আজকের শিরোনাম :

সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকা উচিত : গয়েশ্বর

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২০, ২১:০২

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, অন্যথায় একে একে আপনাদের সবাইকেই এই জুলুম-নির্যাতনের শিকার হতে হবে। কেউ আপনাদের পাশে দাঁড়াবে না। আজ হয়তো কেউ কেউ ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আছেন। কিন্তু এমন একদিন আসবে যখন আপনাদেরও অন্যদিকে যেতে হবে। অতএব এসব বাদ দিয়ে সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ান।

আজ সোমবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কারাবন্দি সাংবাদিকদের মুক্তি ও সাগর-রুনিসহ সব সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতনের বিচার দাবিতে প্রতীকী অনশনে এ কথা বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) আয়োজিত এই প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।  পরে তিনি বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ ও মহাসচিব নূরুল আমিন রোকনকে পানি পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সাংবাদিকদের তো কোনো রাজনৈতিক দল থাকে না। তাঁরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য লড়াই করেন না। সাংবাদিকরা কারো ক্ষমতায় থেকে নামানোর লড়াইও করেন না। তাদের পেশাগত দায়িত্ব সাদাকে সাদা বলা, কালোকে কালো বলা। তাঁরা যা দেখেন, যা শোনেন সেটাই তাঁরা লেখেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড নিয়ে তো অনেক কিছু হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা দেখলাম সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবাদে একজন হয়তো পুরস্কৃত হয়েছেন। এই পুরস্কারের মধ্যে যদি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড নীরব হয়ে যায়, তাহলে তো হত্যাকাণ্ড চলবেই। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকরা সরকারের রোষানলে পড়তে চান না বলেই সাগর-রুনির হত্যাকারীরা শনাক্ত হয়েও শনাক্ত হচ্ছে না। জনগণের সামনে প্রকাশ হচ্ছে না। একজন সাংবাদিকের ওপরে আঘাত হানলে যদি সব সাংবাদিক ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে সরকার আঘাত হানতে ভয় পায়।

প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করার নিন্দা জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, অন্য সম্পাদকদের এই হত্যা মামলার বিরুদ্ধে অবস্থান না নেওয়াটা আরো নিন্দনীয় হয়েছে। সাংবাদিকদের কোনো ত্রুটি হলে প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ দেওয়া যেতে পারে। থানা পুলিশ করাটা বেআইনি। আসলে সাংবাদিকরা দ্বিধা-বিভক্ত হওয়ার কারণেই আজ তাদের ওপর এই নির্যাতনের মাত্রাটা বেড়ে গেছে।

সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতি, লুটপাট আর গণহারে ধর্ষণের ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, এই সরকার স্বাধীনতার চেতনা, দুর্নীতির চেতনা আর যৌন চেতনাকে এক করে ফেলেছে। এদের হাতে আর কিছুই নিরাপদ নয়। সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের প্রতিহত করতে হবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, জাতীয় প্রেসক্লাব ও বিএফইউজের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ কারাবন্দি সাংবাদিকদের মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, সাংবাদিকদের এই দাবির সঙ্গে জাতীয় মুক্তির দাবিকে একীভূত করতে হবে। জাতীয় মুক্তির আন্দোলনে তিনি পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে এম আবদুল্লাহ বলেন, গত এক যুগে সারা দেশে ৪১ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জে খুন হন ইলিয়াস হোসেন। একটি হত্যাকাণ্ডেরও বিচার হয়নি। তাই আর বসে থাকা যাবে না। অবিলম্বে আবুল আসাদ, রুহুল আমিন গাজী, কাজলসহ সব কারাবন্দি সাংবাদিককে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় বিএফইউজে সারা দেশে ধারাবাহিকভাবে রাজপথে আরো কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব শফিউল আলম দোলন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নেতা এইচ এম আলামিনের পরিচালনায় অনশন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, বিএফইউজের নবনির্বাচিত মহাসচিব নূরুল আমিন রোকন ও বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ। সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির সহপ্রচার সম্পাদক ও বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেইন, সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট আব্দুল আউয়াল ঠাকুর, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ডিইউজে সহসভাপতি বাছির জামাল, বিএফইউজের সাবেক প্রচার সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, নবনির্বাচিত কমিটির প্রচার সম্পাদক মাহমুদ হাসান, মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য এ কে এম মহসীন ও মো. জাকির হোসেন, ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, জনকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান মাসুদা সুলতানা, দপ্তর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবুল কালাম, নির্বাহী সদস্য মো. আব্দুল হালিম, রফিক লিটন ও জেসমিন জুঁই, ডিআরইউর সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ