আজকের শিরোনাম :

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ফসলের মাঠে ছাত্রলীগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২০, ২২:২৩

করোনাভাইরাসের কারণে কার্যত স্থবির গোটা দেশ। জমির পাকা ধান কাটতে গিয়ে অসহায় কৃষকরাও। এ অবস্থায় সারাদেশের আবাদি জমিতে বোরো মৌসুমে কৃষকদের ধান কাটতে সব ধরণের সহায়তা করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ।

এই নির্দেশনা মোতাবেক ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা স্বেচ্ছাসেবক হয়ে কৃষকদের ধান কাটতে সহযোগিতা করছেন। ছাত্রলীগের এ ধরণের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এছাড়া বিভিন্ন স্থান থেকে কৃষকসহ চাষের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাও ছাত্রলীগের প্রশংসা করার পাশাপাশি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এ ধরণের কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে ছাত্রলীগ। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে ছাত্রলীগের ধান কাটার খবর পাওয়া গেছে। 

কক্সবাজারে কৃষক হাফেজ আহমদের ধান কেটে দিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি ছাত্রলীগের সভাপতি মইন উদ্দিনের নেতৃত্ব ৩০ জন নেতাকর্মী। তারা দুই কানি (৮০ শতক) পরিমাণের ধান কেটে দিয়ে বাসায় পৌঁছে দেন।

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায় কৃষকদের পাকা ধান কেটে দিতে সাহায্য করেছে সুরক্ষিত কচুয়া কমিটি। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়। আজ সোমবার ২০ জনের একটি দল সেখানকার কাকার বিলের তিন কৃষকের ধান কেটে দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু করেন।

এসময় কচুয়া উপজেলা যুবলীগের সদস্য সরদার আক্তারুজ্জামান অনু, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহরিয়ার রহমান রাসেল, যুবলীগ নেতা সোয়েব ইসলামসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। পর্যায়ক্রমে আরও ধান কেটে দেয়া হবে বলে তারা জানিয়েছেন।

ময়মনসিংহে ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও করোনা আতঙ্কে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় কৃষকের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা ইতিমধ্যে সদর উপজেলার কাতলাসেন এলাকার দুই কৃষকের ১০ কাঠা জমির ধান কেটে দিয়েছেন।

জেলা ছাত্রলীগ নেতা তানভীর জুবায়ের ইসলাম তারিনের নেতৃত্বে অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী এ কাজে অংশ নেন। পরে কাতলাসেন এলাকার চরপাড়া থেকে এক কিলোমিটার দূরে কৃষক চানু মুন্সী ও আব্দুর রহমানের বাড়িতে তা পৌঁছে দেন।

গাজীপুরের শ্রীপুরে কৃষকের পাকা ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। উপজেলার গুনিয়া ফকির পাড়া গ্রামের কৃষক সারফুল মিয়ার এক বিঘা জমির ধান কেটে দেন তারা। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সুলতান মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের উদ্যোগে ছাত্রলীগের ১৩ নেতাকর্মী ধানগুলো কেটে ঘরে তুলে দেন।

সুলতান মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষকদের পাশে থাকতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নির্দেশ দিয়েছে। ছাত্রলীগ মানবিক সংকটে মানুষের পাশে থাকে। করোনা মোকাবিলায়ও কাজ করছে ছাত্রলীগ। শ্রমিক সংকটের খবর পেয়ে আমরা সেখানে ধান কেটে দিয়েছি।’

এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কৃষকের ধান কেটে দেয়ার খবর পাওয়া গেছে। সারাদেশে এভাবে কৃষকের ধান কেটে দেয়ায় ছাত্রলীগের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার করোনা নিয়ে ঢাকা বিভাগের কয়েকটি জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এ প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, জমির পাকা ধানকাটা নিয়ে সমস্যা হলে সহযোগিতা করতে ছাত্রলীগকে নির্দেশনা দিয়েছি। তারা নিজ নিজ এলাকায় কৃষকের পাশে দাঁড়াচ্ছে, ধান কেটে দিচ্ছে। ছাত্রলীগের ছেলেরা করোনা দুর্যোগে এগিয়ে এসেছে, কৃষকদের সহযোগিতা করছে। এ জন্য ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

এর আগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য এক বিবৃতিতে বলেন, করোনা সংকট মোকাবেলায় দেশের সকল জেলা, মহানগর ও বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটে ‘স্বাস্থ্য বিষয়ক সহায়তা টিম’ গঠন করবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সাহায্য প্রার্থী কেউ যোগাযোগ করলে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সারাদেশে কৃষিজীবীদের প্রয়োজনীয়তার নিরিখে আসন্ন বোরো মৌসুমে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ধান কাটাসহ সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করার নির্দেশনাও দেয়া হয়। ছাত্রলীগের প্রতিটি মেডিকেল কলেজ ইউনিটের নেতাকর্মীরা নিজ নিজ এলাকার জেলা/উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ