আজকের শিরোনাম :

বিএনপি কি বললো যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের কাছে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:২৬

বাংলাদেশে বিরোধী দল বিএনপির নেতারা সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে শুক্রবার এই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বিএনপি এবং তাদের জোটের নির্বাচিতদের শপথ নেয়া না নেয়া এবং নতুন সংসদে যোগ দেয়ার প্রশ্নে দলটির মনোভাব জানতে চেয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট শপথ না নিয়ে নির্বাচনে অনিয়মের ব্যাপারে মামলা করাসহ রাজনৈতিকভাবে এগুনোর কথা বলে আসছে।

ঢাকার গুলশানে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে গিয়ে বৈঠক করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং দলটির আরও দু'জন নেতা। অন্য নেতারা হলেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং তাবিথ আউয়াল। তবে জানা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের আমন্ত্রণে তারা গিয়েছিলেন।

বিএনপির সূত্রগুলো আরও জানিয়েছেন,বিএনপি এবং তাদের জোটের নির্বাচিতরা শপথ নেবেন কিনা, নতুন সংসদে তারা যোগ দেবেন কিনা, বৈঠকে এসব প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বিএনপির অবস্থান বা মনোভাব জানতে চেয়েছেন।

এই বিষয়গুলোতে দলটি এখনও চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে।

একইসাথে বিএনপির সূত্রগুলো বলেছেন, নির্বাচনে বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে এমুহুর্তে দলটিতে আবেগ কাজ করছে।আর সেকারণে দলে তাদের নির্বাচিতদের শপথ না নেয়ার পক্ষে একটা মত রয়েছে।সে বিষয়টিও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।

বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মাত্র সাতজন নির্বাচিত হয়েছেন। বিএনপির ইতিহাসে এবারই এত কম সংখ্যক আসন দলটি পেয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে বিএনপি এবং তাদের জোট ফলাফল প্রত্যাখান করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নেয়ার কথা বলে আসছে।

সূত্রগুলো আরও জানিয়েছেন, সারাদেশে ধানের শীষের প্রার্থীরা কারচুপি এবং অনিয়মের অভিযোগের সমর্থনে যে সব তথ্য দলের কাছে দিয়েছেন, সেগুলো বিএনপি নেতারা তুলে ধরেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের কাছে।

নির্বাচনের আগেও বিএনপি বিদেশী কূটনীতিকদের সাথে কয়েকদফা বৈঠক করেছিল। নির্বাচনের পর তাতে অনিয়মের তাদের অভিযোগগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরার কথা বলেছিল বিএনপি।

দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ বলেছেন, সবক'টি আসনের অনিয়মের তথ্য প্রমাণ দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে বিশ্বের সামনে তুলে ধরবেন।

"ভোটাররা গিয়ে ভোট দিয়ে নির্বাচন করবে, সেই নির্বাচন হয় নাই। আমরা এটা উদ্ঘাটন করবো।আমরা বলবো, উপস্থাপন করবো। দেশেও করবো, বিদেশেও করবো।"

"এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে, ভোট গ্রহণ এবং ফলাফলে সত্যিকার অর্থে কি ঘটেছে,এগুলো যতটুকু সম্ভব তথ্য ভিত্তিক একটা প্রতিবেদন তৈরি করে আমরা সারাবিশ্বকে জানানোর চেষ্টা করবো।"

দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখানকার সব বিষয় জানে বলে তারা বিশ্বাস করেন।

বিএনপি এবং তাদের জোট আইনগত এবং রাজনৈতিকভাবেও পরিস্থিতি মোকাবেলা করার কথা বলে আসছে। তবে তাদের কৌশল এখনও চূড়ান্ত নয় বলে দলটির নেতাদের অনেকে বলেছেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রার্থীরা আগে স্ব স্ব এলাকায় নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ তুলে দলবে। তারপর পর্যায়ক্রমে মামলা হবে।

"পদক্ষেপগুলো এখনও সুনির্দিষ্টভাবে বা গুছিয়ে করা সম্ভব হয়নি।তবে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। যারা প্রার্থী ছিলেন, তাদের সাথে সিনিয়র নেতারা আরোচনা করেছেন। প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় অনিয়ম, কারচুপি, সহিংসতার তথ্য প্রমাণ নিয়ে মামলা করবেন।পর্যায়ক্রমে এগুনো হবে।

তবে বিএনপি নেতাদেরই অনেকে মনে করেন, একযুগ ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতাকর্মিরা এবারের বিপর্যয়ে চরম হতাশায় পড়েছেন।সেখানে তাদের দলের দিকে বেশি নজর দেয়া উচিত। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ