আমরা পুরো অবরুদ্ধ হয়ে আছি : উহান থেকে বাংলাদেশি ছাত্রী

চীনের যে শহর থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হয়, সেই উহান শহরে ৩ শতাধিক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আটকে পড়েছেন। তারা সবাই যার যার ছাত্রাবাসের রুমের ভেতরে প্রায় বন্দি অবস্থায় আছেন। বাইরে বেরুতে পারছেন না, খাবার ফুরিয়ে আসছে, আতঙ্কিত উহান নগরীতে এখন তাদের দিন কাটছে দেশে ফেরার প্রতীক্ষায়।

‘আমরা দেশে ফিরতে চাই,’ বলছেন তারা।

বিবিসি বাংলার সঙ্গে স্কাইপে কথা বলেছেন উহানে এ রকম দুজন বাংলাদেশি।

তাহকিম আনজুম মৃদুলা, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের ইউনিভার্সিটিতে আমরা ১২৭ জনের মতো বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী আছি। আমাদের যেন এখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। কারণ উহানই এখন সবচেয়ে বেশি এই ভাইরাসের শিকার হয়েছে। আমাদের ডরমিটরির বাইরে একেবারেই যাওয়া নিষেধ। আমরা টোটাল লকডাউনের (পুরোপুরি অবরুদ্ধ) মধ্যে আছি।’

মৃদুলা বলেন, ‘আমাদের খাবারের সংগ্রহ খুবই সীমিত। মাস্ক না পরে, এমনকি রুমের বাইরে পর্যন্ত যেতে নিষেধ করা হয়েছে। একটা আতঙ্ক কাজ করছে আমাদের মধ্যে। বাতাসে বেরিয়ে আমরা না আবার এই ভাইরাসের আক্রমণের শিকার হই।’

তিনি বলেন, ‘দেশে বাবা-মা খুবই চিন্তিত। তারা চাইছেন আমরা দেশে ফিরে যাই। আমরা দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছি। অপেক্ষায় আছি কখন একটা পদক্ষেপ নেয়া হয়। আমরা সবাই দেশে ফিরে যেতে চাই। যত দ্রুত সম্ভব। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।’

রাকিবিল হাফিজ, উহানে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি বলেন, ‘আজ কয়েকদিন ধরে এই ডরমিটরিতে আমরা অবরুদ্ধ। শুয়ে-বসে দিন কাটাচ্ছি। এটা একটা ইন্টারন্যাশনাল হোস্টেলের মতো। পাঁচশর মতো বিদেশি ছাত্রছাত্রী আছে এখানে। আমরা বাংলাদেশিরা ছাড়াও আছে রাশিয়া, কাজাখাস্তান, উজবেকিস্তান, ভারত, পাকিস্তান থেকে শুরু করে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের ছেলেমেয়েরা।’

রাকিবিল বলেন, ‘মাঝখানে আমাদের খাবার পর্যন্ত ফুরিয়ে গিয়েছিল। এখন আবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করেছেন। ইউনিভার্সিটি এই মুহূর্তে বন্ধ, চাইনিজ লুনার ইয়ারের ছুটি। ফেব্রুয়ারির ১৬ তারিখে খোলার কথা, কিন্তু শোনা যাচ্ছে এটি পিছিয়ে যেতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ দূতাবাস আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা সব তথ্য নিয়ে আমাদের তালিকাভুক্ত করছেন। এখানে যারা মাস্টার্সের ছাত্র, তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাস যোগাযোগ করছে। তাদের কাছে আমাদের টোটাল সংখ্যা জানতে চেয়েছে। কত ছাত্রছাত্রী এখন আমরা এখানে আছি।’
খবর বিবিসি বাংলা

এবিএন/সাদিক/জসিম