আদালতের সিদ্ধান্তে সমগ্র জাতি হতাশ, বিক্ষুব্ধ : ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আদালতের সিদ্ধান্তে সমগ্র জাতি শুধু হতাশই নয়, বিক্ষুব্ধ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ‌্যালয় (বিএসএমএমইউ) স্বাস্থ্য প্রতিবেদন উপস্থাপন না করে আদালত অবমাননা করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া ‘জেলখানায় খালেদা জিয়া রাজার হালে আছেন’ বক্তব্যকেও আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল।

আজ বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

এর আগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পরবর্তী জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে তুমুল হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। এ পরিস্থিতিকে নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

খালেদার জামিন শুনানি পেছানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপিল শুনানি সাতদিন পিছিয়ে দেয়ায় এবং আইনজীবীদের মৌখিক আবেদন গ্রহণ না করায় সমগ্র জাতি শুধু হতাশই নয়, বিক্ষুব্ধও হয়েছে। অত্যন্ত বিস্ময় ও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে মামলার শুরু থেকেই সাধারণ মানুষ যে সুযোগ-সুবিধা পান, তাকে সে সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়নি। তার জামিন না দেয়াটা প্রচলিত রীতি-নীতির বিরুদ্ধেই শুধু নয় অমানবিকও বটে। বিএসএমএমইউ স্বাস্থ্য প্রতিবেদন উপস্থাপনের ব্যর্থ হওয়ায় আদালত অবমাননা করেছেন বলে আমরা মনে করি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আনঅফিসিয়ল সূত্রের খবর গত রাতে রিপোর্ট চূড়ান্ত হয়েছে কিন্তু এটা বন্ধ হয়েছে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল খালেদা জিয়াকে নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা আদালত অবমাননার শামিল। প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকার চান না দেশনেত্রীর জামিন হোক। তিনি দেশনেত্রীকে গডফাদার বলেছেন, বলেছেন রাজার হালে আছেন এর মাধ্যমে তিনি বিএসএমএমইউ কে ভয় দেখিয়েছেন।

বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, বিষয়টি কাকতালীয় কিনা জানি না, একদিকে সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন করা হয়েছে অপরদিকে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য। তার এ বক্তব্য ও এই ঘটনায় আদালতের ওপর থ্রেট করা হয়েছে বলে মনে করি। এটা ফ্যাসিজমের একটি রূপ।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, পরবর্তী চিকিৎসা না হলে তার মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। তার চিকিৎসার ক্রমাবনতি ও চিকিৎসা না হওয়ার দায় দায়িত্ব এই সরকার প্রধানকে বহন করতে হবে।

এদিকে খালেদা জিয়ার জামিনের শুনানি পেছানোর ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, মহিলাদলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি