আজকের শিরোনাম :

‘রাজনৈতিক কারণেই খালেদা জিয়াকে অন্যায় ভাবে আটক রাখা হয়েছে’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:৫১ | আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:৫১

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, রাজনৈতিক কারণেই বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায় ভাবে আটক রাখা হয়েছে ।ঐক্যবদ্ধ ও সু-সাহস নিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আমরা ঘুরে দাঁড়াবো। এই জন্য সংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এই জন্য দলে পুনর্বাসন করতে হবে। বিগত দিনে দলের যারা নির্যাতিত হয়েছেন তাদের পাশে দলের নেতারা এবং যারা নির্বাচনে প্রার্থীদের দাঁড়াতে হবে।

শুক্রবার(৮ ফেব্রয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশন মিলনায়তনে ‘গণতন্ত্রের মা বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং দেশব্যাপী বিএনপির বন্দী নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে’ বিএনপি আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ৮০ ভাগ মানুষ ধানের শীষের ভোট দেয়ার জন্য প্রস্তত ছিল। এটা সরকারের কাছে গোপন থাকেনি। তাই ২৯ তারিখ সরকার ভোট সম্পুন্ন করেছিল।

তিনি আরও বলেন, ৩০ তারিখ এ দেশে কোনো ভোট হয়নি। ২৯ তারিখ ভোট হয়েছে, এটা আমেরিকার প্রসিডেন্টসহ দেশি-বিদেশি সবাই জানে।

তিনি বলেন,সরকারের মন্ত্রী পরিষদ গঠনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের বাইরে রেখে মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছে। আর দেশে কোনো ভোট হয়নি। এই দুটি অস্বাভাবিক ঘটনার ফলে সরকার বেশি দিন টিকে থাকতে পারবে না।

বেগম খালেদা জিয়াকে বেশি দিন আটকে রাখা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধানের শীষের ভোট দিতে পারলে এত দিনে বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হতেন। সরকার জানে দিনের বেলায় ভোট হলে আওয়ামী লীগ জয়ী হতে পারবে না। তাই তারা রাতের বেলায় ভোট করছে।

তিনি বলেন, বিএনপি পরাজিত হয়নি। আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়ছে। কারণ তারা একজনও নির্বাচিত হয়ে সংসদে যেতে পারেনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে দলকে পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন করতে হবে। তাহলেই কেবল আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করে আনতে পারবো।

তিনি বলেন, তৃণমূল থেকে দল পুনর্গঠন কতে হবে। যারা বেগম খালেদা জিয়ার জন্য সংগ্রাম করেছে তাদের ওপরে জায়গা দিতে হবে। দল পুনর্গঠন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, একটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন মামলায় সরকারের কূট-কৌশলে তাঁকে (খালেদা জিয়া) শাস্তি দেয়া হয়েছে। তাঁকে ৫ বছরের সাজা দেয়া হয়েছে রেওয়াজ অনুযায়ী এ মামলার আপিলের ফাইল সাবমিট করলেই তা মঞ্জুর হয়ে যায়। আশা করেছিলাম সাত দিনের মধ্যে জামিনে ম্ক্তু হয়ে যাবেন। কিন্ত সময় পিছিয়ে পরবর্তিতে জামিন আনার দুটি মানহানি মামলা দেয় এই সরকার।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আইনী প্রক্রিয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার মু্ক্িত হবে না। আন্দোলন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তাই আন্দোলনের প্রস্তুতি নিন।

প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমাদের একটি দাবিও মানা হয়নি। তারপরও কেন নির্বাচনে গিয়েছিলাম। কারণ ৭৮ হাজার মামলা দেয়া হয়েছে। নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা স্বাভাবিকক রাজনীতে আসতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, দুটি কারণে আমরা নির্বাচনে গিয়েছিলাম, আশা ছিল, মানুষ ভোট দিতে পারলে আমরা জয়ী হবো। আর সেদিন আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে বাধ্য হবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে গিয়েছিলাম। কিন্ত কিছুই করতে পারিনি। আন্দোলন করতে হলে সংগঠন লাগে। গত ১০ বছর অনেক কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। কিন্ত কি দেখলাম, মনে হয় কিছুই করা হয়নি।

বিগত নির্বাচনে প্রার্থীদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রার্থীদের উচিত হবে, যারা মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ছে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।

দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আজকে এক বছর হলো রাজনীতির মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তাকে কী আইনী প্রক্রিয়ায় মুক্ত করা যাবে?। আমরা নেত্রীকে রাজনৈতিকভাবেই মুক্ত করে আনবো।

তিনি বলেন, কারাগারে থেকে আজকে গণতন্ত্রের জন্য মূল্য দিচ্ছেন। তাই আমাদেরকে রাজপথ আন্দোলন করে দেশনেত্রীকে মুক্ত করে আনবো। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আবার প্রধানমন্ত্রী করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সভাপতির বক্তব্যে বলেন, এক বছরে আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারিনি। আমরা ব্যর্থ। এর থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। নেত্রী আমাদের দিকে তাকিয়ে আছেন।

তিনি বলেন, আসছে আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপিকে নেতৃত্ব দিতে হবে। অঙ্গ সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। আইনী প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের যৌথ সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম আতাউর রহমান ঢালী, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম-মহাসচিব মাহবুব উদ্দীন খোকন, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বেচ্ছাসেব দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নাসিম হোসাইন, মহিলা দলের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান প্রমুখ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- দলটির চেয়ারপারসনের উপদেস্টা আবুল খায়ের ভূইয়া,আতাউর রহমান ঢালি,সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিলকিস জাহান শিরিন,স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা,প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবি এম মোশাররফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত প্রমুখ

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ