিও তিনি জানেন যে সেই নাম তার আসল নাম নয়। লোরেন এবং সেই দাতা ১৬ পাতার একটি লিখিত দলিলে স্বাক্ষর করেছেন- যাতে বলা আছে যে তিনি বাচ্চার সাথে কোনো সম্পর্ক রাখবেন না, এবং লোরেনের পরিবারও তার কাছে কোন টাকা দাবি করবে না। তবে আদালতে হয়তো এ দলিলের কোন মূল্য থাকবে না। কারণ এটা কোন আইনজীবীর মাধ্যমে করা হয়নি - বলছেন লোরেন। এসব ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে সঠিকভাবে চুক্তি করা না হলে বর্তমান আইনের চোখে সন্তানের পিতা হিসেবে হয়তো শুক্রাণু দাতাকেই দেখা হবে, এবং অভিভাবকত্ব সংক্রান্ত দায়িত্ব হয়তো তার ওপরই পড়তে পারে। এ ধরনের চুক্তিতে যারা জড়িত হয়েছেন তাদের সুরক্ষার জন্য এখনো ব্রিটেনে কোন আইন নেই- বলেন যুক্তরাজ্যের ফাটিলিটি বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা এইচএফইএ’র চেয়ারপারসন স্যালি চেশায়ার। তা ছাড়া কোনো ক্লিনিকের বাইরে শুক্রাণু বেচাকেনার ব্যাপারে গত ৫ বছরে কেউ পুলিশের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে- এমন কোনো নজিরও নেই। বিবিসি এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছে যে এরকম কোন রিপোর্ট কখনো তারা পায়নি। ফেসবুকের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ফেসবুকে আমরা লোকজনকে শুক্রাণু দান নিয়ে আলোচনা করতে দিয়ে থাকি। কিন্তু স্থানীয় আইন ভঙ্গ করে এমন যে কোন কনটেন্ট সরিয়ে ফেলতে আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাখে কাজ করি। লোরেন মনে করেন ব্রিটেনের প্রাইভেট ক্লিনিকে শুক্রাণুর দাম অত্যন্ত বেশি এবং এটা বিনামূল্যের সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় পাওয়ার সুযোগ থাকা উচিত। তার কথা, ‘আমাদের হাজার হাজার পাউণ্ড নেই বলেই আমরা এসব জঘন্য পন্থা নিতে বাধ্য হচ্ছি।’ ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবার একজন মুখপাত্র বলেন, এসব ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে ক্লিনিক্যাল কমিশনিং গ্রুপগুলো।
খবর বিবিসি বাংলার এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ