সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষায় নীতিমালা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ১২:৩৩ | আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ২০:৪০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীসহ অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করতে তার সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করছে।

তিনি বলেন, কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছিল। কিছুদিন পর পরই এ আন্দোলন হয়। সে জন্য আমরা কোটা পদ্ধতি বাতিল করে দিয়েছি এটা ঠিক। তবে, একটা নীতিমালা আমরা তৈরি করছি।

আজ সোমবার (০৩ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিবন্ধীরা যাতে সহজে যাতায়াত করতে পারে সে জন্য সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সব স্থাপনায় তাদের উপযোগী টয়লেটসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধীদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ১৬ লাখের বেশি প্রতিবন্ধীকে বর্তমানে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই মোবাইলফোনের মাধ্যমে তাদের এ ভাতা পৌঁছে দেওয়ার সহজ ব্যবস্থা করা হবে।

প্রতিবন্ধীদের বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে সরকার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, মোবাইল ভ্যানের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে প্রতিবন্ধী বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ওইসব এলাকার প্রতিবন্ধীদের সার্বিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়েও কাজ চলছে।

তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধানে প্রতিবন্ধী এবং অনগ্রসর মানুষের সুযোগের কথা লিপিবদ্ধ করে গেছেন। তারই আলোকে আজ আমরা প্রতিবন্ধীদের জন্য কাজ করছি। যাদেরকে এক সময় অবহেলা করা হতো, একজন মানুষ হিসেবে যার কোনো অধিকার ছিল না আমরা ক্ষমতায় আসার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রতিবন্ধী সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি। প্রতিবন্ধীরা এখন লেখাপড়া করছে, খেলাধুলার মাধ্যমে স্বর্ণ জয় করে তারা দেশের সুনাম বয়ে নিয়ে আসছে। সুতরাং এখন আর প্রতিবন্ধীরা অবহেলার পাত্র নয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের একজন প্রতিবন্ধী বোন যার হাত নেই, তিনি পা দিয়ে চমৎকার একটি নৌকা বানিয়ে আমাকে উপহার দিয়েছেন। এটা তার প্রতিভার স্বাক্ষর। তাকে ভালভাবে প্রশিক্ষণ দিলে সে সমাজের আর দশজন মানুষের মতোই কাজ করতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতের প্রতিটি পরিকল্পনায় যাতে প্রতিবন্ধিরা থাকতে পারে সে জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিবন্ধীদের আঁকা ছবি দিয়ে আমি ঈদ কার্ড তৈরি করি এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই কার্ড বিতরণ করি। যারা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তাদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে বই তৈরি করেছি এতে তারা উপকৃত হচ্ছেন। তারা পড়াশোনা করতে পারছেন। যারা প্রতিবন্ধীদের দেখাশোনা করেন তারা যাতে আরও ভালো ট্রেনিংও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ পান সে ব্যবস্থা আমরা করছি। প্রতিবন্ধী সম্পর্কে আরও যাতে সচেতনতা সৃষ্টি হয় সে ব্যবস্থাও আমরা করেছি। আমরা প্রতিবন্ধীদের ভাতা দিচ্ছি, তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা নিচ্ছি, ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করছি। প্রতিবন্ধীরা যাতে অবহেলিত না থাকে সে জন্য তাদের প্রতি সরকার আলাদা দৃষ্টি দিয়েছে। 

প্রতিবন্ধীদের সাথে ভালো আচরণ করা এবং সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করার জন্য সমাজের বিত্তবানসহ সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মেধা ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রতিবন্ধীদের খেলাধুলাসহ অন্যান্য সৃজনশীল কাজে উৎসাহ প্রদানে ও সহায়তা করতে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে আন্তরিক প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেননসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ