প্রবাসে আর্তনাদ
উন্নত জীবনের আশায় দেশ ছেড়ে ফিরছে লাশ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০১৯, ০০:৩১
বাংলাদেশি শ্রমিকদের বড় একটি অংশ সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কর্মরত রয়েছেন। যেখানে প্রায় প্রতিদিন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অভিবাসী শ্রমিকরা। প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার নারী শ্রমিকরা। উন্নত জীবনের আশায় প্রবাসে গিয়ে বিভিন্ন সময় লাশ হয়ে দেশে ফিরতে হচ্ছে তাদের। গত দশ বছরে এ হিসাবটি ২৭ হাজার ছুঁই ছুঁই করছে। ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিদেশ থেকে ২৬ হাজার ৭৫২ জন কর্মীর মরদেহ দেশে ফিরেছে। এমন তথ্য জানিয়েছে ‘নারীশ্রমিক কণ্ঠ’ নামে একটি সংগঠন।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। অভিবাসী নারী শ্রমিকের নিরাপদ বিদেশ গমন ও নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিতের দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন—কর্মজীবী নারীর পরিচালক রাহেলা রব্বানী, নারী শ্রমিক জোটের সভাপতি উম্মে হাসান ঝলমল, প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুন নাহার প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অভিবাসী নারী শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। সরকারের বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন-২০১৩ যথাযথভাবে প্রয়োগ হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুক্তভোগী নারী শ্রমিকরা বাঁচার আর্তনাদ জানাচ্ছেন। তবু এ বিষয়ে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। যে কারণে প্রবাসে দীর্ঘ হচ্ছে অভিবাসী শ্রমিকদের মৃত্যুর মিছিল। প্রায় প্রতিদিনই দেশে ফিরছে অভিবাসী নারী শ্রমিকদের মৃতদেহ।
সংগঠনটি বলছে, গত ১০ বছরে ২৬ হাজার ৭৫২ শ্রমিদের মরদেহ দেশে ফিরেছে। সর্বশেষ ৯ মাসে এ সংখ্যাটি প্রায় ৩ হাজার ছাড়িয়েছে।
এ দিকে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তথ্যে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ১১ জন শ্রমিক লাশ হয়ে দেশে ফিরছেন। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। যার মধ্যে শুধুমাত্র ৫ শতাংশ শ্রমিকের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা স্ট্রোক, দুর্ঘটনা, হত্যা বা আত্মহত্যার শিকার।
গত তিন বছরে মধ্যপ্রাচ্য থেকে লাশ হয়ে দেশে ফেরাদের মধ্যে ৩১১ নারীর লাশের তথ্য পর্যালোচনা করে কল্যাণ বোর্ড। এতে দেখা যায়, আত্মহত্যায় প্রাণ দিয়েছেন ৫৩ নারী। স্ট্রোকে মৃত্যু ১২০ জনের। ৫৬ জনের মৃত্যু হয় দুর্ঘটনায়।
অপরদিকে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা একাধিক সংস্থার মতে, অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়েই আত্মহত্যা করেন নারী শ্রমিকেরা। কখনো কখনো হত্যার পর আত্মহত্যা বলেও চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
অভিবাসী নারী শ্রমিকদের সুরক্ষায় ১৩ দাবি :
প্রবাসে কর্মরত শ্রমিকদের সুরক্ষায় ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করেছে সংগঠনটি। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নীতি অনুসারে সমঝোতা ও চুক্তি মেনে অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। শ্রমিকদের শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রবাসে কর্মরত নারী শ্রমিকদের নিয়োগদাতার নাম, কর্মস্থলের ঠিকানার তথ্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ ও শ্রমিকের পরিবারকে তথ্য দিতে হেল্প ডেস্ক চালু করা। প্রলোভন দেখানো রিক্রুটিং এজেন্টের লাইসেন্স বাতিলসহ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। অভিবাসী শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষায় ঘোষিত আন্তজার্তিক মানদণ্ড বাস্তবায়ন করা। শ্রমিকরা কোনও ধরনের বিরূপ পরিস্থিতির শিকার হলে দ্রুত দূতাবাস ও কনস্যুলেটের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক উদ্ধার ও আইনি সহায়তা প্রদান করতে হবে। সরাসরি সরকারিভাবে নারী অভিবাসী শ্রমিক প্রেরণ নিশ্চিত করা। নারী শ্রমিকদের নির্যাতনের তথ্য জানার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে দূতাবাসসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি
প্রবাসে কর্মরত শ্রমিকদের সুরক্ষায় ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করেছে সংগঠনটি। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নীতি অনুসারে সমঝোতা ও চুক্তি মেনে অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। শ্রমিকদের শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রবাসে কর্মরত নারী শ্রমিকদের নিয়োগদাতার নাম, কর্মস্থলের ঠিকানার তথ্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ ও শ্রমিকের পরিবারকে তথ্য দিতে হেল্প ডেস্ক চালু করা। প্রলোভন দেখানো রিক্রুটিং এজেন্টের লাইসেন্স বাতিলসহ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। অভিবাসী শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষায় ঘোষিত আন্তজার্তিক মানদণ্ড বাস্তবায়ন করা। শ্রমিকরা কোনও ধরনের বিরূপ পরিস্থিতির শিকার হলে দ্রুত দূতাবাস ও কনস্যুলেটের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক উদ্ধার ও আইনি সহায়তা প্রদান করতে হবে। সরাসরি সরকারিভাবে নারী অভিবাসী শ্রমিক প্রেরণ নিশ্চিত করা। নারী শ্রমিকদের নির্যাতনের তথ্য জানার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে দূতাবাসসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি
এই বিভাগের আরো সংবাদ