আজকের শিরোনাম :

বেআইনি আদেশ মানবেন না: পুলিশকে ড. কামাল

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ২১:৪০

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন পুলিশের উদ্দেশে বলেছেন, ‘জেনে রাখো, চিরদিন কেউ ক্ষমতায় থাকে না। আর কোনও সরকারও আইনের ঊর্ধ্বে না। এই সরকার আর ১৬ দিন ক্ষমতায় আছে। সুতরাং বেআইনি আদেশ মানবেন না’।

শুক্রবার সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেরার পথে হামলার ঘটনায় বিকেলে পুরানা পল্টনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অভিযোগ তুলে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘যেসব পুলিশ গ্রেপ্তার করছে, তারা কেন এসব করছে? এদেশে কোনও সংবিধান আছে? দেশে কোনও সংবিধান আছে বলেতো মনে হয় না। আসলে তারা বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরিত সংবিধানকে উপহাসের বস্তু বানিয়েছে’।

বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এলাকায় হামলার শিকার হওয়ার বিষয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘এটা একটি সভ্য দেশ। যারা দেশ শাসন করছে, তাদের লজ্জা পাওয়া উচিত। আজ যারা হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নাও’।
সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ফেরার সময় ড. কামাল হোসেনের গাড়িবহরে হামলা হয় বলে গণফোরামের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।

তাদের দাবি, হামলায় ড. কামাল হোসেনের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও বহরের পেছনে থাকা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা আ স ম আবদুর রব, অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, ঢাকা-১৪ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সিদ্দিক সাজুর গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ১০-১২ জন আহত হন। সংবাদ সম্মেলনে আহতরাও উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশের নিশ্চুপ ভূমিকা ও ধরপাকড় নিয়ে তিনি বলেন, ‘সংবিধানে প্রথম স্বাক্ষর জাতির জনকের। তোমরা বঙ্গবন্ধুর আদেশ অমান্য করছো? তোমরা ৫০-৫৫ বছর চাকরি করবে, বুঝে নিও, সংবিধান ভঙ্গ করার কাজ করো না। কার আদেশে এমন কাজ করছো তা আমাকে জানাও’।

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতি কী হয়েছে সেটা আমরা চিন্তা করি না। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের দিনে সেখানে এই ধরনের ঘটনা, শহীদদের প্রতি অবমননা। এটা মেনে নেয়া যায় না। এটা সারাদেশের কোটি কোটি মানুষ মেনে নিতে পারে না।’

আহত সাংবাদিকদের দেখিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘তাদের মেডিকেল সার্টিফিকেট আছে। রব সাহেবের (আহত) আঙুলটা দেখছেন। আইজি সাহেব আমি কথা দিচ্ছি- আমরা সব রকমের সাহায্য আমরা করব। আইনানুগ সাহায্য, তদন্ত করার সাহায্য করব। আপনার পুলিশের মধ্যে যাদের বিশ্বস্ত মনে করেন, তাদেরকে ডেকে একটু দায়িত্ব দিন।’

ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ওখানে শহীদরা আছেন সেখানে আমরা গেছি শ্রদ্ধা জানাতে। এটাতে যাদের গায়ে লাগে ওরা কারা? ভাড়াটিয়া। পয়সা নিয়ে এসব তারা করেছে। এটা কোনো নীতির কাজ হতে পারে না। এই কাজ কোনো সুস্থ দেশপ্রেমিক মানুষের কাজ হতে পারে না। আমি দেখেছি ছোকড়ারা এদিক-ওদিক দৌড়াদৌড়ি করছে, ইট পাটকেল মারছে, আহত করেছে, গাড়ি ভাঙার চেষ্টা করেছে। এরা ছোকড়া, টোকাই।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না, ঐক্যফ্যন্টের প্রার্থী ড. রেজা কিবরিয়া, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু, জেএসডির আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, জগলুল হায়দার আফ্রিক, আওম শফিকউল্লাহ প্রমুখ।


এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ