ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধনে ছাত্রদলের ৮ দাবি
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯, ২১:৪৪
দীর্ঘ ২৮ বছর পর হতে যাওয়া আসন্ন ডাকসু নির্বাচনের গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসনের কাছে আট দফা দাবি পেশ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আজ সোমবার দুপুরে গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মিজানুর রহমানের কাছে লিখিত আকারে দাবিগুলো তুলে ধরেন ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার এবং সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকি।
পরে সন্ধ্যায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন ঢাবি ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ। এ সময় সেখানে ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আবুল বাশার সিদ্দিকি।
ঢাবি ক্যাম্পাসে সহাবস্থান পাওয়ার ক্ষেত্রে ছাত্রদল প্রশাসনের কেমন সাঁড়া পাচ্ছে এমন প্রশ্নে করা হলে আল মেহেদী তালুকদার বলেন, ‘আমরা গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মিজানুর রহমানের সাথে আগের দিন কথা বলেছিলাম। সেখানে তিনি আমাদের কথা দিয়েছিলেন ক্যাম্পাসে সকল ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থানের বিষয়ে উপাচার্যের সাথে তিনি কথা বলবেন।’
আল মেহেদী বলেন, ‘আজআমরা তার কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার সময় তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাই। তিনি (মিজানুর রহমান) আমাদের বলেছেন উপাচার্য নিজেও এই বিষয়ে একমত। ক্যাম্পাসের কোনো ছাত্র যাতে আক্রমণের শিকার না হয় সেটা প্রশাসন নিশ্চিত করবে।’
মেহেদী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা যখনই ক্যাম্পাসে গিয়েছি তখনই আমাদের কর্মীদের আক্রমণ করা হয়েছে। মারধর করে পুলিশে দেয়া হয়েছে। মাত্র দুই মাস পর ডাকসু নির্বাচন অথচ এখনো আমাদের এখন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হয় প্রক্টরিয়াল টিমের প্রহরায়। বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে এরকম ঘটনা নজিরবিহীন।’
ছাত্রদলের ঢাবি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আরও বলেন, ‘ছাত্রদল ক্যাম্পাসে থাকবে। ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে শুরু থেকেই ছাত্রদল আন্তরিক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত আস্থা রেখে অপেক্ষা করতে চাই আমরা।’
ছাত্রদলের দাবিগুলো হলো:
১. পরিবেশ পরিষদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ক্রিয়াশীল সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
২. ভোটার হওয়ার উপযুক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীর প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতামূলক ধারা সংশোধন করে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
৩. হলে হলে ভোট গ্রহণের পরিবর্তে কেন্দ্রীয়ভাবে কলাভবন ও কার্জন হলে গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. স্বচ্ছ-সুষ্ঠু ও নিরাপদ ভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ভোট গ্রহণের সকল প্রক্রিয়া এবং সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস কোজসার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনতে হবে।
৫. ডাকসু নির্বাচন স্বচ্ছভাবে অনুষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সকল ছাত্র সংগঠনের কাছে গ্রহণযোগ্য শিক্ষদের সমন্বয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
৬. ডাকসু গঠনতন্ত্রে সন্নিবেশিত ৫ (ধ)-এর অগণতান্ত্রিক ধারার সংশোধন করে ছাত্র সংসদ বিলুপ্তি অথবা কার্যক্রম স্থগিত নেওয়ার ক্ষেত্রে সভাপতি ও ছাত্র সংসদের যৌথ সিদ্ধান্তের বিষয় সংযোজন করতে হবে।
৭. ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের তাফসিল ঘোষণার পর ছাত্র সংগঠনগুলো কোনো প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের কোনো প্রকার হয়রানি, মামলা অথবা গ্রেপ্তার না করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
৮. সদস্য পদের ক্ষেত্রে ১৯৯১ সালের ডাকসু গঠনতন্ত্র বাতিলকৃত ৪ অনুচ্ছেদের ন, প ও ফ ধারা পুনরায় সংযোজন করতে হবে।
এবিএন/মমিন/জসিম