আজকের শিরোনাম :

এই দিন দিন না, আরো দিন আছে : রিজভী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:৩৮

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রচারই জনগণকে বিভ্রান্ত করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, কতিপয় অর্বাচীন অসুস্থ লোক ইতিহাস বিকৃত করার প্রক্রিয়ায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে খাটো করার অপচেষ্টায় নিরন্তর কাজ করছে।

আজ শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, মান্নান হীরা নামের এক ব্যক্তি নিজেকে আওয়ামী লীগের নেকনজর পাওয়ার জন্য ‘ইনডেমনিটি’ নামে তথাকথিত একটি বিকৃত ইতিহাসের চটি নাটক লিখে ‘জয় বাংলা’ ব্যানারে বা তাদের সাংস্কৃতিক জোটের নামে এক বছর ধরে সারা দেশে মঞ্চায়ন করে বেড়াচ্ছে। তারা নতুন প্রজন্মের সামনে সম্পূর্ণ মিথ্যা এক বিকৃত ইতিহাস দাঁড় করানোর হীন প্রচেষ্টা তুলে ধরেছে এ নাটকের কল্পিত গল্পে। পাশাপাশি দেখানো হয়েছে, জিয়াউর রহমানের নির্দেশে নাকি ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর খন্দকার মোশতাক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন। এ নাটকে খুনি ও খলচরিত্র এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে। এ নাটক নির্মাতাদের কত বড় স্পর্ধা যে, এ দেশের কোটি কোটি মানুষের প্রাণপ্রিয় নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নিয়ে অসত্য ইতিহাস রচনা করে তা নাটক আকারে বিকৃতভাবে মঞ্চস্থ করছে।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এই কথিত পথনাটকটি ২৬ সেপ্টেম্বর নিশিরাতের এক সংসদ সদস্যের মালিকানাধীন টিভিতে প্রচার করা হবে বলে আমরা জানতে পেরেছি। আমরা তাদের সাবধান করে দিতে চাই, এ ইতিহাস বিকৃতি ও তথ্যসন্ত্রাসমূলক নাটক প্রচারের অপচেষ্টা চালিয়ে গণশত্রু হবেন না। এই নাটকের রচয়িতা, পরিচালক, নির্দেশক, অভিনেতা-কলাকুশলীদের জনগণ মনে রাখবে। এই অর্বাচীনরা হলো গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে ব্যবসা করা ফড়িয়া ও দালালদের সহযোগী। এরা হলো বর্তমান নিষ্ঠুর নাৎসি আওয়ামী লীগের সহযোগী, যাদের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষক বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানকে ধারণ করার সাহস ও শক্তি নেই।

বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সংগঠিত এই ষড়যন্ত্রকে জনগণ শুধু ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যানই করছে না, স্বাধীনতার ঘোষক ও রণাঙ্গনের বীর সেক্টর কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও তাঁর চরিত্র হননের অপপ্রয়াসের জন্য আপামর জনগণ দারুণভাবে ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করা মানেই রণাঙ্গনের সব মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করা। এই দিন দিন না, আরো দিন আছে। দেশের জনগণই এর উপযুক্ত জবাব দেবে। বিকারগ্রস্ত মানসিকতার এই ‘ইনডেমনিটি’র নামে চরিত্রহননকারী নাটকের নির্মাতাদের এহেন কর্মকাণ্ডে আমি তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। এটির সঙ্গে যারা জড়িত কিংবা প্রচার করবেন জনগণ তাদের ক্ষমা করবে না।’

রিজভী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘নাটকের সঙ্গে জড়িত ও নেপথ্যের কুশীলবদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, প্রধান নির্বাচন কমিশনের স্বীকার করা মধ্যরাতের নির্বাচনে ক্ষমতায় চেপে বসা এই সরকার কখনোই সুষ্ঠু রাজনীতি ও গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে না। সীমাহীন লুটতরাজ, খুন-গুম, ক্রসফায়ারসহ নৈরাজ্য আর ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের দ্বারা দেশকে নরকে পরিণত করেছে সাড়ে ১২ বছর। এসব নিয়ে আপনারা নীরব কেন? এসব নিয়ে আপনাদের নাটক কোথায়?’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাই ছিলেন আওয়ামী লীগের বা তাদেরই বশংবদ। সেখানে শহীদ জিয়াউর রহমানের দূরতম কোনো ভূমিকাও ছিল না। ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের নেতা তৎকালীন রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদ ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ জারি করেন। এটি ১৯৭৫ সালের অধ্যাদেশ নম্বর ৫০ নামে অভিহিত ছিল। ‘দ্য বাংলাদেশ গেজেট, পাবলিশড বাই অথরিটি’ লেখা অধ্যাদেশটিতে খন্দকার মোশতাক আহমেদের স্বাক্ষর রয়েছে। খন্দকার মোশতাকের ক্যাবিনেট ছিল সম্পূর্ণরুপে আওয়ামী লীগের ক্যাবিনেট। সেটা কি আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের তল্পিবাহক নাট্যকাররা জানেন না? ইনডেমনিটির ইতিহাসই আওয়ামী লীগের ইতিহাস।’

রিজভী বলেন, ‘স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে খুনি বাহিনী হিসেবে পরিচিত রক্ষীবাহিনীর গোপনে ও প্রকাশ্যে খুন, হত্যা, লুণ্ঠন, অত্যাচার-নিপীড়ন থেকে দায়মুক্তি দিতে দেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম ১৯৭৪ সালে ইনডেমনিটি আইন জারি করেছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পিতা। একই ধারাবাহিকতায়, ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের অবৈধ সরকারের দুই বছরের সব অবৈধ ও অনিয়মতান্ত্রিক কার্যক্রমকে ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ইনডেমনিটি বা দায়মুক্তি দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এভাবে তারা চারবার ইনডেমনিটি বা দায়মুক্তি আইন জারি করেছে। এগুলো নিয়ে নাটক লিখতে কি আপনাদের কলম ভয় পায়?’

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ