আজকের শিরোনাম :

আইএসআই-এর সঙ্গে বিএনপি নেতার কথিত ফোনালাপ নিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৭:৪১ | আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৭:৪৬

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর একজন এজেন্টের কথিত ফোনালাপের একটি অডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশের কুমিল্লার দাউদকান্দি থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগটি দায়ের করেছেন দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সুমন, যিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের একজন নেতা।

তবে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতা মিঃ হোসেন একজন আইএসআই এজেন্টের সঙ্গে কথা বলার অভিযোগ নাকচ করে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন যে এই ফোনালাপ সম্পর্কে তার কোন ধারণা নেই।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া কথিত ওই অডিওতে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পাকিস্তান ও চীনের সহায়তা চাইতে শোনা যায়।

অডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর কুমিল্লায় মিঃ হোসেনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগটি দায়ের করা হয়।

তবে পুলিশ জানিয়েছে আনুষ্ঠানিক কোন মামলা এখনও দায়ের করা হয়নি এবং এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তের জন্য তারা অপেক্ষা করছেন।

কী আছে সেই কথিত ফোনালাপে

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া অডিওটির উৎস এবং সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি বিবিসি।

সাত মিনিটের কিছু বেশি সময় ধরে একটি কথোপকথন শোনা যায়।

ইংরেজিতে চলা ওই কথোপকথনের শুরুতেই পরস্পরকে সালাম বিনিময় করেন দুটি পুরুষ কণ্ঠ। একটি কণ্ঠ অপর কণ্ঠের ব্যক্তিকে 'মেহমুদ' ভাই বলে সম্বোধন করতে শোনা যায়।

তবে থানায় যে অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে যে অন্য কণ্ঠটি বিএনপি নেতা ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের।

ফোনের অপর প্রান্তের ব্যক্তি, এ পাশের কণ্ঠকে বাংলাদেশে তাদের একমাত্র বন্ধু বলে উল্লেখ করে শীঘ্রই একটি সাক্ষাতের ব্যবস্থা করার কথা বলেন।

এ প্রান্ত থেকে তখন বলা হয় যে সে পরিস্থিতি নেই এখন, কিন্তু বাংলাদেশে তাদের কোন 'ব্যক্তি'র সঙ্গে সাক্ষাত সম্ভব বলে জানানো হয়।

বন্ধুত্ব দীর্ঘস্থায়ী হবে এমন আশাবাদের মধ্য দিয়ে শেষ হয় কথিত ওই ফোনালাপ।

কী বলছেন ড. মোশাররফ হোসেন?

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-১ এবং কুমিল্লা-২ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বিবিসি বাংলার সঙ্গে যখন তাঁর কথা হয়, তখন তিনি দাউদকান্দিতে গণসংযোগ করছিলেন। ভাইরাল হওয়া অডিওটি সম্পর্কে তিনি দাবী করেন যে সেটি 'ম্যানুফ্যাকচার্ড'।

তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করা এবং নির্বাচনী প্রচারণায় তাকে বিব্রত করার জন্য প্রতিপক্ষের লোকেরা এটি করে থাকতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

"আমি আইএসআই'র কাউকে চিনি না, এমন কারো সাথে আমার পরিচয়ও নাই। আর এমন কথা কারো সাথে আমি বলিও নাই।"

মিঃ হোসেন বলেন, বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করে দেখুক, তবে "এতে আমার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে না"।

থানায় অভিযোগ

ফাঁস হওয়া কথিত এই ফোনালাপের সূত্র ধরে বুধবার রাতেই মিঃ হোসেনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে একটি আবেদন করা হয়েছে দাউদকান্দি থানায়।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানিয়েছেন, মিঃ হোসেনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগটি দায়ের করেছেন দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সুমন।

কিন্তু এখনো এ নিয়ে কোন আনুষ্ঠানিক মামলা দায়ের হয়নি। মামলা হবে কিনা, সে বিষয়ে বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মিঃ মিয়া।

বাংলাদেশে এর আগেও ফোনালাপ ফাঁসের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সময় বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতাদের ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার ঘটনা শোনা যায়।

এর আগে গত কয়েক বছরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোন, এরপর বিএনপি নেতা তারেক রহমান ও শমশের মবিন চৌধুরী এবং সাদেক হোসেন খোকা ও মাহমুদুর রহমান মান্নার ফোনালাপ মাসাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল।

এছাড়াও, বিকল্প ধারা নেতা মাহি বি চৌধুরী, নাগরিক ঐক্য নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী - এরকম বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের টেলিফোন কথোপকথন ফাঁস হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছিল। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ