আজকের শিরোনাম :

একজন ‘শিবির’ রনি!

  জয়দেব নন্দী

২৩ এপ্রিল ২০১৮, ১৫:২৯ | অনলাইন সংস্করণ

রনি
নুরুল আজিম রনি ‘শিবির’! কোথায় ছিলেন ভাই? প্রয়াত কিংবদন্তি নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আ.জ. ম নাসিরউদ্দিনের উপস্থিতিতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন কলেজ থেকে শিবির বিতাড়নের তাগিদে লালদীঘি ময়দানে সেদিনের সেই বিশাল ছাত্রসমাবেশের কথা মনে আছে আপনাদের? আমরা তৎকালীন কয়েকজন কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা সেই সমাবেশে উপস্থিত ছিলাম। সেদিন আমরা দেখেছিলাম, রনি-ইমুর শিবির-বিতাড়িত করবার দৃপ্ত প্রত্যয়! ঠিক তার ২/১ পক্ষ পর, রনির বলিষ্ঠ নেতৃত্বে শিবির বিতাড়িত হলো চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসীন কলেজ থেকে। শত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে এই দুই কলেজে নিজ হাতে বঙ্গবন্ধুর ছবি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সে প্রতিষ্ঠা করেছিল। সে-ই হয়ে গেল শিবির? বাহ! রনির অনেক কিছু নিয়ে সমালোচনা করবার আছে। সেটি আমি করেছিও। আবার আদর্শ-প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে ত্বরাণ্বিত করতে রনির মত নেতা/কর্মীর পাশে থাকার চেষ্টা করেছি সার্বক্ষণিক। থাকবো আমৃত্যু। এইতো গত কয়েক সপ্তাহ আগেও রনির একটা ফেসবুক পোস্টে আপত্তি জানিয়ে লিখেছিলাম, 'এই পোস্টদাতা রনির মুক্তি আমরা চাই নি, আমরা মুক্ত করেছিলাম এক আদর্শবাদী রনিকে'! রনি সাথে সাথে আমাকে ফোন করেছিল, ভুল স্বীকার করেছিল, ভুল বুঝতেও পেরেছিল। রনিও মানুষ। তারও ভুল হতে পারে। তাই বলে প্রকৃত আদর্শবাদী একটা ছেলেকে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে আপনি তাকে শিবির বলবেন? তাকে হত্যার জন্য শিবির যেখানে ওৎ পেতে থাকে, শিবিরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে সেই হয়ে গেল শিবির? রনি এরেস্ট হয়েছিল! কত মানুষের কত কথা! দেখেছি...শুনেছি...উপলব্ধি করবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলাম নিজেরাই। রনি-মুক্তির প্রত্যাশায় বাংলার হাজার হাজার শিক্ষার্থী যেমন অপেক্ষায় ছিল, ঠিক তেমনি অনেককেই দেখেছি বিপরীত রূপ প্রদর্শন করতে। সেদিন যারা বিপরীত রূপ দেখিয়েছিল, তাদের অনেককেই দেখছি আজ বদলে গেছে। তাদের এই পরিবর্তনকে মোটেও ভোল পরিবর্তন হিসেবে না দেখে, ইতিবাচক অর্থেই দেখতে চাই। কারণ রনি তার শিক্ষার্থী-বান্ধব ইতিবাচক কার্যক্রম/কর্মসূচি দিয়ে তাদের মন জয় করতে পেরেছে। এটাই হচ্ছে নুরুল আজিম রনি। সমসাময়িক ছাত্ররাজনীতি পর্যালোচনা করুন; ঘুরে আসুন বিভিন্ন জেলা ইউনিট, খোঁজ নিন, দেখুন...কোন কোন জেলা ইউনিট শিক্ষার্থী-বান্ধব কর্মসূচি হাতে নেয় বা বাস্তবায়ন করে- ভাল করেই জানি। রনি ছাড়া আর হয়তো দু'চারটি নাম আসতে পারে। রনি সেখানে অবশ্যই অনুকরণীয়। আমরা যারা রাজনৈতিক-কর্মী, আমাদের থাকতে নেই ব্যক্তিজীবন, পরিবার-পরিজন! থাকতে নেই বৈষয়িক ভাবনা! আমাদের বাপ-মায়ের কষ্টার্জিত টাকা দিয়েও আমরা পারবো না ব্যবসা করতে! সে টাকা যদি কেউ লুটে নিতে চায়, তা ফিরে পাবার আশা আমাদের জলাঞ্জলি দিতে হয়! তা না হলে যে চাঁদাবাজ খেতাব পেতে হয়! তবে, রনির থাপ্পড়গুলোর দৃশ্য দেখে আমার মনে হয়েছে; লুটেরাদের মুখে থাপ্পড়, সুবিধাবাদীদের মুখে থাপ্পড়, ভণ্ডদের মুখে থাপ্পড়, নেতিবাচক-ব্যক্তিদের মুখে থাপ্পড়। লেখক : সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
এই বিভাগের আরো সংবাদ