আজকের শিরোনাম :

২০৪১ সালের কর্মপরিকল্পনায় আমলাদের চিন্তা-ভাবনা সন্নিবেশের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০১৮, ১৫:৪৯ | আপডেট : ০৪ জুলাই ২০১৮, ১৭:২৪

ঢাকা, ০৪ জুলাই, এবিনিউজ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করে ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সরকারি কর্মচারীদের কাছে মাঠপর্যায়ে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা এবং চিন্তা-ভাবনা কর্মপরিকল্পনায় সন্নিবেশের আহ্বান জানিয়েছেন।


তিনি বলেন, ‘২০২১ থেকে ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা কেমন বাংলাদেশ দেখতে চাই তা বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন আমরা ইতোমধ্যে শুরু করেছি। মাঠ পর্যায়ে কর্মরত আপনাদের সেখানে কোনো পরিকল্পনা ও অভিজ্ঞতা যোগ করার থাকলে আপনারা তা করতে পারেন।’

আজ বুধবার সকালে তার তেজগাওস্থ কার্যালয়ে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা ও দায়বদ্ধতা বাড়াতেই ২০১৫ সাল থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ নেয় সরকার। গেল বছর করা চুক্তি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করায় সরকারের তিন বিভাগের সচিবের হাতে পুরস্কারও তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। 

পরে রাখা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আপনারা একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছেন বলে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। এ গতি অব্যাহত রাখতে হবে। ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন করতে গেলে কর্মক্ষেত্রে অনেক বাধা আসবে, বিপদ আসবে। দেশের ক্ষতি করে এমন মানুষও দেশে জন্মায়। এসব আগাছা পরিষ্কার করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, সাহস নিয়ে কাজ করলে কোনো কিছুই বাধা হতে পারে না। যেমন পদ্মা সেতু আমাদের সবচেয়ে বড় প্রমাণ। একটা কাজই আমাদের অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির ফল আমরা পাচ্ছি। প্রশাসনে কাজের মান ভালো হচ্ছে। কাজের মান উন্নতি হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এ দেশের মানুষকে উন্নত জীবন দেয়া। আন্তরিকতা থাকলে যে কোনো বাধাকে অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। আমরা তা প্রমাণ করেছি।

তিনি বলেন, আমরা রাজনীতি করি মানুষের জন্য, দেশের জন্য। এটা কিন্তু ভোগ বিলাসের জন্য নয়। মানুষের সেবা করার জন্যই আমরা রাজনীতি করি।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার সময় যারা বলেছিল বাংলাদেশকে স্বাধীন করে কী করবে, এটা তো একটা তলাবিহীন ঝুড়ি। দেশের উন্নয়ন করে আমরা এর জবাব দিচ্ছি। যারা বাংলাদেশকে নিয়ে এক সময় সমালোচনা করছিল, তারাই আজ বাংলাদেশের প্রশংসা করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি ৫ বছর পরপর জনগণের কাছে আমাদের পরীক্ষা দিতে হয়। রাজনীতিবিদদের জবাবদিহি করতে হয়। আমাদের মূল কথা হলো, ক্ষমতা ভোগ-বিলাসের জন্য নয়। ক্ষমতা হলো দেশের মানুষের সেবা করার জন্য। নিজের নয়, জনগণকে কতটুকু দিতে পারলাম সেটাই বড় কথা।

তিনি বলেন, ২০০৭ সালে বন্দিখানায় বসে বসে দিন-রাত পরিকল্পনা করেছি এবং ভেবেছি ক্ষমতায় গেলে কীভাবে দেশ পরিচালনা করব। বিভিন্ন চিন্তাধারা লিপিবদ্ধ করি। তার আলোকেই আমরা ‘দিন বদলের সনদ’ নামে একটি ইশতেহার প্রণয়ন করি। এ সনদের ভিত্তিতেই আমরা দেশের উন্নয়ন করি। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ঘোষণার অঙ্গীকার করি। সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আবার ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর ২০৪১ সালে আমরা বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চাই, সে পরিকল্পনাও মাথায় নিয়ে কাজ শুরু করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন প্রাকৃতিক, মনুষ্যসৃষ্ট ও রাজনৈতিক দলের সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হচ্ছে। তারপরও বাংলাদেশ আজ বিশ্বে মর্যাদাপূর্ণ একটি দেশ। বিশ্বে যে মর্যাদা আমরা পেয়েছে তা ধরে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা সন্ত্রাসমুক্ত, জঙ্গিমুক্ত ও মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই।

তিনি বলেন, আপনাদের কাজের ফলেই আমরা আজ মহাকাশে পৌঁছাতে পেরেছি, সমুদ্র জয় করেছি।

এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য) বাস্তবায়নের জন্য আরও নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা এমনভাবে কাজ করব, যাতে আমাদের পরিকল্পনার প্রসার ঘটে। প্রতিটি গ্রাম আমরা শহরে রূপান্তর করতে চাই। গ্রামে বসে যেন মানুষ শহরের সকল সুবিধা ভোগ করতে পারে। একটা মানুষ যেন গৃহহীন না থাকে, একটা মানুষ যেন অনাহারে না থাকে, প্রত্যেক মানুষ যেন উন্নত জীবন পায়, সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বেগম ইসমত আরা সাদেক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব সফিউল আলম ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান বক্তব্য রাখেন। 

এ ছাড়া চুক্তির ফাইলে স্বাক্ষরের পর বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব ও সচিবরা তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ