আজকের শিরোনাম :

রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে বিএনপি গুজবের আশ্রয় নিচ্ছে : হাছান মাহমুদ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০১৯, ১৯:৩২

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে বিএনপি এখন গুজবের আশ্রয় নিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘যারা বাংলাদেশ চায়নি তারা দেশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। একের পর এক গুজব ছড়াচ্ছে। তারা পদ্মা সেতু, ছেলে ধরা, হারপিক ও ব্লিচিং পাউডারের মতো নানা গুজব ছড়িয়ে এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়েও গুজব ছড়াচ্ছে। এরা রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে এখন গুজবের আশ্রয় নিচ্ছে। আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এবং তার স্বাধীনতাবিরোধী দোসরেরা গুজবের আশ্রয় নিচ্ছে।’

তথ্যমন্ত্রী আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা দেশের উন্নয়ন চায় না, সমাজে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। যারা দেশবিরোধী কাজকর্মের সাথে যুক্ত হয়েছে, তাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে। স্বাধীনতা বিরোধীদের এসব গুজব সাময়িক বুদ বুদ তৈরি করতে পারে, কিন্তু এগুলো হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে।

খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিলে নাকি ডেঙ্গু মশা চলে যাবে, কতিপয় বিএনপি নেতার এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এ বক্তব্যের মাধ্যমে তারা এটাই প্রমাণ করেছেন যে, রাজনৈতিকভাবে তারা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন। তারা বলছেন খালেদা জিয়ার মুক্তি নাকি আমরা চাই না। খালেদা জিয়া একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী। আইনী লড়াইয়ে আদালতের মাধ্যমে মুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ বা সরকারেরতো কোন বাধা নেই।’

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এসব কথা না বলে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আইনী লড়াইটা জোরদার করুন। আপনাদের আইনজীবীদের মধ্যে যে নানা ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে তা কাটিয়ে তাদের ঐক্যবদ্ধ করুন। তাহলে হয়তো আইনী লড়াইটি জোরদার হবে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ৭৫-এর পর জিয়াউর রহমান ছিল সেই শক্তির আশ্রয়স্থল, যারা বাংলাদেশ চায়নি তাদের পুনর্বাসিত করেছিলেন জিয়াউর রহমান। সেই কারণে শাহ আজিজকে তিনি প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন। যেই শাহ আজিজুর রহমান জাতিসংঘে গিয়ে পাকিস্তান প্রতিনিধিদলের ডেপুটি লিডার হিসেবে পাকিস্তানের পক্ষে উকালতি কলে বলেছিলেন যে, বাংলাদেশে কোন মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে না। কিছু ভারতীয় চর আন্দোলন করছে মাত্র। এর মাধ্যমে দুটি জিনিস প্রমাণিত হয়-একটি হচ্ছে তিনি যে স্বাধীনতাবিরোধী চক্রকে পুনর্বাসিত করেছিলেন, সেই প্রকল্পের অংশ হিসেবে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন। আরেকটি হচ্ছে-জিয়াউর রহমান পরিস্থিতির কারণে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান পরিস্থিতির কারণে মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানীদের দোসর হিসেবে, গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছেন। যা পরবর্তীতে ধীরে ধীরে প্রকাশিত হয়েছে। আজকে সেই প্রজন্মের পরবর্তী প্রজন্মের আশ্রয় এবং প্রশ্রয়স্থল হচ্ছে বিএনপি। বাংলাদেশ উন্নত হচ্ছে তা তাদের ভাল লাগছে না। দেশ যখন উন্নতির দিকে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে, তখন যে শক্তিটি দেশের অভ্যূদয় চায়নি, তারা দেশকে নিয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

বাঙালির ইতিহাসে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনের বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত শেখ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের সাথে পরামর্শ করে নিয়েছেন। যেই সিদ্ধান্তগুলোর সঙ্গে বাঙালি জাতির অভ্যূদয়ের ইতিহাস জাড়িত। বঙ্গবন্ধু আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, আইয়ুব খানের মার্শাল ল’র সময়, ৬৬-এর ৬ দফার দেয়ার পর যখন জেলখানায়, তখন দলের নেতারা যখন সিদ্ধান্তহীনতায় কিংবা কেউ কেউ আপোষকামীতায় লিপ্ত ছিল, তখন দল যাতে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এ ব্যাপারে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু সংসার পেতেছিলেন, কিন্তু সংসার করতে পারেননি। তিনি সারাদেশকে নিজের সংসার মনে করতেন। জীবনের অধিকাংশ সময় জেলখানায় কাটিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু যখন জেলে থাকতেন তখন দল এবং সংসার দুটোই চালাতেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।

আজ বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী শেখ কামালের আজ জন্মদিন উপলক্ষে তথ্যমন্ত্রী তাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং তার জীবনের বিভিন্ন ঘটনার উপর আলোকপাত করে বলেন, শেখ কামাল একজন ক্রীড়া ও সঙ্গীত অনুরাগী মানুষ ছিলেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অসামান্য অবদান রয়েছে।

তিনি বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি যারা এদেশের স্বাধীনতা চায়নি, তারা শুরু থেকেই বঙ্গবন্ধু, তাঁর পরিবার ও বঙ্গবন্ধুর সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। সাড়ে তিন বছরের মধ্যে তৎকালীন জাতীয় সংসদের ৫ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। ঈদের নামাজ পড়ার সময় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সেই সময় এই ধরনের বিভিষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছিল। শেখ কামালের গায়েও কালিমা লেপনের চেষ্টা করা হয়েছে। যেগুলো সর্বৈব মিথ্যা ও বানোয়াট। বাসন্তির গায়ে জাল পরিয়ে, বাসন্তি নাকি লজ্জা ঢাকার চেষ্টা করেছে, সেই কথা প্রচারের চেষ্টা করা হয়েছে। তখন একটি কাপড়ের দামের চেয়ে একটি জালের দাম কয়েকগুণ বেশি ছিল। এই হাস্যকর কাজগুলো যারা করেছেন, তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও এডভোকেট বলরাম পোদ্দার। সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আকতার হোসেন, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানা ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম মৃধা প্রমুখ। বাসস

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ